বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা

Table Of Contents
  1. বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা
  2. বজ্রপাত হওয়ার লক্ষণ
  3. বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায়
  4. বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু কেন হয়?
  5. বজ্রপাতে মৃত মানুষের হাড় কি চুম্বক হয়?
  6. বজ্রপাতে মৃত মানুষের লাশ চুরি হয় কেন?

বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা

অনেক সময় বজ্রপাতে আহত ব্যক্তিকে কেউ সহজে ধরেণ না বা ধরতে ভয়পান এই ভেবে যে যদি সেও সক খায়! আসলে বজ্রপাত হওয়ার পর ঐ ব্যাক্তির দেহে আর কোন বিদ্যুৎ অবশিষ্ট থাকে না। যদি সঠিক সময়ে সঠিকভাবে প্রথমিক চিকিতসা দেয়া যায় তবে বেঁচে যেতে পারে অনেক মানুষের প্রান।

তাই আসুন আজ জানাযাক বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে। ঈশ্বর না করুন! হয়তো আপনার আপনজনের প্রাণ রক্ষা পেতে পারে বজ্রপাতের হাত থেকে।

আপনি আরো পড়তে পারেন…. বজ্রপাত কিভাবে হয়?

প্রথমে জানি কিভাবে বুঝবেন এখন বজ্রপাত হবে।

বজ্রপাত হওয়ার লক্ষণ

বজ্রপাত হওয়ার আগের মুহূর্তে কয়েকটি লক্ষণে তা বোঝা যেতে পারে। যেমন-

  1. বিদ্যুতের প্রভাবে আপনার চুল খাড়া হয়ে যাবে।
  2. ত্বক শিরশির করবে বা বিদ্যুৎ অনুভূত হবে।
  3. এ সময় আশপাশের ধাতব পদার্থ কাঁপতে পারে।
  4. অনেকেই এ পরিস্থিতিতে ‘ক্রি ক্রি’ শব্দ পাওয়ার কথা জানান।
  5. সত্যি বলতে এতকিছু পর্যবেক্ষণ করার সময় খুব একটা পাওয়া না তাই ঝড় বৃষ্টির সময় পূর্ব সতর্কতা বেশি জরুরি।

বজ্রপাতে মানুষের কি ক্ষতি হয়?

  1. বজ্রপাতে শরীরে বৈদ্যুতিক শক লাগে এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় হার্ট এবং ব্রেইন। হার্ট কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে আবার চালু হতে পারে অথবা চিরতরে বন্ধ হতে পারে। ব্রেইনে স্ট্রোক হয়ে কোমায় চলে যেতে পারে।মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
  2. বজ্রপাতে মানুষ অজ্ঞান হয়ে যায়।কারোকারো শরীর অবশ হয়ে যায়। বিভিন্ন অঙ্গ প্যারালাইজড হয়।
  3. কানের পর্দা ফেটে বধির হয়ে যায়। চোখের দৃষ্টি শক্তি চলে যেতে পারে।
  4. হাড় ভেঙে যেতে পারে। মাথার তালু ভেঙে যেতে পারে। মাংসপেশি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
  5. এছাড়াও বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে তাদের কিডনি অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।
  6. যারা মারা যান, তার চেয়ে কয়েকগুণ জটিলতায় ভোগেনে বেঁচে যাওয়ারা।

বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা

বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা
বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা

বজ্রপাতে আহত ব্যক্তিকে ধরার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই। কারণ আহত কিংবা মৃত ব্যক্তির শরীরে বিদ্যুৎ থাকে না। বজ্রপাতে আহত ব্যক্তিকে নিচের প্রাথমিক চিকিতসা দিলে অনেকে বেঁচে যেতে পারে।

বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতি ধাপে ধাপে সম্পন্ন করুন

সচেতনতা পরীক্ষা করুন

প্রথমে লক্ষ্য করুন ব্যক্তিটি সচেতন আছে কিনা? যদি খুব আহত হয় বা সচেতন না থাকে তাহলে খোলামেলা বাতাস যুক্ত স্থানে নিয়ে আসুন তারপর বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করুন।

সঠিকভাবে শুয়ে দিন

অচেতন বা খুবই দুর্বল অথবা সামান্য জ্ঞান আছে এমন ব্যক্তিকে সমতল স্থানে মাথা একটু নিচু করে শুয়ে দিন। পা সমান করে উঁচু করে রাখুন। অর্থাৎ বুকের থেকে মাথা নিচু এবং পা উঁচু থাকবে। এরকম করে শোয়ালে ব্যক্তিটির শ্বাসনালী খুলে যাবে এবং শ্বাস নিতে কষ্ট কম হবে।বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা গুলোর মধ্যে এটি বেশ গুরুত্ববহ।

সিপিআর প্রসেস-3

জীবিত না মৃত পরীক্ষা করুন

এবার খুব ভালো করে ব্যক্তিটিকে লক্ষ্য করুন তার দেহে জীবিত থাকার লক্ষণ গুলো আছে কিনা।যেমন ধরুন বুক ঠিকমতো উঠানামা করছে কিনা? হাতের পালস দেখুন রক্ত চাপ ঠিক আছে কিনা?বুকে কান লাগিয়ে দেখুন হৃদপিণ্ড ঠিকমতো শব্দ করছে কিনা?


শ্বাস-প্রশ্বাস এবং হৃদপিন্ডের শব্দ খুবই ক্ষীণ হলে প্রথমে ডাক্তার কে কল করুন অথবা ইমারজেন্সি কল করুন।

এই অবস্থায় যতদ্রুত সম্ভব রোগীকে সিপিআর(cardiopulmonary resuscitation)দিতে হবে। বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে সিপিআর অনেকের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে পারে।
কিভাবে সিপিার দেবেন লিংকে ক্লিক করে দেখুন।

সিপিআর দেবার পদ্ধতি লিংক

মুখে খাবার দিবেন না

বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার সময় লক্ষ রাখবেন রোগী যদি কোন কিছু খেতে অক্ষম হয় বা গিলতে না পারে তাহলে দয়া করে তার মুখে কোন খাবার দিবেন না। কারণ এ সময় খাবার দিলে খাবার পাকস্থলীতে না গিয়ে ফুসফুসে ঢুকে পড়বে ফলে রোগী দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে।

তরল খাবার দিন

বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার সময় আরও দেখুন রোগী যদি খেতে পারে তাহলে গরম দুধ, চা, কফি পান করতে দিন।কোনভাবেই শক্ত খাবার খেতে দেবেন না।

রোগীর খুব তৃষ্ণা পেলে একটু পর পর পানি খেতে দিন। শরীরে কখনও পানি দেবেন না।

খুব দুর্বল বোধ করলে দুই থেকে চার চামচ মধু গরম পানিতে মিশিয়ে খেতে দিন।

কমপ্লিট রেস্টে থাকুন, ও ডাক্তার দেখান

ব্যক্তিটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসলে তাকে কমপ্লিট রেস্টে রাখতে হবে। কোনভাবেই ছোটাছুটি বা ভারী কাজ করতে দেওয়া যাবে না।

বজ্রপাতে আহত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর রোগী সুস্থ বোধ করলেও তাকে অবশ্যই হাসপাতালে নিয়ে যান।

বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায়

বজ্রপাতে মৃত মানুষের হাড় কি চুম্বক হয়?

বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায়
বজ্রপাত হতে বাঁচতে নিচের উপায়গুলো অনুসরণ করুন। অন্যকে জানিয়ে দিন নিজে বাঁচুন অন্যকে বাঁচান।

Total Time: 10 minutes

নিরাপদ স্থানে যান

বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায় নিরাপদ স্থানে যান

পাকা ভবনের নিচে আশ্রয় নিন খোলা বা উঁচু স্থানে থাকা যাবে না।উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুৎ লাইন থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায় হিসেবে এটি সবচেয়ে নিরাপদ।

জানালা থেকে দূরে থাকুন

বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায় জানালা থেকে দূরে থাকুন

জানালা থেকে দূরে থাকুন বজ্রপাতের সময় জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভেতর থাকুন।

টেলিফোন ধরবেন না

বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায়

ধাতব বস্তু স্পর্শ করবেন না। ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্পর্শ করবেন না। ডিশ লাইনের তার, ওয়াইফাই তার স্পর্শ করবেন না। পারলে ঝড়বৃষ্টি শুরুর আগেই এগুলো খুলে রাখুন।

ইলেকট্রিক যন্ত্র ধরবেন না

বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায়

বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরবেন না। এগুলোর প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করুন। ভুলেও কোন সুইচ টিপবেন না।বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায় হিসেবে এটি অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে। এতে জীবনের পাশাপাশি মালামাল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে।

গাড়ির কাচে হাত দিবেন না

আকাশে বিদ্যুৎ চমকালে কি করবেন

গাড়ির ভেতর থাকলে গাড়িটি নিয়ে কোনো কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন। গাড়ির ভেতরের ধাতব বস্তু স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। গাড়ির কাচেও হাত দেবেন না।

নিচু হয়ে বসে পরুন

বজ্রপাতের সময় করনীয়

খোলা স্থান, ধানক্ষেত বা বড় মাঠে থাকলে তাড়াতাড়ি নিচু হয়ে যান।মাটিয়ে শুয়ে পড়বেন না। মাটিতে শুয়ে পড়লে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায় না থাকলে অন্তত এই কাজটি করতে অবহেলা করবেন না।

পানি থেকে দূরে থাকুন

ঠাডা পরলে কি করবেন

পানিতে নামলে বজ্রপাতের সময় দ্রুত পানি থেকে উঠে আসুন। কোনভাবেই পানি স্পর্শ করবেন না।

পরস্পরের থেকে দূরে থাকুন

বজ্রপাতের সময় যা করা উচিৎ নয়

কয়েকজন মিলে খোলা কোনো স্থানে থাকাকালীন যদি বজ্রপাত শুরু হয় তাহলে প্রত্যেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে সরে যান। বাড়িতে সবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে যান। এটি বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায় তা অনেকে জানেনা।

গামবুট পরুন

বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায়

গামবুট পরলে স্বল্প মাত্রার বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।গামবুট শরীরের ভেতর দিয়ে মাটিতে বিদ্যুৎের চলাচল রোধ করে।

বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র লাগান

বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র

বাসার ছাদে বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র লাগাতে হবে। এতে ব্জ্রপাতের ঝুঁকি হ্রাস পাবে।

Estimated Cost: 1 USD

Supply:

  • মেডিক্যাল বাক্স

Tools:

  • মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট

Materials: ভলান্টিয়ার

বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু কেন হয়?

বজ্রপাতের তাপ ৩০ থেকে ৬০ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, আকাশে যে মেঘ তৈরি হয়, তার ২৫ থেকে ৭৫ হাজার ফুটের মধ্যে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে বেশি।
বজ্রপাতের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৬০ হাজার মিটার বেগে নিচে নেমে যায়। এই বিপুল পরিমাণ তাপসহ বজ্র মানুষের দেহের ওপর পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার মৃত্যু হয়।
বিশাল পরিমাণ বিদ্যুৎ মানুষের শরীরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে হৃদপিন্ডের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মানুষ মারা যায়। অনেক মানুষ তিব্র তাপে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়।

বজ্রপাতে মৃত মানুষের হাড় কি চুম্বক হয়?

বজ্রপাতে মৃত মানুষের হাড় কি চুম্বক হয়?

বজ্রপাতে মৃত মানুষ কারেন্ট শক খাওয়া মানুষের মতই মারা যায় তাই তার শরীরের হাড় চুম্বকে পরিণত হওয়ার ঘটনা গুজব ছাড়া কিছুই নয়। এই গুজবে কান দিবেন না।

বজ্রপাতে মৃত মানুষের লাশ চুরি হয় কেন?

বজ্রপাতে মৃত মানুষের লাশ চুরি হয় কেন?

বজ্রপাতে মৃত মানুষের লাশ চুম্বকে পরিণত হয় এই চুম্বক মহামূল্যবান সাত রাজার ধনের সমান এই রকম গুজবের কারণে অনেকে চুরি করে। আবার অনেক তান্ত্রিক তাদের সাধনায় সিদ্ধি লাভের কারণে এই লাশ উপকারী হবে ভেবে চুরি করে।

Lightning strike first aid treatment in bangla

What is the first aid for lightning? Lightning Strike Treatment bangla. bojropat hole ki korbo? bojropate ahoto rogir prathomik chikitsa, bojjropat theke bachar upay.

বজ্রপাত হতে বাঁচার উপায় video

Please click on Just one Add to Help Us

মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।

এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।