ধূমপানের অপকারিতা! ধূমপানের ক্ষতিকর দিক!

ধূমপানের অপকারিতা! ধূমপানের ক্ষতিকর দিক!

ধূমপান সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি মহাবিপদ। তাই আজ গোটা বিশ্ব জুড়ে ধূমপানের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ ধূমপানের শিকার হয়ে দিনের পর দিন সুন্দর স্বাস্থ্যকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা পুড়িয়ে ছাই করে ফেলছে। লক্ষ লক্ষ লোক ধূমপান জনিত ক্যান্সার সহ অনান্য রোগে মারা যাচ্ছে। কেউ কেউ বিভিন্ন ঘাতক রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে অসহায় অবস্থায় অতি কষ্টে মানব সমাজে বেঁচে আছে।

জীবনী শক্তি, মস্তিস্ক, ফুসফুস ও হৃদপিণ্ডের ক্ষতি হতে শুরু করে ধূমপান বিশ্ব মানবের অসংখ্য ও অগনিত ক্ষতি করে থাকে। শারীরিক, মানসিক, নৈতিক, আর্থিক এবং ইহলৌকিক ও পরলৌকিক তথা ধূমপান দ্বারা মানুষের সব রকম ক্ষতি হচ্ছে। ধূমপায়ী ক্ষতি করে নিজের, পরিবারবর্গের, সাথী-দর্শকের, সহযাত্রী সহপাঠীর ও সঙ্গে অবস্থানকারী সকল মানুষের। পার্শ্বস্থ নিষ্পাপ শিশুর, গর্ভস্থ শিশুর ও ভ্রুনের, বীর্যের ভেতরের শুক্রকীটের, ভবিষ্যৎ বংশধরের এবং দেশ ও জাতির। তাই সমগ্র পৃথিবীর সর্বস্তরের জ্ঞাণীগন মানুষকে ধূমপানের করাল গ্রাস হতে বাচাবার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। (ধুমপানের অপকারিতা, ধুমপানের অপকারিতা, ধুমপানের অপকারিতা)

আপনি আরো পড়তে পারেন…… ধূমপানের উপকারিতা কী? …… ধূমপান ছাড়ার উপায় ১০০% কার্যকর! সিগারেট ছাড়তে বাধ্য হবেন! ……. ধূমপান ছাড়ার খাবার ১০০% কার্যকর ……. ধূমপান ছাড়ার ঔষধ!

ধূমপানের ক্ষতিকর দিক

ধূমপানের অর্থনৈতিক, সামাজিক,নৈতিক,স্বাস্থ্যগত ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে।

ধূমপানের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি

ধুমপানের অপকারিতা! ধুমপানের ক্ষতিকর দিক!সিগারেট খাওয়ার ক্ষতি।

ধূমপানের প্রতি টানে মানুষের দেহে যতটুকু ধোঁয়া প্রবেশ করে তাতে রয়েছে দেহের জন্য কতোগুলো বিষাক্ত পদার্থ। এগুলোর প্রভাবে দেহের প্রতিটি তন্ত্রের কার্যক্ষমতা ক্রমশঃ বিপন্ন হয়ে পড়তে থাকে এবং এর ফলে জন্ম নেয় হাজারো রোগ। মানব দেহে এমন কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নেই যেখানে ধূমপান কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। ধূমপানের প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে

ধূমপানের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি,সিগারেট খেলে শরীরের কি ক্ষতি হয়?
  1. অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীরা তেমন সু-স্বাস্থের অধিকারী হয় না এবং আয়ু বেশী পায় না।
  2. ধূমপান পঙ্গু ও অসমর্থ করে দেয় এমন কিছু রোগের জন্য দায়ী।
  3. ধূমপানের ফলে মুখের ক্যান্সার সহ সব ধরনের ক্যান্সার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
  4. ধূমপানের অভ্যাস থেকে ব্রংকাইটিস, এম কাই,সেমা, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ, স্ট্রোক, মস্তিস্কের রক্তনালী ছিড়ে যওয়া, বার্জাস ডিজিজ, গ্যাষ্ট্রিক, আলসার ইত্যাদি রোগ হয়ে থাকে।
  5. হজমশক্তি বিনাশ, কিডনী, মুত্রাশয়, চোখ ও প্রজননতন্ত্রের গুরুতর গোলযোগ ও যৌন দুর্বলতার মূলে রয়েছে তামাকের বিষাক্ত ছোবল।
  6. গর্ভাবস্থায় ধূমপান স্বল্প ওজনের শিশু জন্মদান ও সদ্যজাত শিশুর মৃত্যুহার বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
  7. ধান ও কৃষিকাজের মত পেশায় এবং ধোঁয়া নির্গত হয় এমন সব কারখানায় যারা কাজে নিয়োজিত, ধূমপান তাদের অকপেশনাল পালমোনারী দ্রুত ঘটাতে বা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

ধূমপানের পরিবেশগত ক্ষতি

ধূমপানের পরিবেশগত ক্ষতি
  1. বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়া অফিস আদালত, দোকান-পাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, রাস্তাঘাট এবং বাড়ীঘরের পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষণ করে। এতে সার্বিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং রোগ বিস্তার ঘটে ব্যাপক হারে।
  2. ধূমপানে যেমন পরিবেশ নষ্ট হয় ঘরে, তেমনি গর্ভের পরিবেশও নষ্ট হয়ে ক্ষতি করে গর্ভস্থ শিশুর।

ধূমপানের নৈতিক ও সামাজিক ক্ষতি

ধূমপানের পরিবেশগত ক্ষতি

ধূমপানের সাথে সামাজিক অবক্ষয়ের সংযোগ আছে। নেশা ও নৈতিকতার দ্বন্দ আছে। এক সাথে দুটো চলতে পারে না। নেশার দাসত্ব এক অর্থে মানবিক পরাজয়।

  1. বিড়ি সিগারেট একটি নেশা জনিত বাড়তি খরচ। এ খরচ যোগাতে ব্যক্তির পদস্খলন আরম্ভ হয়।
  2. প্রশাসনের বিভিন্ন পদে যারা ধূমপান করেন তাদেরকে সিগারেটের মাধ্যমে প্রভাবিত করা খুব সহজ। আপ্যায়নের নামে সিগারেট অনেক সময় উৎকোচের ঘুষের) পর্যায়ে পড়ে।
  3. শিক্ষক ও ডাক্তারদের জন্য ধূমপান একটি মারাত্মক অবক্ষয়। বয়স্ক ও গুরুজনরা ধূমপান করলে তাদের পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদা নষ্ট হয়। তাদের প্রতি আর শ্রদ্ধাবোধ থাকে না, এতে এক পর্যায়ে পারিবারিক ও সামাজিক শৃঙ্খলা ধ্বসে পড়ে।
  4. হুক্কা, শিশা যেমন মুখে মুখে ঘুরে, একই ভাবে বিড়ি সিগারেটও মূখে মূখে জ্বলে। ফলে একজনের মূখের জীবানু অন্যজনের মধ্যে ছড়িয়ে সামাজিকভাবে রোগ বিস্তার ঘটায়।
  5. ধূমপানের ফলে অনেকের মূখেই বিশ্রী ও উৎকট দূর্গন্ধ হয়। যা কিনা সভা সমিতি, মসজিদ-মাদ্রাসা, অফিস আদালত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সর্বত্রই ঘৃণা ও বিরক্তির উদ্রেক করে। অনেক সময় দেখা যায় শিশু ও নারীরা এ দূর্গন্ধ সহ্য করতে না পেরে ধূমপায়ীকে এড়িয়ে চলে এবং পারিবারিক অশান্তি সৃষ্টি হয়। ধুমপায়ীর গাড়ী বা ট্যাক্সিক্যাবে উঠে বিড়ি-সিগারেটের গন্ধে অনেকের মাথাব্যথাও শুরু হয়। অনেকে বমি করেও দিয়েছে এমন হাজারো নজির আছে। ধুমপানকারীর টেক্সীতে যাত্রীরা উঠতে চায় না, আর সে ইচ্ছা করেই সবার ঘৃণার পাত্র হচ্ছে।
  6. অনেক পরিবারের কর্তার বিড়ি সিগারেট পান করার বদঅভ্যাস রয়েছে। এতে তার বিড়ি-সিগারেটের দুর্গন্ধে তার শিশু সন্তান ও নিজ স্ত্রীও তার চাইতেও বেশী ক্ষতিগ্রস্ত ও রোগগ্রস্ত হয়।
  7. বিড়ি সিগারেট নেশার মতো, যারা এটা খায়, তাদের ভাত তরকারী না খেলেও চলে, কিন্তু বিড়ি-সিগারেট না খেলে তাদের চলে না। এটা তাদের নেশার মতো হয়ে গেছে। তাদের হাতে টাকা-পয়সা না থাকলেও তারা হাওলাত করে এ নেশা মেটাবেই মেটাবে। অনেক বিড়ি সিগারেট পানকারী টাকা হাওলাত নিয়ে আর দেয় না, এজন্য সমাজে মানুষে মানুষে মনোমালিন্য ও দূরত্ব বাড়ে। দেখুন এবার ধূমপান কতো ক্ষতিকারক!!! আরব দেশে আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, কোনো কোনো টেক্সী যাত্রীর কাছে ভাড়া না থাকলে, সে তার কাছে পাওনা ভাড়ার পরিবর্তে ড্রাইভারকে বিড়ি – সিগারেট দিয়ে দেয়। এটা খুবই খারাপ কাজ।
  8. একজন ধুমপানকারী ব্যক্তি অশালীন, বদঅভ্যাসওয়ালা, হীন ব্যক্তিও বটে। সে মানুষকে সম্মান না দেখিয়ে বরং মানুষের অধিকারকে খর্ব করে, মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করে ও অবমূল্যায়ন করে মানুষের সামনে হঠাৎ বিড়ি সিগারেট জ্বালিয়ে থাকে, তার মধ্যে সব সময় একটা ‘ডেম কেয়ার’ ভাব থাকে। এরা সত্যিকারভাবেই অহংকারী ও মানুষকে কষ্ট দিয়ে থাকে। অহংকার করা আর মানুষকে কষ্ট দেওয়া সকল ধর্মেই নিষিদ্ধ। আর যারা অহংকারী এবং মানুষকে কষ্ট দেয় তাদেরকে কেউই ভালোবাসে না।

বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে শুধু তামাকজনিত স্বাস্থ্য ক্ষতি থেকেই নয়, তামাক ব্যবহারজনিত সামাজিক, পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকেও রক্ষা করতে তামাকের ওপর কর বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা। (দৈনিক আমারদেশ ১৯/৫/2018)
তারা আরো বলেন, প্রতিবছর নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেলেও সে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে না তামাকজাত পণ্যের দাম।

ধূমপানের আর্থিক ক্ষতি

ধূমপানের আর্থিক ক্ষতি
  1. ধূমপানের ফলে কষ্টার্জিত অর্থের বিরাট অপচয় হয়। আল্লাহর দেওয়া আমানত আগুনে পুড়িয়ে শেষ করা হয়।
  2. প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা এ ক্ষতিকর খাতে ব্যয় হচ্ছে। ধূমপানের ফলে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসায় কত মানুষ সর্বহারা হচ্ছে।
  3. ধূমপান একটি অগ্নিকাণ্ডের মতো, যে অগ্নিকাণ্ডে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও আল্লাহর দেওয়া মানুষের অসংখ্য হার্ট (heart) ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

আমাদের বাংলাদেশে প্রতি বছর বিড়ি-সিগারেটের পেছনে খরচ প্রায় ২৯১২ কোটি টাকা। বার্ষিক এ খরচের টাকা দিয়ে ৪৮৫ কোটি ডিম বা ২৯ কোটি এক কেজি ওজনের মুরগি বা ২৯ লাখ গরু বা ১৪ লাখ টন চাল কেনা সম্ভব বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। (সূত্র: দৈনিক আমারদেশ, ১৯/৫/২০১৪)

তথ্যসূত্র : “ধুমপানের বিপদ ও তার প্রতিকার” বই। লেখক: মাফিয়া হক মুনা সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

আসল লেখার লিংক: islamhous.com

ট্যাগ: ধূমপানের অপকারিতা,ধূমপানের অপকারিতা, ধূমপানের অপকারিতা,ধূমপানের অপকারিতা, ধূমপানের অপকারিতা, ধূমপানের অপকারিতা, ধূমপানের অপকারিতা,ধূমপানের অপকারিতা,ধূমপানের অপকারিতা,ধূমপানের অপকারিতা,

Please Click on Just one Add to help us

মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।

এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।