চুলকাতে মজা লাগে কেন?

চুলকাতে মজা লাগে কেন?

চুলকাতে মজা লাগে কেন?

টিকেট কাটতে লাইনে দাড়ালে দেখবেন কেতাদুরস্ত ভদ্রলোক মানসম্মান চিন্তা না করে প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে খসখস শব্দ করে চুলকাচ্ছে। দুনিয়াবি কর্মযজ্ঞে তার কোন খেয়াল নেই।মনেহয় চুলকিয়ে স্বর্গীয় সুখ পাচ্ছেন।

চুলকাতে মজা লাগে কেন
চুলকাতে মজা লাগে কেন

আবার অনেকে লুঙ্গির পেছনে হাত দিয়ে মুখ ভেংচিয়ে চুলকানির কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যান।কি আর করা বলুন একবার চুলকানি শুরু হলে কেউই না চুলকানো পর্যন্ত শান্তি পাননা। রাস্তায় চুলকানির মলম বিক্রেতা হকারের চটকদার বিজ্ঞাপন শুনলে মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রোগ এই চুলকানি।

চুলকাতে মজা লাগে
চুলকাতে মজা লাগে

যাইহোক এবার আসল কথায় আসি, দেহের কোন অঙ্গে চুলকানি শুরু হলে যতই চুলকাবেন ততই চুলকানি বাড়তে থাকে সাথেসাথে আলাদা একটি মজার অনুভূতি সৃষ্টি হয়। একসময় এই মজার অনুভূতি বাড়তে বাড়তে চরম পর্যায়ে পৌছায় তখন চুলকানোর স্থানটি ছিলে গিয়ে রক্ত বের হলেও আমরা গ্রাহ্য করিনা।

এতে আমাদের কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না কারণ চুলকানির এই সিস্টেম স্পেশাল স্নায়ুর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। অনেক বকবক তো হলো এবার তাহলে জানাযাক চুলকাতে মজা লাগে কেন? এর বৈজ্ঞানিক কারণ।

আপনি আরো পড়তে পারেনকুকুর মিলনের সময় আটকে যায় কেন ? চুলকানি সম্পর্কে 15 টি আশ্চর্যজনক তথ্য

শরীর কেন চুলকায়?

চুলকানি কেন হয়?

আমাদের দেহের বাইরে একটি প্রতিরক্ষা আবরণী আছে যাকে আমরা ত্বক নামে চিনি।এই ত্বকের প্রধান দুইটি স্তর হলো ডার্মিস বা অন্তঃস্তর ও এপিডার্মিস বা বহিঃস্তর। ডার্মিস স্তরে প্রুরিসেপ্টর নামক স্নায়ু গ্রন্থি থাকে এই গ্রন্থির একটি স্পেশাল স্নায়ু হলো সি-ফাইবার।(চুলকাতে মজা লাগে কেন)

এই সি-ফাইবার স্নায়ুর মাধ্যমে চুলকানির সংবেদন মস্তিষ্কে পরিবাহিত হয়। ডার্মিস স্তরে অবস্থিত কোষে সংবেদনশীল মাস্ট কোষ থাকে। মাস্ট কোষ দেহে প্রবেশকারী জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।ত্বকের এপিডার্মিস বা বা বহিঃস্তর কোন বহিরাগত রাসায়নিক পদার্থ বা জীবানুর সংস্পর্শে আসলে।(চুলকাতে মজা লাগে কেন)

ঐবহিরাগত পদার্থ যদি এপিডার্মিস ভেদ করে ডার্মিস স্তরে প্রবেশ করে তাহলে বহিরাগত পদার্থ বা জীবাণুকে মারার জন্য মাস্ট কোষ হিস্টামিন নিঃসরণ করে। হিস্টামিন ক্ষরিত হওয়ার পর বহিরাগত পদার্থকে আক্রমনকরে ফলে বহিরাগত পদার্থ ও হিস্টামিনের ক্রিয়া শুরু হয়।হিস্টামিনের ক্রিয়ার ফলে চুলকানি শুরু হয়।(চুলকাতে মজা লাগে কেন)

চুলকানি মেকানিজম
চুলকানি মেকানিজম

এই ক্রিয়ার সংকেত প্রুরিসেপ্টর স্নায়ু গ্রন্থিতে পৌছালে স্নায়ুগ্রন্থি উত্তেজিত হয় এবং সি-ফাইবার স্নায়ু তন্তুর মাধ্যমে প্রথমে সুষুম্নাকাণ্ডে পরে মস্তিষ্কে পাঠায়।মস্তিস্ক সংকেত বিশ্লেষণ করে চুলকানির অনুভূতি প্রকাশ করে।(চুলকাতে মজা লাগে কেন)

এবার মস্তিস্ক আক্রান্ত স্থান চুলকানোর জন্যে হাত ও পা কে সংকেত পাঠায় ফলে আমরা আক্রান্ত স্থান চুলকাতে ব্যাস্ত হয়ে যাই।

চুলকাইতে এতো আরাম লাগে কেন?

চুলকাতে মজা লাগে কেন?

ত্বকের ভেতর বহিরাগত পদার্থ প্রবেশ করলে মাস্ট কোষ হিস্টামিন ক্ষরণ করে। হিস্টামিন ও বহিরাগত পদার্থের মধ্যে সংঘটিত বিক্রিয়ার ফলে চুলকানি শুরু হয়। আমরা চুলকানি থামানোর জন্যে ত্বকে আঁচড় কাটতে থাকি।ত্বক আঁচড়ানোর ফলে ব্যাথা সৃষ্টি হয়। ব্যাথার সংকেত মস্তিষ্কে পৌছে গেলে মস্তিস্ক চুলকানির কথা সাময়িকভাবে ভুলে যায়।

কিন্তু সমস্যা হলো বারবার আঁচড় দেয়ার ফলে ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হয় এই ক্ষতের ব্যাথা সামলানো মস্তিষ্কের জন্যে কঠিন হয়ে যায়।এই সমস্যার সমাধান মস্তিস্ক খুব কৌশলে সমাধান করে। মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল কর্টেক্সে অবস্থান করে আনন্দের কেন্দ্র। এখান থেকে ক্ষরিত হয় সেরাটোনিন নামক পদার্থ। সেরাটোনিন দেহের ব্যাথা ভুলিয়ে রেখে আরাম দায়ক অনুভূতি সৃষ্টি করে।

এর ক্রিয়ার ফলে চুলকানোর স্থানে আঁচড় দোয়া ফলে যে ব্যাথা সৃষ্টি হয় তা প্রশমিত হয়। এই কারণে আমরা যত চুলকাই তত মজা লাগে।একসাথে তিনটি ক্রিয়ার ফলে চুলকানোর স্থানে আঁচড় কেটে আমরা মজা পাই।

চুলকানি মেকানিজম
চুলকানি মেকানিজম

অন্য প্রাণিরা কি শরীর চুলকায়?

হ্যাঁ, মানুষের মত অন্য প্রাণিরা শরীর চুলকায়।বেবুন,বানর,শিম্পাঞ্জি দলবেধে চুলকানির কর্মযজ্ঞ চালায়।

অন্য প্রাণিরা শরীর চুলকায়
অন্য প্রাণিরা শরীর চুলকায়

প্রশ্ন এবং উত্তর

চুলকানি কি?

হিস্টামিনের ক্রিয়ার ফলে চুলকানি শুরু হয়।এই ক্রিয়ার সংকেত প্রুরিসেপ্টর স্নায়ু গ্রন্থিতে পৌছালে স্নায়ুগ্রন্থি উত্তেজিত হয় এবং সি-ফাইবার স্নায়ু তন্তুর মাধ্যমে প্রথমে সুষুম্নাকাণ্ডে পরে মস্তিষ্কে পাঠায়।মস্তিস্ক সংকেত বিশ্লেষণ করে চুলকানির অনুভূতি প্রকাশ করে।

সেরাটোনিন কি?

মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল কর্টেক্সে অবস্থান করে আনন্দের কেন্দ্র। এখান থেকে ক্ষরিত হয় সেরাটোনিন নামক রাসায়নিক পদার্থ। সেরাটোনিন দেহের ব্যাথা ভুলিয়ে রেখে আরাম দায়ক অনুভূতি সৃষ্টি করে।

হিস্টামিন কি?

ত্বকের ডার্মিস স্তরে সংবেদনশীল মাস্ট কোষ থাকে,জীবাণুকে মারার জন্য মাস্ট কোষ হিস্টামিন নিঃসরণ করে। হিস্টামিন অ্যান্টি অ্যালার্জিক পদার্থ।হিস্টামিনের ক্রিয়ার ফলে চুলকানি শুরু হয়।

সি-ফাইবার কি?

ত্বকের ডার্মিস স্তরে প্রুরিসেপ্টর নামক স্নায়ু গ্রন্থি থাকে এই গ্রন্থির একটি স্পেশাল স্নায়ু হলো সি-ফাইবার।সি-ফাইবার স্নায়ুর মাধ্যমে চুলকানির সংবেদন মস্তিষ্কে পরিবাহিত হয়।সি-ফাইবার স্নায়ুর মাধ্যমে চুলকানির সংবেদন মস্তিষ্কে পরিবাহিত হয়।

প্রুরিসেপ্টর কি?

ত্বকের ডার্মিস স্তরে প্রুরিসেপ্টর নামক স্নায়ু গ্রন্থি থাকে,এই গ্রন্থি চুলকানির অনুভূতি প্রকাশ করে।

Chulkate moja lage keno?

chulkale aram lage keno? chulkani , histamin ki? seratonin ki? chulkani ki? chulkate ato aram, body chulkay keno?

Please Click On Just One Add To Help Us

মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।

এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।

All photo credit Goes to sutterstock.com