মহাশূন্যে নামাজের সময়,কিবলা কিভাবে নির্ণয় করবেন?
মহাকাশ স্টেশনে অবস্থানরত অবস্থায় কোনো মুসলিম সেখানে কিভাবে নামায পড়বে, যেখানে পৃথিবীর ২৪ ঘন্টা দিনের হিসাবে ১৬ বার সূর্যোদয় হয়।এ পর্যন্ত অনেক মুসলিম নভোচারী মহাকাশ ভ্রমণ করেছেন। তবে এই ঘটনা প্রথম ২০০৭ এর। ২০০৭ সালর অক্টোবরে মালয়েশিয়া থেকে প্রথম নভচারী হিসাবে মহাকাশ স্টেশনে (আই এস এস) পাঠানো হয় শেখ মুজাফফার শোকর কে।

যেহেতু তিনি মুসলিম সেহেতু তার যেকোনো পরিস্থিতিতেই নামাজ পড়া অত্যাবশ্যক। এই নিয়ে সেই দেশের সায়িন্টিস্ট ও আলেমরা একটি আলোচনার মাধ্যমে মহাশূন্যে নামাজের সময়,কিবলা নির্ণয়র কিছু নিয়ম নির্ধারণ করেন। (মহাশূন্যে নামাজের সময়,কিবলা নির্ণয়)
আপনি আরো পড়তে পারেন…. সুইসাইড প্লান্ট মানুষকে আত্মহত্যায় বাধ্য করে
মহাকাশে কিবলা কোন দিকে হবে?
আল্লাহ্র নির্দেশ, যেকোনো পরিস্থিতিতে সালাত আদায় করার সময় বুক কিবলার দিকে ফেরানো থাকতে হবে। তাই মহাকাশ থেকেও কিবলার দিকে ফেরা অত্যাবশ্যক। ক্রমানুক অগ্রাধিকার দিয়ে মালয়েশিয়া ফতোয়া কউন্সিল থেকে একটি লিস্ট তৈরি করা হয়, পরিস্থিতি অনুযায়ী সবথেকে আগে যেটা সহজলোভ্য হবে সেটা কিবলা ধরে নিতে হবে। কা’বা এর অভিক্ষেপ (Projection) স্বয়ং পৃথিবী যেকোনো দিক।(মহাশূন্যে নামাজের সময়,কিবলা নির্ণয়)

- ১. বিভিন্ন হাদিসের ব্যখ্যা থেকে পাওয়া যায় চলমান যানবাহন যেমন ট্রেন বা লঞ্চে থাকাকালীন যদি নামাজ পড়তে হয় তাহলে নামাজ শুরুর সময়ে কিবলার দিকে ফিরে নামাজ শুরু করতে হবে। এরপর যানবাহন অন্যদিকে ঘুরে গেলেও সমস্যা নেই। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে(আই এস এস) যখন কোনও নভচারী নামাজ পড়বে তখন কা’বা দেখা গেলে সে সেইদিক ফিরে নামাজ শুরু করবে, এরপর আই এস এস সরে গেলেও কোনও সমস্যা হবে না।

- ২. অভিক্ষেপ নির্ণয় করা হয় জ্যামিতিকভাবে। যেমন কোনও নির্দিষ্ট সময়ে আই এস এস ভুমি থেকে ৪০০ কি. মি. উপরে অবস্থান করছে। তাহলে একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে পৃথিবীর ভুমিকে ৪০০ কি. মি. উঁচু করে দেওয়া হবে। তাহলে ধরে নেওয়া যায় যে নভোচারিরা ভুমিতেই কোন একটি যায়গায় অবস্থান করছে। এইভাবে যত ডিগ্রিতে কা’বা পাওয়া যাবে সেটাই অভিক্ষেপ। যদি কা’বা না দেখা যায় তবে পয়েন্টকে কিবলা ধরে নামাজ শুরু করতে হবে।
- ৩. যদি দুটির কোনটিই সম্ভব না হয় তবে পৃথিবীর দিকে ফিরে নামাজ শুরু করতে হবে। কারন কা’বা পৃথিবীতেই অবস্থিত।
- ৪. মহাকাশে সবসময় স্থিতিশীল থাকা সম্ভব হয় না। এ কারনে বিশেষ ক্ষেত্রে যেকোনো দিক ফিরে নামাজ পড়া যেতে পারে। কারন আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে বলেছেন- “পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহ্রই, জেদিকেই তোমরা মুখ ফিরাও না কেন, সেদিকই আল্লাহ্র দিক। নিশ্চই আল্লাহ্ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।”

মহাকাশে নামাজের সময়
আই এস এস এর সময় পৃথিবীর মত চলে না। যেহেতু এখানে ১৬ বার সূর্যোদয় দেখা যায় তাই সূর্য থেকে নামাজের সময় নির্ধারণ করা অসম্ভব।

এক্ষেত্রে অভিক্ষেপ বা Projection প্রক্রিয়াটিই ব্যবহার করা হয়, যেটা উপরে ব্যখ্যা করেছি। কাজেই পৃথিবীর একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল পাওয়া যায় সময় বের করার জন্য। সেই অঞ্চলের হিসাবেই নামাজের সময় নির্ধারণ করা হয়।

অভিক্ষেপ থেকে কিবলা ও নামাজের সময়সুচি বের করার প্রোগ্রামটির ধারনা জিনি দিয়েছেন তার নাম ড. জয়নাল আবেদিন রশিদ।সবশেষে আর একটা কথা বলতে হয়। মহাকাশে পৃথিবীর মত চলাচল করা যায় না। দাঁড়ানো বা বসা যায় না। নভোচারিরা নিজেকে বেঁধে রেখে বিভিন্ন কাজ করে থাকে। তাই আমার মনে হয় সেখানে যদি কেউ নামাজ পড়ে তো আমরা সাধারন যেভাবে নামাজ পড়ে থাকি সেভাবে হয়ত পড়া সম্ভব হবে না।

তবে ইশারায় নামাজ পড়ার যে নিয়ম রয়েছে সেভাবেই নামাজ পড়া যাবে।
মহাকাশে যেহেতু পানির স্বল্পতা রয়েছে ও পানির ব্যবহারও সাধারন নয়, সেক্ষেত্রে বিশেষ ক্ষেত্রে ওযুর বদলে তাইমুম করা যেতে পারে। আশা করি ব্যপারটা পরিষ্কার হয়েছ।

লেখক
সোহান জামান
theme store a ceo
লেখাটি ভালো লাগলে আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুণ।জ্ঞান বিতরণে সাহায্য করুন। আপনি ভালো লিখতে পারলে এই ওয়েবসাইট এ লেখা পাঠান।লেখা মনোনীত হলে পুরস্কার পাবেন।
আপনার মাথায় উদ্ভট কোন প্রশ্ন ঘুরছে কিন্তু উত্তর পাচ্ছেন না। তাহলে দেরি না করে এই পোস্টের নিচে কমেন্ট বক্সে প্রশ্ন টি লিখুন।উত্তর পাবেন নিশ্চিত।
All photo credit Goes to sutterstock.com