ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকা| ক্যান্সার রোগীর পথ্য:

Table Of Contents
  1. ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকা| ক্যান্সার রোগীর পথ্য:
  2. ক্যান্সার রোগীর কি খাওয়া উচিত
  3. ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকা
  4. ক্যান্সার রোগীর পথ্য

ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকা| ক্যান্সার রোগীর পথ্য:

ক্যান্সার রোগ হলে দেহের ভালো কোষের জায়গা দখল করতে থাকে খারাপ কোষ ফলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কার্যক্ষমতা কমে যায়। এর মধ্যে পরিপাকতন্ত্র অন্যতম। পরিপাকতন্ত্রের ক্ষমতা কমে যাওয়ার ফলে সহজে সব খাবার হজম হয় না। হজমের গোলযোগ হলে দেহের শক্তি কমে যায় রোগী দুর্বল হয়ে পরে। এসময় সহজপাচ্য কিন্তু পুষ্টিতে ভরপুর এমন খাবার খাওয়া উচিত।

বিভিন্নজন বিভিন্ন মতামত দেন কেউ বলে এটা খাও কেউ বলে ওটা খাও। সব মতামত ঠেলে ফেলে নিজেই দেখে নিন কোন খাবার খাওয়া উচিত। আসুন জেনেনিই ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকা।

ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকা| ক্যান্সার রোগীর পথ্য:
ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকা

আপনি আরো পড়তে পারেন … কান্সারের ঝুঁকি কমায় এই ১৫ টি ফল# …… কেমোথেরাপির সময় নিষিদ্ধ খাবার …… কেমোথেরাপির সময় ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকা| …..

ক্যান্সার রোগীর কি খাওয়া উচিত

নরম ভাত,হিমোগ্লোবিনযুক্ত শাকসব্জি,টক দই বা ইয়োগার্ট,দুধ,বেশি সেদ্ধ ডিম,সাদা মাংস,মাছ,কাস্টার্ড ও পুডিং,আদা ও পিপারমিন্ট চা, রসুন, স্যুপ, ভিটামিন সি যুক্ত খাবার,ভিটামিন-এ যুক্ত খাবার,লাল ও কমলা রঙের সব্জি,

ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকা

ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকা তে প্রতিদিন এই খাবারগুলো রাখুন।

নরম ভাত

শক্ত ভাত না খেয়ে নরম ভাত খান। নরম ভাত তাড়াতাড়ি হজম হয়ে দ্রুত শক্তির যোগান দেয়। ডায়াবেটিস থাকলে দিনে ২ বারের বেশি ভাত না খাওয়াই ভালো। ভাতের সাথে সেদ্ধ সব্জির ঝোল খাওয়া ভালো।

হিমোগ্লোবিনযুক্ত শাকসব্জি

হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিকারী আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিকারী আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

রক্ত কণিকা বৃদ্ধির জন্য হিমোগ্লোবিন আছে এমন শাকসব্জি খেতে হবে।কচুশাক, লালশাক, ডাঁটাশাকে প্রচুর লৌহ বা আয়রন থাকে এগুলো হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। এসব খাবারের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে দিন কারণ ভিটামিন সি আয়রন শোষণে সাহায্য করে।

হিমোগ্লোবিন কমে গেলে বিট রুটের শরবত দেয়া যেতে পারে। তবে রক্ত ক্যান্সার আছে বা দেহে লৌহ বেড়ে গেলে সমস্যা হবে তাদের এসব খাবার না খাওয়া ভালো।

টক দই বা ইয়োগার্ট

টক দই ভালো প্রোটিনের উৎস। এতে উপকারি ব্যাকটেরিয়া থাকে তাই হজমে ভালো ভূমিকা রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে টক দই ভালো কাজ করে। যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কম তাদের টক দই না খাওয়া ভালো।

দুধ

দেহের প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের উৎস দুধ। এটি শক্তি যোগানোর পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। হালকা গরম দুধ পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে যায়। অপাস্তুরিত দুধ,কাঁচা,কম জ্বাল করা দুধ খাওয়া একদম নিষেধ। যাদের দুধে এলার্জি আছে বা হজম করতে পারেন না তারা এটি খাবেন না।

বেশি সেদ্ধ ডিম

বেশিক্ষণ ধরে সেদ্ধ করা ডিম খেতে হবে। উচ্চরক্তচাপ না থাকলে দিনে দুটি ডিম কুসুম সহ খেতে পারেন। উচ্চরক্তচাপ থাকলে কুসুম ছাড়াই ডিম খান। ডিম খেলে প্রোটিনের ঘাটতি দূর হবে।

সাদা মাংস

খরগোস ও মুরগির সাদা মাংস
খরগোস ও মুরগির সাদা মাংস

ক্যান্সার রোগীর প্রচুর প্রোটিনের প্রয়োজন হয় মুরগির সাদা মাংস এই প্রোটিনের উৎস হতে পারে। মুরগির মাংস সাদা এতে ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট কম থাকে তাই নিরাপদে খেতে পারেন। লাল মাংস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় তাই মুরগির সাদা মাংস বিকল্প হিসেবে খান। (ক্যান্সার রোগীর খাদ্য)

মাছ

মাছ
মাছ

মাছের দেহে ওমেগা-৩ চর্বি থাকে এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় হার্ট ভালো রাখে। ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ভালো কোষকে শক্তি যোগায়। তাই প্রতিদিন প্রচুর মাছ খান। মাছ সহজপাচ্য কিন্তু প্রটিনের ভাণ্ডার।

কাস্টার্ড ও পুডিং

দ্রুত হজম করা যায় কাস্টার্ড ও পুডিং এবং দ্রুত শক্তি পাওয়া যায়। বড় খাবারের মাঝে ২-১ বার এটি খেতে পারেন।

আদা ও পিপারমিন্ট চা

আদা ও পিপারমিন্ট চা
আদা ও পিপারমিন্ট চা

রিফ্রেশ থাকার জন্য এবং ক্লান্তিভাব দূর করার জন্য দিনে ১-২ বার আদা ও পিপারমিন্ট চা খেতে পারেন। বমিভাব কমাতে লেবু ও তুলসি চা খেতে পারেন।

রসুন

প্রতিদিন একটি করে রসুন খেতে পারেন। রসুনে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এটি শরীরের বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। রসুন ভালো কোষকে ক্যান্সার কোষের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে প্রতিরক্ষা আবরণ সৃষ্টি করে।

স্যুপ

সহজে হজম করে দ্রুত শক্তি পেতে স্যুপ খাওয়া যায়।

আঁশযুক্ত খাবার

শুকনো ফল, মটরশুঁটি, সীমের বীচি, শস্যজাতীয় খাদ্যে প্রচুর আঁশ বা ডায়াটরি ফাইবার থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে আঁশযুক্ত খাবার।এই খাবারগুলো কোলোরেক্টাল ক্যান্সার প্রতিহত করে।

ভিটামিন সি যুক্ত খাবার

দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার।দেহথেকে ক্ষতিকর ঠ্রি রেডিকেল রের করে দেয় ভিটামিন সি।পাকস্থলী ও খাদ্যনালীর ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার। টক ফলে প্রচুর ভিটামিন সি আছে।(ক্যান্সার রোগীর খাদ্য)

ভিটামিন-এ যুক্ত খাবার

ভিটামিন এ যুক্ত খাবার
ভিটামিন এ যুক্ত খাবার

ভিটামিন-এ ফুসফুস, ব্লাডার ও গলনালী ক্যান্সার প্রতিরোধী। হলুদ ও লাল ফল, কলিজা,দুধ,ডিম,ছোট মাছ,মিষ্টিকুমড়া, লাল শাকে প্রচুর ভিটামিন -এ আছে।

সয়াবড়ি

সয়াবরি
সয়াবরি

সয়াবড়ি স্তন এবং কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। সব্জি রান্নার সময় সয়াবড়ি দিয়ে দিন এটি রান্নার স্বাদ বৃদ্ধির সাথে সাথে পুষ্টিরও যোগান দেয়।

লাল ও কমলা রঙের সব্জি

হলুদ ও লাল সব্জি
হলুদ ও লাল সব্জি

লাইকোপেন ও বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- গাজর, টমাটো, প্রভৃতি ডিম্বাশয়,স্তন,প্রোস্টেট ক্যান্সার সহ প্রায় ২৫ ধরণের ঝুঁকি কমায়।

ক্যান্সার রোগীর পথ্য

ক্যান্সার রোগ ধরা পরার পর সচারাচর কেমোথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। কেমোথেরাপি দিলে রোগীর পরিপাকতন্ত্রের উপর বিরূপ প্রভাব পরে ফলে হজম ক্ষমতা কমে যায়। এসময় সঠিক পথ্য দিতে পারলে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। ক্যান্সার রোগীর পথ্য দেখুন

শারীরিক সমস্যাপথ্য
বমি ভাব হালুয়া , স্যুপ,কাস্টার্ড,পুডিং
বমিডাবের পানি
ডায়রিয়া হালুয়া, ভাতের মাড়,সাবু, সুজি
কোষ্ঠকাঠিন্য ইসবগুল , শুকনো ফল, মটরশুঁটি, সীমের বীচি, শস্যজাতীয় খাদ্য
অরুচি স্যুপ্‌, মাছের পাতলা ঝোল, শুকনো ফল
মুখে ঘাঁ নরম বা তরল খাবার
ক্যান্সার রোগীর পথ্য

বমিভাব হলে কি খাবেন

বমিভাব
বমিভাব

চাল বা গমের আটা দিয়ে পাতলা হালুয়া তৈরি করে খেতে হবে।অবশ্যই খাবারে চিনি কম দিবেন।স্যুপ,কাস্টার্ড,পুডিং খেলে সহজে হজম হবে তাই বমিভাব কমবে। খুব গরম বা খুব ঠাণ্ডা খাদ্য খেলে বমিভাব বেড়ে যাবে তাই হালকা গরম খাবার খেতে হবে। আদা ও পেপারমিন্ট দিয়ে চা খেলে বমিভাব অনেকটা কেটে যায়।

বমি হলে কি খাবেন

ডাবের পানি,সেদ্ধ আলু,কলা খেলে বমির পর দ্রুত শক্তি ফিরে পাবেন।এগুলো পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার।পাতলা স্যুপ এবং ভাতের মাড় হালকা লবণ দিয়ে পান করলে সহজে হজম হবে আপনি দ্রুত রিফ্রেশ অনুভব করবেন। (ক্যান্সার রোগীর খাদ্য)

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কি খাবেন

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে এমন খাবার খেতে হবে যা, প্রচুর আঁশযুক্ত কিন্তু সহজে হজম হয়। শুকনো ফল, মটরশুঁটি, সীমের বীচি, শস্যজাতীয় খাদ্য খেতে পারেন এগুলোতে আঁশ বেশি থাকে। খাওয়ার পর হালকা গরম পানি খেতে পারেন। ঘুমানোর আগে ইসবগুল খাওয়া ভালো। টক দই কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে।

ডায়রিয়া হলে কি খাবেন

ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচার জন্য তরল খাবারের সাথে স্যালাইন পানি খেতে হবে। সোডিয়াম ও পটাসিয়ামযুক্ত তরল খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। তরল স্যুপ, চাল বা গমের আটার পাতলা হালুয়া, ভাতের মাড়,সাবু, সুজি ইত্যাদি খেলে সহজে হজম হবে দ্রুত শক্তি পাবেন। ক্যান্সার রোগীর পথ্য হিসেবে এগুলো বেশ ভালো ফলদায়ক।

ক্ষুধামন্দা ও অরুচি

খেতে ইচ্ছা না হলে জোরকরে একবারে বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে বেশিবার খাবেন। স্যুপ বেশি খাবেন।মাছের পাতলা ঝোল খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। শুকনো ফল খাওয়া ভালো।

মুখে ঘাঁ হলে কি খাবেন

মুখে জ্বলুনি হয় এমন ঝাল ও টক খাবার খাবেন না। খাওয়ার পর ভালোভাবে কুলকুচি করুন। শক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করবেন না। শক্ত খাবার গিলতে না পারলে জোর করবেন না নরম বা তরল খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। তরল পদার্থ স্ট্র দিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন।

ক্যান্সার রোগীর খাদ্য গ্রহণের নিয়ম

ক্যান্সার রোগী খাদ্য গ্রহণ করার সময় এই নিয়মগুলি অনুসরণ করুন

  • খাবার খেতে মন না চাইলেও খুব অল্প করে বারবার খাবার খান।
  • বেশি করে তরল খাবার খাওয়া।
  • খাবার খাওয়ার মাঝে মাঝে জল পান না করা।
  • খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে বা পরে বেশি করে পানি পান করে নেয়া।
  • খাবারের গন্ধ পছন্দ না হলে জোর করে খাবেন না।

Info Source:  webmd cancersupport cancer.org

পরামর্শ দিয়েছেন-
ড. এস,এম,ডেভিডসন
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ
কলরাডো,আমেরিকা

প্রশ্ন ও উত্তর

ক্যান্সার রোগী দুধ খেতে পারবে কি?

হ্যাঁ, তবে বেশিকরে ফুটানো দুধ খেতে হবে।

ক্যান্সার রোগী দই খেতে পারবে কী?

হ্যাঁ, মিস্টি দই না খেয়ে টক দই খাওয়া ভালো।

ক্যান্সার রোগী মাংস খেতে পারবে কি?

হ্যাঁ, লাল মাংস না খেয়ে সাদা মাংস খেতে হবে।

Suggested food for cancer patient in Bangla

Top Foods for Cancer Patients in Bangla, A Complete Guide to Food & Diet for Cancer Patients inBangla, cancer rogir khaddo talika,cancer rogir ki khaoa uchit,cancer rogir pottho,

Tag: ক্যান্সার রোগীর খাদ্য … ক্যান্সার রোগীর খাদ্য .. ক্যান্সার রোগীর খাদ্য … ক্যান্সার রোগীর খাদ্য ক্যান্সার রোগী কি খাবেন ক্যান্সার রোগীর কি খাওয়া উচিত ক্যান্সার রোগীর উপকারি খাবার

Please Click on Just one Add to help us

মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।

এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।