পাদ কী? মানুষ পাদে কেন?
প্যা..পোত….পুত….পোওওওত শব্দে অনেক পাদের শব্দ শোনেন নি এমন লোক দুনিয়াতে বাতি জ্বালিয়ে খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। উচ্চ শব্দযুক্ত পাদ সাধারণত গন্ধহীন হয় বলেই মনে করা হয় কিন্তু শব্দহীন ফুঁস পাদ বেশ জটিল অবস্থার সৃষ্টি করে।
ধরুন একটি ছোট ঘরে অনেক মানুষ আছে এর মধ্যে কেউ শব্দহীন একটি ফুঁস পাদ মেরে দিলো তখন নাক বন্ধ করলেও পাদের ঘন বাতাস একবার নাকে প্রবেশ করলে খবর আছে না পারবেন থুতু ফেলতে আবার না পারবেন থুতু গিলে ফেলতে, কি একটা অবস্থা আরকি! এসময় আপনার মনে হবে এই পাদ দাতাকে খুঁজে বের করে পাছায় একটা কষে লাত্থি মারি যাতে শালার পশ্চাৎদেশের ফুটো বন্ধ হয়ে যায় জীবনে আর এমন পাদ মারতে না পারে।
যাইহোক অনেক চিন্তা বাদ দিয়ে আজ আসুন জেনে নেই পাদ কী? মানুষ পাদে কেন?
আপনি আরো পরতে পারেন… পাদ নিয়ে মজার তথ্য … পাদের শব্দ হয় কেন? …. পাদ আটকে রাখার অপকারিতা# … পাদের গন্ধ দূর করার উপায়? … পাদ থেকে মুক্তির উপায় কী?
পাদ কী?
পাদের সংজ্ঞা
“পেটে উৎপন্ন হওয়া গন্ধযুক্ত বা গন্ধহীন বাতাস বা গ্যাস পায়ুপথে স্বশব্দে বা নিশব্দে দেহের বাইরের পরিবেশে মুক্ত হওয়াকে পাদ বলে।”
Info: wikipedia
পাদের ইংরেজি কী?
পাদের ইংরেজি হলোঃ fart বা flatulence.
পাদের ইংরেজি Synonym: breaking wind, farting, flatus, wind
পাদ শব্দের সমার্থক বা প্রতিশব্দঃ
পর্দ্দন,পন্দ্রবায়ু,বাতকর্ম, অপানবায়ু,অধঃবায়ু,নিম্নগামী বায়ু,অধবায়ু ইত্যাদি
পাদের ইংরেজি সংজ্ঞাঃ
পাদ শব্দটি Verb হলে এটার সংজ্ঞা হবে,
তথ্যসূত্রঃ শব্দকোষ ডট কম
“expel intestinal gases through the anus”
পাদ শব্দটি Noun হলে এটার সংজ্ঞা হবে,
“a reflex that expels intestinal gas through the anus”
পাদ শব্দের উৎপত্তি:
পাদের ইংরেজি প্রতিশব্দ flatulence এর উৎপত্তি হয়েছে ল্যাটিন শব্দ flatus থেকে যার অর্থ বায়ু নির্গত করা।
আবার সংস্কৃত ভাষার শব্দ “পর্দ্দ” থেকে “পাদ” শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। কিভাবছেন মশাই! “পাদ” কোন সাধারণ হেলাফেলার শব্দ নয়।
আপনি জানলে অবাক হবেন যে, খৃষ্টপূর্ব ১৯০০ সালে সুমেরীয় সভ্যতায় পাদ নিয়ে কৌতুক প্রচলিত ছিল।
সাহিত্যে পাদঃ
আপনি হয়তো জানেন না কবি ও লেখকরা ইংরেজি সাহিত্যে পাদের বর্ণনা করার সময় fart ব্যবহার না করে blowing, breathing, snorting or breaking wind ইত্যাদি সাধু ভাষার শব্দ ব্যবহার করেন।
উদাহরণ- “letting fly a fart, as loud as it had been a thunder clap” through a window, directly into the face of his unsuspecting rival Absalom”
কবি,জিওফ্রে চসার, The Canterbury Tales
বাংলা সাহিত্যেও লেখকরা “পাদ” শব্দটিকে সাধু ভাষায় বাতকর্ম,অপানবায়ু নামে ব্যবহার করেন।
“পশ্চাৎ দ্বারা নির্গত বায়ু যেমন সুগন্ধের হয় না,অপ্রাপ্ত বয়সে প্রেমও তেমনি পরিপক্ক হয় না বা ভবিষ্যৎ সুফল বয়ে আনেনা”
বাংলা সাহিত্য
পাদ কিভাবে সৃষ্টি হয়?
দুইভাবে পাদ সৃষ্টি হয়।
১। মানুষ প্রতিদিন প্রশ্বাস গ্রহণের মাধ্যমে প্রচুর বাতাস ফুসফুসে গ্রহণ করে এটি আবার নিঃশ্বাসের মাধ্যমে বের করে দেয়। কিন্তু যে বাতাস গিলে ফেলে তা পেটের ভেতর প্রবেশ করে। আবার খাদ্য বা পানি গ্রহণের সময় প্রচুর বাতাস পেটে চলে যায় এই বাতাস আর বের হতে পারে না। এসব বাতাস থেকে কিছু অংশ ঢেকুর তোলার মাধ্যমে বের হয়। বেশিরভাগ বাতাস পরিপাক নালির লম্বা পথ অতিক্রম করে পায়ু পথে বের হয় পাদের মাধ্যমে।
আপনি জানলে অবাক হবেন যে চুইংগাম চিবানো, ধুমপান,স্ট্র বা নলের মাধ্যমে জুস বা তরল খাবার খাওয়ার সময় বেশি পরিমাণে বাতাস পেটের ভেতর চলে যায়। পেটে যে বাতাস ঢুকে পরে তার মধ্যে অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন গ্যাস বেশি থাকে।
২। আমরা যে খাবার খাই তা পরিপাকতন্ত্র থেকে ক্ষরিত এনজাইমের মাধ্যমে হজম হয়। এই খাবারের হজম না হওয়া অংশ ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ফারমেন্টেশন বা গাঁজন প্রক্রিয়ায় সরল খাবারে পরিণত হয়। ফারমেন্টেশনের কারণে পেটের ভেতর মিথেন, কার্বনডাইঅক্সাইড, হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। এই গ্যাস গুলোর সাথে গিলে খাওয়া বাতাসের অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন গ্যাস যুক্ত হয়।
সময়ের সাথে সাথে গ্যাসের পরিমাণ বাড়তে থাকে, এই বিপুল পরিমাণ গ্যাস বের হওয়ার একমাত্র পথ পায়ুপথ। পায়ুপথে পাদ হিসেবে এই গ্যাসগুলো বের হয়ে যায়। আপনি শুনলে অবাক হবেন যে মানুষের পরিপাকতন্ত্রে প্রায় ১০০০ ট্রিলিয়ন বা ১০০,০০০০০০ কোটি ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই ব্যাকটেরিয়ার দল প্রতিদিন মানুষের পেটে ০.৫ থেকে ৩ লিটার গ্যাস উৎপাদন করে।প্রতিদিন একজন মানুষের গিলে খাওয়া বাতাস ও ব্যাকটেরিয়ার ফারমেন্টেশনে উৎপন্ন মোট গ্যাসের পরিমাণ ০.৬ থেকে ৬.৮ লিটার।
ভাবা যায় কি সব বিক্রয়া চলছে পেটের ভেতর! এবার অনেকেই হয়ত ভবছেন গ্যাসের সিলিন্ডার না কিনে নিজের পশ্চাৎ দেশের ফুটোতে গ্যাসের চুলার নল সেট করলে বেশ ভালো হয়!!! অনেক মহান আবিষ্কারক নতুন কিছু আবিষ্কার করতে না পারায় এটা নিয়ে গবেষণা শুরু করতে পারেন যে কিভাবে পাদ সংগ্রহ করার মেশিন আবিষ্কার করা যায়। মেশিনের সাহায্যে পাদ ধরবো সিলিন্ডারে ভরবো গ্যাসের খরচ বাঁচাবো।
পাদের উপাদানঃ
পাদ বিভিন্ন গ্যাসের মিশ্রণে গঠিত।
পাদে কোন গ্যাস থাকে?
গ্যাসের নাম | পরিমাণ |
নাইট্রোজেন | ৫৯% |
হাইড্রোজেন | ২১% |
কার্বনডাইঅক্সাইড | ৯% |
মিথেন | ৭% |
অক্সিজেন | ৪% |
হাইড্রোজেন সালফাইড | ১% |
পাদের প্রকারভেদঃ
শব্দের উপর ভিত্তি করে পাদ ২ ধরণের।যথা:-
- ১। শব্দযুক্ত পাদ বা ঠাস পাদ
- ২। শব্দহীন পাদ বা ফুস পাদ
১। শব্দযুক্ত পাদ বা ঠাস পাদঃ
পুউউউত,পোওওত,পোতপোতপওওওতাস ইত্যাদি মনমাতানো সুরের ঝংকার মেশানো,মানুষের মন কে আনন্দদানকারী শব্দের সাথে যে পাদ নির্গত হয় তাকে শব্দযুক্ত পাদ বা ঠাস পাদ বলে।শব্দ দূষণের অভিযোগ পাওয়া গেলেও এই পাদ বেশিরভাগ সময়ই গন্ধহীন হয়। বাড়িতে বাবার শব্দযুক্ত পাদের শব্দে যেমন ছোট শিশু আনন্দিত হয় তেমনি শাশুড়ির শব্দযুক্ত পাদের কারণে জামাই বড়ই লজ্জিত হয়।
মসজিদে নামাজরত মুসল্লির শব্দযুক্ত পাদের কারণে সবাই প্রাণপণে চোয়াল শক্তকরে, দাঁত কাঁমরে নিঃশব্দ হাসিতে ফেটে পরে সবাই। ভরা মজলিসে, বাস,ট্রেনে শব্দযুক্ত পাদ মানুষের মন কে বিনামূল্যে বিনোদিত করে।
২। শব্দহীন পাদ বা ফুস পাদঃ
পেটের ভেতর ভুটভাট শব্দ করতে করতে একসময় শব্দ উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে নিঃশব্দে যে পাদ নির্গত হয় তাকে শব্দহীন বা ফুস পাদ বলে। ৯৯% ক্ষেত্রেই শব্দহীন পাদ বিকট গন্ধযুক্ত হয়। জনসমাগম তাড়িয়ে দিতে এই পাদের ক্ষমতা অনস্বীকার্য। শত্রুর মোকাবেলা করতে চাইলে গ্রেনেডের পরিবর্তে এটি ব্যবহার করতে পারেন। ভরা ক্লাশরুমে এ ধরণের পাদের মাহাত্ম্য বেশি অনুধাবন করা যায়।
এধরনের পাদগুলো সাধারণত পরিবেশ দুষণ করে থাকে। কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী এমন কথার উপযুক্ত প্রমাণ এই পাদ। এই পাদ দাতার কাছে করজোড়ে অনুরোধ পাদ মারার পর অবশ্যই পাছার কাপড় ঝাড়া দিবেন এতে পাদের প্রভাবে ঘন বাতাস দ্রুত পাতলা হবে মানুষ কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
গন্ধের উপর ভিত্তি করে পাদ ২ ধরণের যথা:-
- ১।গন্ধযুক্ত পাদ- গন্ধ আছে।
- ২ গন্ধহীন পাদ- গন্ধ নেই।
এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা পাদ কে আরো দুইভাগে ভাগ করেছেন যথা:-
কুইয়া পাদ বা চোরা পাদঃ
অন্তত ৩ দিন ধরে গু বন্ধ থাকার ফলে সৃষ্ট পাদ।হিরোশিমার বোমার চাইতে ভয়ংকর এই পাদ।
ঝোল পাদঃ
ডায়রিয়ার সময় এই পাদ হয়। চলাফিরার মূহুর্তে দেয়া একটু ঝুকিপূর্ণ। যেকোনো সময়ে হলুদ ঝোলে প্যান্ট মাখামাখি হয়ে যেতে পারে।এর শব্দ সাধারণত ‘ফেড়ফেড়’ বা ‘ভ্যাড়ভ্যাড়’।
প্রশ্ন ও উত্তর
পাদ কী জীবাণু ছড়ায়?
পাদে কোন জীবাণুর উপস্থিতি আজ পর্যন্ত আবিষ্কার হয় নি। তাই পাদের মাধ্যমে জীবাণু ছড়ানোর কোন সম্ভাবনা নেই।তবে পাদের সাথে ঝোল বা পাতলা গু থাকলে ঘটনা উল্টো হতে পারে। এধরণের ঝোলযুক্ত পাদের মাধ্যমে জীবাণু ছড়াতে পারে। তাই জনসমক্ষে এ ধরণের স্যুপ বিশিষ্ট পাদ মেরে জনগণের প্রত্যক্ষ ক্ষতি করবেন না।
এবিষয়ে বিজ্ঞানী কুইলি বলেন,
“There is no evidence that you can spread germs through flatulence, unless feces is present,” says Dr. Quigley.
কিভাবে একটি আরামদায়ক পাদ মারবেন?
আপনি জানেন কি, খুব টাইট প্যান্ট পরে থাকলে পাদ মেরে আরাম পাবেন না। ধিরে সুস্থে নিজের পশ্চাৎ দেশের প্যান্ট এমনভাবে টেনে ধরে উচু করুন যাতে পেছনের ছিদ্রপথ চাপমুক্ত থাকে। এবার লম্বা শ্বাস নিয়ে আরামছে পাদ ছাড়ুন। এতে পাদার সব সুখ আপনি উপভোগ করতে পারবেন। আরামদায়ক পাদের জন্য শ্রেষ্ঠ পোষাক যে লুঙ্গি এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আহ্!!! আজ বাঙ্গালির প্রাণপ্রিয় পোষাক লুঙ্গির আশ্চর্য সুবিধা সম্পর্কে জেনে বরই গর্বিত হলাম।
পাদ মারার সময় সতর্ক থাকুন#
যত্রতত্র, অসময়ে , জনসম্মুখে, বদ্ধ ঘরে পাদ মারবেন না। এটি আপনার সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারে। নিচের নিয়ম মেনে চলুন সম্মান বাঁচান।
ভদ্র পাদের নিয়মঃ
- ১। ভরপেট মাংস খাওয়ার পর ৩দিন পায়খানা না হলে ধরে নেবেন আপনি যে পাদ মারবেন তা পারমানবিক বোমার চেয়ে কোন অংশে কম বিপদজনক নহে। একটি জনবহুল বদ্ধ ঘরে এই ধরণের পাদ জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ। এর প্রভাবে অনেকের খাদ্য গ্রহণের ইচ্ছা চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে। তাই কোন ব্যক্তির এমন ধরণের পাদ মারার প্রয়োজন হলে, অবশ্যই লোকালয় থেকে দূরে নির্জন স্থানে পৌছে বাতাস যেই দিকে প্রবাহিত হইতেছে সেই দিকে পশ্চাৎদেশ ঘুরিয়ে কার্য সমাধা করা উচিত।
- ২। ঘুম জাগার পর জনসম্মুখে বায়ু ত্যাগ করিবেন না। এতে গন্ধ গলধঃকরণকারীর বমি হইতে পারে।
- ৩। শব্দযুক্ত পাদ কোলাহল আছে এমন স্থানে মারিবেন এতে সম্মান রক্ষা পাইবে।
Pad ki?Manush pade keno?
detailed discussion about fart in bangla, discussion about Flatus, pad keno hoy?
Tag: পাদ কী … পাদ কী … পাদ কী … পাদ কী … পাদ কী … পাদ কী … পাদ কী ,,, পাদ কী … পাদ কী ,,, পাদ কী …
Please Click on Just one Add to help us
মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।
এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা।