- ব্রণ কেন হয়? ব্রণ হয়ার ১৫ টি কারণ !
- ব্রণ হয় কেন?
- ১।হরমোনের প্রভাব
- ২।মেয়েদের পিরিয়ডের গণ্ডগোল
- ৩।জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল
- ৪।জীবাণুর আক্রমণ
- ৫।পরিচ্ছন্নতার অভাব
- ৬।শ্যাম্পু থেকে সাবধান
- ৭।টুথপেস্ট ব্যবহারে অসতর্কতা
- ৮।ঘুমের অভাব
- ৯।বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য
- ১০।তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার
- ১১।কিছু বিশেষ রোগ
- ১২।মানসিক দুঃশ্চিন্তা
- ১৩।ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- ১৪।নকল প্রসাধনি ব্যবহার
- ১৫।অতিরিক্ত ঘাম
- ব্রণ কী ছোঁয়াচে?
- কাদের ব্রণ বেশি উঠে?
- কোন বয়সে ব্রণ বেশি উঠে?
- কপালে ব্রণ কেন হয়?
- ছেলেদের মুখের ব্রণ কেন হয়?
- থুতনিতে ব্রণ হওয়ার কারণ কী?
- কোন হরমোনের কারণে ব্রণ হয়?
ব্রণ কেন হয়? ব্রণ হয়ার ১৫ টি কারণ !
নিজের সুন্দর ত্বক নিয়ে আপনি বেশ গর্ব বোধ করেন কিন্তু দেখা গেলো হঠাৎ করে মুখ ভর্তি ব্রণ উঠে গেলো তখন ব্রণ ভর্তি কুতসিত মুখ নিয়ে আক্ষেপের শেষ থাকে না।তখন ভাবতে বসেন কেন এমন জঘন্য ব্রণ উঠে সুন্দর মুখটা অসুন্দর হয়ে গেলো।বিভিন্ন কারণে ব্রণ উঠতে পারে এর মধ্যে কিছু কারণ হলো প্রাকৃতিক আর কিছু কারণ হলো নিজের অসাবধানতা। আসুন আজ জেনে নেয়া যাক ব্রণ উঠার কারণ সম্পর্কে।
আপনি আরো পড়তে পারেন….. ব্রণ বা পিম্পল কি? ব্রণ থেকে মুক্তির উপায়!
ব্রণ হয় কেন?
বয়ঃসন্ধিকালে মুখের ত্বকের তেল গ্রন্থি অধিক মাত্রায় সক্রিয় হয়ে উঠে মুখকে বেশী মসৃণতা প্রদান করতে থাকে। বেশী মসৃণতায় কখনো-কখনো লোমকূপে মাটি, ধুলো মিশে ওগুলোকে বন্ধ করে দেয়। এর ফলে ব্রণের সৃষ্টি হয়। ব্রণ নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়, কিন্তু কখনো-কখনো যত্ন না করলে সুন্দর মুখকে নষ্ট করে দেয়। নিচে ব্রণ হওয়ার প্রধান কারণগুলো আলোচনা করছি।
১।হরমোনের প্রভাব
বয়ঃসন্ধিকালে মানে ১৩ থেকে ১৬ বছর বয়সে ছেলেদের টেস্টোস্টেরন নামক যৌন হরমোন নিঃসরণ হয় মেয়েদের ইস্ট্রোজেন নামক যৌন হরমোন নিঃসরণ হয় এই হরমোনগুলোর প্রভাবে ত্বকের তৈল গ্রন্থি প্রচুর তেল ক্ষরণ করে এই তেল মুখের ত্বকে বেশি জমা হয় একারণে মুখ চকচকে ও কোমল হয়। আকর্ষণীয় কোমল ত্বকের জন্য মূলত এই হরমোনগুলোর ভূমিকা আছে।
মুখের ত্বকে তেল বেশি মাত্রায় নিঃসরণ হলে ত্বক তেলতেলে হয়ে যায় এমন তেলতেলে ত্বকে ধূলাবালি লেগে গেলে তা সহজে উঠে না মুখের উপর একটা অদৃশ্য আস্তরণ সৃষ্টি করে। ত্বকের উপর থাকা লোমকূপের ছিদ্রপথে ত্বক থেকে বর্জ্য পদার্থ বের হয়ে যায়। ধূলাবালির আস্তরণ লোমকূপের ছিদ্র বন্ধ করে দেয় ফলে এসব বর্জ্য বের হতে না পেরে ত্বকের নিচে জমা হয় তখন ঐ স্থানের ত্বক ফুলে উঠে এটাকেই ব্রণ বা পিম্পল বলে। সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে ব্রণ বেশি উঠে এসব হরমোনের প্রভাবে।
২।মেয়েদের পিরিয়ডের গণ্ডগোল
মেয়েদের পিরিয়ড নিয়ন্ত্রিত হয় ল্যুটিনাইজিং,ফলিকল স্টিমুলেটিং,ইস্ট্রোজেন,প্রজেস্টেরন ইত্যাদি হরমোনের মাধ্যমে। এই হরমোনগুলো নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমানে নিঃসরণ হয়। যেকোন একটি হরমোনের ব্যালান্স নষ্ট হলে পিরিয়ড অনিয়মিত হয়। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে মেয়েদের মুখে ব্রণ হতে পারে।
৩।জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল
জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল দীর্ঘদিন সেবন করলে নারীদের দেহে হরমনাল ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে এ কারণে মুখে ব্রণ উঠে।
৪।জীবাণুর আক্রমণ
ত্বকের তৈল গ্রন্থি থেকে যে তেল ক্ষরণ হয় তার একটি উপাদান হচ্ছে লিপিড ((Lipid) এটি ত্বকে বসবাসকারী Propiono Bacterium নামক ব্যাক্টেরিয়ার প্রিয় খাদ্য।ত্বকে তেল বেশি ক্ষরণ হলে এই ব্যাকটেরিয়া প্রচুর খাবার পায় ফলে এরা বংশবৃদ্ধি করে বহুগুণে।এই জীবাণু ত্বকে প্রদাহের (Inflammation) সৃষ্টি করে। ফলে মুখের ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায় এবং মুখে ব্রণের সৃষ্টি হয়। কখনো কখনো ত্বকে সেকেন্ডারি ইনফেকশন হয়ে পুঁজ, গর্ত, দাগের সৃষ্টি হয়।
৫।পরিচ্ছন্নতার অভাব
ঘরের বাইরে বের হয়ে সারাদিন ঘোরাঘুরি করলে ত্বকে প্রচুর ধূলা জমা হয় এসব ধুলা লোমকূপ বন্ধ করে দেয় যদি বাসায় ফিরে ভালোভাবে মুখ না ধোয়া হয় তাহলে মুখে ব্রণ উঠে। রাতে ঘুমানোর আগে ও সকালে ঘুম থেকে উঠে ভালোকরে মুখ না ধুলেও ব্রণ উঠে। ময়লা হাত বারবার মুখে লাগালে জীবাণুর সংক্রমণে ব্রণ উঠতে পারে। নামাজ আদায় করলে দিনে পাঁচবার মুখ ধোয়া হয় এতে ব্রণ উঠার সম্ভাবনা কম থাকে।
৬।শ্যাম্পু থেকে সাবধান
মাথায় শ্যাম্পু ঘষলে ফেনা উঠে শ্যাম্পুর ফেনা উৎপন্নকারী উপাদানটি মুখের ত্বকের উপর বেশিক্ষণ থাকলে ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার পরিমান বৃদ্ধি পায় এই ব্যাকটেরিয়া গুলো মুখে ব্রণ সৃষ্টি করে। আবার কন্ডিশনারের তৈলাক্ত উপাদান মুখের ত্বকের লোপকুপ বন্ধ করে দিয়ে ত্বকে ব্রণ তৈরি করে অনেকসময়।
৭।টুথপেস্ট ব্যবহারে অসতর্কতা
আমরা সকালবেলা টুথপেস্ট দিয়ে দাত ব্রাস করি, ব্রাস করার সময় টুথপেস্টের ফেনা গালের কোনা দিয়ে মুখের ত্বকে লেগে যায় তখন মুখের ভেতর থেকে ক্ষতিকর জীবাণু মুখের উপরের ত্বকে লেগে যায় এই জীবাণু ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে।টুথপেস্ট এর উপাদান যেমন – হাইড্রোজেন পারক্সাইড, ফ্লোরাইড, অ্যালকোহল, এসেনশিয়াল অয়েল এবং মেন্থল এসব ত্বকের জন্য খুব ভাল নয় এই উপাদানগুলো মুখের কোমল ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে।
৮।ঘুমের অভাব
রাতে পর্যাপ্ত পরিমানে না ঘুমালে মুখের ত্বক বিষাক্ত পদার্থ ভালোমত ডিটক্স করতে পারে না ফলে ত্বক রুক্ষ হয়ে উঠে এমন রুক্ষ ত্বকে সহজে জীবাণু আক্রমণ করে ব্রণ সৃষ্টি করে।অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ব্রণ হওয়ার মূল কারণ পর্যাপ্ত না ঘুমানো। রাত জেগে থেকে দিনে ঘুমালে কাজ হবে না।
৯।বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য
খাবারের পুষ্টি বের হয়ে আসে হজম হওয়ার পর। হজম ভালোকরে না হলে আপনি যতই পুষ্টিকর খাবার খান না কেন তা আপনার শরীরকে কখনই পুষ্টির যোগান দিতে পারবে না। বদহজমের কারণে মানুষ পুষ্টিহীনতার শিকার হয় পুষ্টিহীনতার কারণেও ব্রণ হতে পারে। বদহজমের কারণে প্রশান্তিদায়ক ঘুম হয় না একারণে ব্রণ উঠে। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে ব্রণ উঠে না কিন্তু যার মুখে ব্রণ আছে তার কোষ্ঠকাঠিন্য হলে ব্রণের পরিমান বৃদ্ধি পায়।
১০।তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার
তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার বেশি খেলে যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের তৈল গ্রন্থির নিঃসরণ আরো বৃদ্ধি পায় ফলে ত্বকে ব্রণ উঠে। ভাজাপোড়া খাবার খেলে হজমে ব্যাঘাত ঘটে ফলে ব্রণ সৃষ্টি হয়।চা-কফি বেশি খাওয়ার কারণে দেহে প্রচুর ক্যাফেইন জমা হয় অতিরিক্ত ক্যাফেইন ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে।
১১।কিছু বিশেষ রোগ
রক্তস্বল্পতা, দাঁতের রোগ, টন্সিলের প্রদাহ থেকে ব্রণ হতে পারে। এসব রোগের কারণে ত্বকের কার্যকরীতা কমে গিয়ে ব্রণ হতে পারে।
১২।মানসিক দুঃশ্চিন্তা
কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হলে নিজের প্রতি যত্নবান হয় না দেহের প্রতি অযত্ন ও কম ঘুমের কারণে ব্রণ উঠে। অতিরিক্ত মানসিক চিন্তার কারণে দেহে হরমোন ব্যালান্স নষ্ট হয় এতে দেহের স্বভাবিক কাজের সমন্বয় থাকে না ফলে ব্রণ উঠে।
১৩।ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
স্টেরয়েড জাতীয় ক্রিম বা লোশন বেশি দিন ধরে লাগালে ত্বকে ব্রণ হতে পারে। ট্যাবলেট অথবা ইনজেকশনে যদি স্টেরয়েড ব্যবহার করেন তাহলেও আপনার ব্রণ হতে পারে। উচ্চমাত্রার এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করলেও তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে ব্রণ হতে পারে।
১৪।নকল প্রসাধনি ব্যবহার
বাজারে বিভিন্ন নামি ব্রান্ডের নকল প্রসাধনি পাওয়া যায় এসব নকল প্রসাধনিতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপকরন থাকে যেগুলো ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি করে। অনেকের ত্বকে স্থায়ি ক্ষতি করতে পারে।অতিরিক্ত প্রসাধনি ব্যবহার করলেও ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি হয়।
১৫।অতিরিক্ত ঘাম
যাদের মুখ অতিরিক্ত ঘামে তাদেরও ব্রন হওয়ার সম্ভবনা বেশি।ত্বক অতিরিক্ত ঘামলে ভেজা ত্বকে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া জন্মে এগুলো ব্রণ সৃষ্টি করে।
ব্রণ কী ছোঁয়াচে?
স্বাভাবিক ব্রণ ছোঁয়াচে নয় তবে জীবানু দিয়ে আক্রান্ত ব্রণ ছোঁয়াচে।ব্রণ আক্রান্তদের তোয়ালে বালিশ ও চিরুনি ব্যবহার করলে আপনার ব্রণ হতে পারে।
কাদের ব্রণ বেশি উঠে?
যারা নিয়মিত ত্বকের যত্ন করে না এবং যাদের ত্বক বেশি তৈলাক্ত তাদের ব্রণ বেশি উঠে।
কোন বয়সে ব্রণ বেশি উঠে?
সাধারণত ১৩-১৮ বছর বয়সে ব্রণ বেশি উঠে।
কপালে ব্রণ কেন হয়?
কপাল বেশি ঘামে তাই কপালে ব্রণ হয়।আবার সূর্যের আলো কপালে বেশি পরে একারণেও ব্রন বেশি হয় কপালে।
ছেলেদের মুখের ব্রণ কেন হয়?
যেসব ছেলেদের মুখ অতিরিক্ত ঘামে তাদেরও ব্রন হওয়ার সম্ভবনা বেশি।ত্বক অতিরিক্ত ঘামলে ভেজা ত্বকে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া জন্মে এগুলো ব্রণ সৃষ্টি করে।
থুতনিতে ব্রণ হওয়ার কারণ কী?
থুতনি বেশি ঘামে তাই থুতনিতে ব্রণ হয়।আবার সূর্যের আলো থুতনিতে বেশি পরে একারণেও ব্রন বেশি হয় থুতনিতে।থুতনিতে তৈল গ্রন্থি বেশি তেল ক্ষরণ করে একারণেও থুতনিতে ব্রণ বেশি হয়।
কোন হরমোনের কারণে ব্রণ হয়?
ল্যুটিনাইজিং,ফলিকল স্টিমুলেটিং,ইস্ট্রোজেন,প্রজেস্টেরন,টেস্টোস্টেরন ইত্যাদি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে ব্রণ হয়।
Tag- ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয় ব্রণ কেন হয়
Please click on one Add to help us
মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।
এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।