শিক্ষকদের মর্যাদা কমে যাওয়ার কারণ কী?
আপনি আরো পড়তে পারেন ….. ঈশপের নীতিমূলক গল্প।মোরাল স্টোরি।পার্ট-১
ছাত্ররা শিক্ষক কে সম্মান করে না কেন?
আগের দিনে হাইস্কুলে শিক্ষকরা পড়াতো অতি স্বল্প বেতনে। এই বেতনে তারা ঠিকমত ৩০ দিন মাছ মাংস কিনে খেতে পারতো না। তবু তারা মন দিয়ে ক্লাশরুমে পড়াতো সবসময় হাসিমুখে থাকতো। চাকুরী শেষ হলে তারা খালি হাতে বিদায় নিতো। বুড়ো বয়সে অনেক শিক্ষক মানবেতর জীবনযাপন করতো। অনেক শিক্ষক কে শেষ জীবনে ভিক্ষা করতে দেখেছি। এত কিছুর পরেও সমাজে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বেশি ছিলো সবাই সম্মান করতো। সেসময় শিক্ষা বাণিয্য পণ্য ছিলো না। কালের বিবর্তনে অবহেলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় অনেকে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছেন পেটের দায়ে।
বেশিরভাগ শিক্ষক এই পেশা বেছে নিয়েছেন প্রচণ্ড বিরক্তি নিয়ে অথবা জীবনের শেষ চেষ্টা হিসেবে অনেক টাকা ঘুষের বিনিময়ে। দেশের সর্বোচ্চ নিয়োগ পরীক্ষা বিসিএস আর এই পরীক্ষার সর্বনিম্ন ক্যাডার হলো শিক্ষা ক্যাডার আর প্রত্যেক চাকুরী প্রার্থীর শেষ চয়েস থাকে শিক্ষা ক্যাডার। তাহলে চিন্তা করুন এরকম হতাশ শিক্ষক কিভাবে তার সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন ক্লাশরুমে? মনে রাখবেন শিক্ষক কে ছাত্ররা সম্মান করে তার পড়ানোর দক্ষতার জন্য।
ক্লাশরুমে শিক্ষক সর্বোচ্চ দক্ষতা প্রয়োগ করতে না পারলে ছাত্ররা শিখন ঘাটতি দূর করার জন্য প্রাইভেট টিউটরের দ্বারস্থ হয়। নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কে ছাত্ররা যতটা সম্মান করে প্রাইভেট টিউটরদের তার অর্ধেক সম্মান করে। কিন্তু একসময় যখন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং প্রাইভেট টিউটরের মধ্যে পার্থক্য ধরে ফেলে তখন ছাত্ররা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের ফাঁকিবাজি ধরে ফেলে তখন ছাত্ররা আর নিজের শিক্ষক কে সম্মান করে না। যে শিক্ষক ফাঁকি দেয় না শিক্ষার্থীদের মঙ্গলে নিজেকে আত্মনিয়োগ করে তাকে শিক্ষার্থীরা মাথায় স্থান দেয়। শিক্ষক মাথায় স্থান করে নিয়ে শিক্ষার্থীর দেহের যেখানে প্রহার করুন না কেন তারা কখনো উপরে তাকাবে না মাথা নিচু করে থাকবে কারণ মাথায় যতই যন্ত্রণা হোক না কেন আমরা যন্ত্রনা থেকে বাঁচতে কখনই মাথা কেঁটে ফেলি না।
কিন্তু আপনি যখন মাথায় না বসে ঘাড়ে বসে মাথায় প্রহার করবেন তখন তারা আপনাকে ঝাঁকুনি দিয়ে ঘাড় থেকে ফেলে দিবে। অনেক শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের লোভে বিভিন্ন অনৈতিক কৌশল প্রয়োগ করে, যেমন – প্রশ্ন ফাঁস,প্রাইভেট পড়ুয়া কে অতিরিক্ত নম্বর দেয়া, প্রাইভেট না পড়লে নম্বর কম দেয়া,প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার নম্বর দেবোনা বলে হুমকি দেয়া, এই নোটের মধ্যেই পরীক্ষার সব প্রশ্ন কমন পাবে বলে চড়া মূল্যে নোট বিক্রি করা, ক্লাশে বিভিন্ন পরিবেশ তৈরি করে শিক্ষার্থীকে হেনস্থা করা ইত্যাদি।
এসব করলে শিক্ষার্থী বুঝে যায় আপনি শিক্ষক নয় একজন ব্যবসায়ী। একজন ব্যবসায়ী পণ্য বিক্রির জন্য সবসময় কাস্টমারের পেছনে নিজেকে বিলিয়ে দেয় তখন কাস্টমার এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ী কে নিজের পেছনে ঘুরায়। এরকম শিক্ষক কে শিক্ষার্থীরা কখনই মন থেকে সম্মান করে না।
ফুটবল বিশ্বকাপের ট্রফি সবার জন্য উন্মুক্ত নয় তাই মানুষ টিকিট কেটে টাকা খরচ করে দেখে। কিন্তু অনেক আবেদন করে যদি কোন দেশ কিছু দিনের জন্য এই ট্রফির প্রদর্শনী করে তবুও মানুষ এটা টিকিট কেটেই দেখে। এই ট্রফির চেয়ে বেশি পরিমান সোনা দিয়ে আরও সুন্দর করে ট্রফি বানালেও সেটা টিকেট কেটে কেউ দেখতে যায় না কারণ বিশ্বকাপ ট্রফির মত সম্মান নকল ট্রফি অর্জন করতে পারে নি।
তেমনি আপনি ক্লাশরুমে সর্বোচ্চ ভালো পড়ালে সম্মান অর্জন করবেন সেই সম্মানের কারণে যেখানেই যাবেন প্রচুর অর্থ পাবেন সাথে সম্মান অক্ষুণ্ণ থাকবে। নকল ট্রফির মত ছাত্রদের ফাঁকি দিলে কেউ আপনাকে সম্মান করবে না।
গার্ডিয়ানদের কথা:
ক্লাশে ভালো পড়া না হলে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে গার্ডিয়ানদের কাছে সেটা বলেন। গার্ডিয়ানরা সন্তানের ভবিষ্যত উজ্জ্বল করার জন্য টাকা দিয়ে শিক্ষক কেনে। ক্রয়কৃত শিক্ষক কে যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করে। শিক্ষার্থী চোখের সামনে পিতামাতার কাছে শিক্ষক কে অপমান করতে শেখে। একসময় এটা তাদের অভ্যেস হয়ে যায়।
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক জোর করে বা অপকৌশল খাটিয়ে যখন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন তখন কিন্তু তিনি নিজেই ক্রয়কৃত শিক্ষকের তালিকাভুক্ত হয়ে যান। এসব শিক্ষক কে গার্ডিয়ানরা পোষা প্রাণির মতই আচরণ করেন ফ্রিতে দুই একটা ধমক ও দেন।
প্রাইভেট পড়ানোর অধিকার শিক্ষকের আছে:
ক্লাশ রুমে সর্বোচ্চ চেষ্টা করার পড়ও যদি কেউ না বুঝে তাহলে তাকে অবসর সময়ে ফ্রিতে বুঝিয়ে দিন তাতেও না হলে শিক্ষার্থী নিজেই বুঝবে তার এভাবে হবে না অতিরিক্ত যত্ন দরকার তাই প্রাইভেট পড়তে হবে। তখন আপনার হাতে পায়ে ধরে আপনাকে রাজি করাবে তাকে প্রাইভেট পড়ানোর জন্য। এবার তাকে প্রাইভেট পড়ালে সম্মান ও অর্থ দুটিই পাবেন একসাথে।
শেষকথা:
নিজেকে পণ্য হিসেবে শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করবেন না কারণ ক্রয়কৃত পণ্য ইচ্ছেমত ব্যবহার করা যায়।
Tag: শিক্ষকদের মর্যাদা,শিক্ষকদের মর্যাদা,শিক্ষকদের মর্যাদা,শিক্ষকের মর্যাদা, শিক্ষকদের মর্যাদা,শিক্ষকের মর্যাদা,শিক্ষকদের মর্যাদা শিক্ষকদের মর্যাদা শিক্ষকদের মর্যাদা
Please Click On Just One Add To Help Us
মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।
এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।