স্থলচর মাছ!যে মাছ স্থলে বাঁচতে পারে!
আমরা সবাই জানি মাছ জলে বাস করে কিন্তু হঠাৎ করে যদি বলা হয় না মাছ স্থলে বাস করে তাহলে নিশ্চয়ই আমাকে পাগল ভাববেন। মনে মনে বলবেন নিশ্চই আমি গাজা খেয়ে এমন কথা বলছি। আমি কিন্তু সত্যি বলছি কিছু মাছ স্থলে ২-৪ দিন বেঁচে থাকতে পারে। আজ আসুন জেনে নেই এমন স্থলচর মাছের রহস্য জেনে নিই।
আপনি আরোও পড়তে পারেন……..
স্থলচর মাছ কী?
কতকগুলি মাছ আছে যাদের ফুলকা পানির উপরে স্থলে থাকলেও শুকোয় না। তাদের ফুলকার মধ্যে বিশেষ এক ধরণের কোষ থাকে যেগুলো সাদা জলে পূর্ণ।এই কোষগুলো পিচ্ছল তরল ক্ষরণ করে ফুলকাকে বাতাসে শুকিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে এবং বাতাস থেকে সহজে অক্সিজেন সংগ্রহ করে। এইজন্যে এই সকল মাছ দু’চারদিন স্থলেও বাস করতে পারে।এই ধরণের মাছকে বলে স্থলচর মাছ।
স্থলচর মাছ কিভাবে স্থলে বাঁচে?
স্থলচর মাছ সম্বন্ধে কিছু বলবার আগে এরা কিভাবে নিশ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ চালায় সে বিষয় কিছু বলবো । প্রাণী মাত্রেরই জীবনধারণের জন্য বাতাস দরকার । বাতাসের মধ্যে সবচেয়ে দরকারী জিনিষ হচ্ছে অক্সিজেন । অক্সিজেন ছাড়া কোন প্রাণীই বাঁচতে পারে না। আমরা শ্বাস গ্রহণের সময় সর্বদা বাতাস থেকে ফুসফুসে অক্সিজেন টেনে নিচ্ছি। জলেও মাছেরা সব জল থেকে অক্সিজেন টেনে নিচ্ছে।
আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের পথ নাসিকা।কিন্তু মাছের শ্বাসযন্ত্র (ফুসফুস) ও শ্বাস-প্রশ্বাসের পথ আমাদের মত নয় ৷ তার যে রকম শ্বাসযন্ত্র দরকার, প্রকৃতি তাকে সেই রকমই দিয়েছেন। তোমরা মাছের ফুলকা বা ঝিল্লি দেখেছ। মাছের কানকোর নীচে লাল রঙের ফুলকা থাকে। লোকে ফুলকার লাল রং দেখে মাছ তাজা কিনা তাই বিচার করে।
এই ফুলকা মাছের ফুসফুস। মাছ যখন প্রশ্বাস নেয়, তখন সে হা করে খানিকটা জল টেনে নেয়। সেই জল মুখের ভেতর দিয়ে তার ফুলকাতে প্রবেশ করে এবং সেখান থেকে আর বেরোতে পারে না। কারণ কানকোর ঢাকনাতে আটকে যায় । এই সকল ঝিল্লিস্তরের মধ্যে রক্তবাহী শিরা আছে।
ফুলকাগুলি জল থেকে অক্সিজেন বায়ু গ্রহণ করে এবং কার্বনডাইঅক্সাইড নামে বিষাক্ত বাষ্প ছেড়ে দেয় । এই সকল ব্যাপার এক মুহূর্তেই সম্পন্ন হয়। প্রশ্বাস গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গেই মাছ আবার জল বার করে দেয় এবং তৎক্ষণাৎ আবার জল নেয়। জল কানকো দিয়ে বেরিয়ে আসবার সময় ফুলকার গায়ের কার্বনডাইঅক্সাইড গ্যাসটাকে ধুইয়ে ফেলে।
কিন্তু ডাঙ্গায় এলেই মাছের ফুলকা শুকিয়ে যায়। তখন মাছ আর প্রশ্বাস নিতে পারে না। এইজন্য মাছকে ডাঙ্গায় তুললেই মরে যায়।
কিন্তু কতকগুলি মাছ আছে যাদের ফুলকা শুকোয় না। তাদের ফুলকার মধ্যে কোষ থাকে এবং তা সাদা জলে পূর্ণ। এইজন্যে এই সকল মাছ দু’চারদিন ডাঙ্গায়ও বাস করতে পারে।এই ধরণের মাছকে বলে স্থলচর মাছ।আজ এই শ্রেণীর মাছের কথাই এবার বলবো।
স্থলচর মাছ মাটির উপর হাটতে পারে
এই সকল মাছের মধ্যে অনেকের শরীরের চারদিকে অসংখ্য পায়ের মত অঙ্গ আছে; সেগুলোর সাহায্যে এরা ডাঙ্গায় চলাফেরা করতে পারে।এসব মাছের সামনের দিকে বুকের কাছে যে পাখনা থাকে তা বেশ শক্ত ও পায়ের মত রূপান্তরিত এই পাখনাকেই এরা পায়ের মত ব্যবহার করে মাটির উপর হাটে অনেকে আবার পোকামাকড় ভালবাসে বলে পোকামাকড়ের জন্যে গাছেও উঠে।
স্থলচর মাছের শিকার ধরার অদ্ভুত কৌশল
আমরা যেমন ছিপ দিয়ে মাছ ধরি, এরাও তেমনি ছিপ দিয়ে মাছ ধরে খায়।এদের ছিল ও ছিপ দিয়ে মাছ ধরার রীতি কিন্তু আমাদের ছিপ দিয়ে মাছ ধরার রীতি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
প্রকৃতি এদের শরীরে টোপ-শুদ্ধ একটা অদ্ভুত ছিপ জুড়ে দিয়েছে। তার দ্বারা এরা শিকার ধরে। এদের মাথার সামনে লম্বা শিঙের মত একটা জিনিষ রয়েছে এর সাহায্যেই এরা মাছ ধরে। ছিপধারী মাছেরা ভাল সাঁতার দিতে পারে না। সেজন্য ছোট ছোট মাছেরা এদের সমুখ দিয়ে নিরাপদে সাঁতরে পালিয়ে যায়।
একারণে এরা একটি কৌশল অবলম্বন করে। মাছগুলো কাদার মধ্যে শরীর ডুবিয়ে চারদিকের কাদা ঘুলিয়ে তার মধ্যে সম্পূর্ণ ভাবে লুকিয়ে থাকে। তারপর শিঙের মত যন্ত্রটা খাড়া করে রাখে এবং কখনো কখনো এটাকে নাড়ায় ।
এই জিনিষটি খুব উজ্জ্বল। চারিদিক থেকে এটাকে দেখতে পাওয়া যায় ।কিছুক্ষণের মধ্যেই দুটি একটি মাছ, কোন পোকা-মাকড় নড়চে ভেবে তার কাছে এসে পড়ে এবং জিনিষটাকে ঠোকরাতে আরম্ভ করে । তখন সে বেচারীর ভাগ্যে কি ঘটে জানো ? মুহূর্তের মধ্যে টোপটি অন্তর্হিত হয়, আর তার জায়গায় ভেসে ওঠে একটি প্রকাণ্ড হাঁ।
তারপরই সে সরাসরি মাছটির একেবারে পেটের মধ্যে চলে যায়। আবার তৎক্ষণাৎ সেখানে দেখা দেয় সেই আগের টোপ। এমনি করে বহুক্ষণ শিকার ধরা চলে।এই মাছগুলো বেজায় পেটুক ও লোভী।
সমুদ্রে যে কত রকম মাছ আছে এবং তারা যে কি অদ্ভুত,না দেখলে তা বুঝতে পারা যায় না !
Please Click On Just One Add To Help Us
মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।
এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।