কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায় কী?

সূচিপত্র-Table Of Contents
  1. কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায় কী?

কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায় কী?

মানব জীবনে বিভিন্ন রোগের সাথে সবার দর্শন লাভ হয়। অধিকাংশ রোগ চিকিৎসার মাধ্যমে দূরকরা সম্ভব। সাধারণ রোগের চিকিৎসায় যে ঔষধগুলো ব্যবহার করা হয় তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও সাধারণ হয়। খুব সহজে এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কাটিয়ে উঠা যায়।

কিন্তু ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূরকরা বেশ শক্ত। কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করা না গেলে ক্যান্সার ভালো হলেও দীর্ঘদিন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার প্রভাব দেহে বয়ে বেরাতে হয়। অনেক রোগী ক্যান্সারে না মরলেও কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য মারা যায়।

কেমোথেরাপির সাইড ইইফেক্টগুলো ভালোভাবে সারভাইভ করতে পারলে ক্যান্সার রোগি খুব সহজে স্বাভাবিক মানুষের মত জীবনযাপন করতে পারবে। তাই আসুন আজ জানা যাক কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায় কী?

কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূরকরার উপায় কী
কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূরকরার উপায় কী

আপনি আরো পরতে পারেন… কেমোথেরাপির সাইড ইফেক্ট কি? ……… কেমোথেরাপি দিলে চুল পরে কেন? ……….. কেমোথেরাপি কী? কেমোথেরাপির ইতিহাস,কেন ও কিভাবে দেয়া হয়?

কেমোথেরাপির পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কেন হয়?

ক্যান্সার কোষ খুবই দ্রুত বর্ধনশীল। খাদ্য সংগ্রহের জন্য এই কোষগুলো পার্শ্ববর্তী ভালো কোষের মধ্যে শিকর প্রবেশ করিয়ে দিয়ে খাদ্য সংগ্রহ করে। এরফলে ভালো কোষগুলো দুর্বল হয়ে যায়, খাদ্যের অভাবে একসময় মারা যায়। দ্রুত বর্ধনশীল ক্যান্সার কোষ কে মারার জন্য কেমোথেরাপির ঔষধ হিসেবে বিভিন্ন কেমোথেরাপিউটিক এজেন্ট প্রয়োগ করা হয়।

এই এজেন্টগুলো ক্যান্সার কোষের খাদ্য সরবরাহে বাধা দিয়ে থাকে। ক্যান্সার কোষের বিস্তার রোধ করতেও এজেন্টগুলো কাজ করে। কিন্তু এই ঔষধ ক্যান্সার কোষের পাশাপাশি ভালো কোষগুলোকেও মেরে ফেলে। ভালো কোষের মৃত্যুর কারণে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ আগের মত আর কাজ করতে পারে না। অঙ্গের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার কারণে দেহে বিভিন্ন জটিলতা দেখা যায় একে বলে কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা সাইড ইফেক্ট।

কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায় কী?

কেমোথেরাপি চলার সময় রোগীর দেহ বেশ দুর্বল হয়ে যায়। দুর্বলতার পাশাপাশি বিভিন্ন সাইড ইফেক্ট দেখা যায়। এগুলো দূর করার উপায় ধাপে ধাপে বর্ণনা করা যাক….

কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূরকরার উপায় কী

কেমোথেরাপির সাইড ইফেক্ট দূর করার উপায়।কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায়

Total Time: 45 days

  1. প্রচুর বিশ্রাম নিন

    বাড়িতে প্রচুর আলো বাতাস প্রবেশ করে এমন খোলামেলা ঘরে শুয়ে বসে বিশ্রাম নিন। ভারি কাজ করবেন না।

  2. জনসমাগম এরিয়ে চলুন

    মানুষের ভিড় হয় এমন জায়গা এরিয়ে চলুন। কেমোথেরাপি দিলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তাই ভিড়ের মধ্যে গেলে কোন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

  3. সংক্রমণ হতে বাঁচুন

    সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কোন অসুস্থ ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত করবেন না। কারণ থেরাপির ফলে আপনার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়েছে তাই সংক্রামক রোগ সহজে আপনাকে কাবু করে ফেলবে। আজ যক্ষার টিকা দিয়েছে এমন শিশুর কাছে যাবেন না। পাবরিক টয়লেট ব্যবহার করবেন না। নিজের প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতালে যাবেন না।এটি প্রথম বিবেচনার বিষয় কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায় হিসেবে

  4. জীবাণুমুক্ত থাকুন

    খাবার আগে ও পরে ভালো করে হাত ধুয়ে নিন। আলাদা টয়লেট ব্যবহার করা বেশি ভালো। বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন। হাতে গ্লোভস ব্যাবহার করা ভালো। বাইরে থেকে ঘরে ফিরলে জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত হয়ে নিন।

  5. প্রচুর তরল খাবার গ্রহণ করুন

    কেমোথেরাপির সময় দেহ ডিহাইড্রেট হয়ে যায় তাই দেহকে পানি শূন্যতার হাত থেকে বাঁচাতে প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে। স্যুপ,ফরের জ্যুস,পাতলা ভাতের মাড়, পাতলা করে রান্নাকরা সাবু বা সুজি খেতে পারেন।

  6. ঘনঘন খাবার খেতে হবে

    একবারে বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে বেশিবার খাবার খান। থেরাপির কারণে পাকস্থলীর হজম করার ক্ষমতা কমে যায় তাই একবারে বেশি খেলে হজমে সমস্যা হবে। যে খাবারের গন্ধ সহ্য হয়না তা খাবেন না এতে বমি হতে পারে।

  7. দেহের শক্তি বৃদ্ধি করুন

    থোরাপি দেয়ার পর কেমোথেরাপিউটিক এজেন্টগুলো ভালো কোষকে আক্রমণ করে তাই শরীরের শক্তি কমে যায়। দেহের শক্তি বৃদ্ধি করতে পারলে মনের জোড় বাড়ে। শক্তি বৃদ্ধির জন্য ক্যালরিযুক্ত সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ করুন।

  8. স্বাভাবিক রুটিন মেনে চলুন

    প্রতিদিনের রুটিন মত যেসব কাজ করেন তা করতে থাকুন। এতে আপনি রোগের কথা ও শারীরিক সমস্যার কথা ভুলে যাবেন। নিজেকে স্বাভাবিক ও সুস্থ মানুষ বলেই মনে হবে। শুধু বসে থাকলে নানান দুশ্চিন্তা মনে বাসা বাধবে আপনি আরো অসুস্থ হয়ে যাবেন।

  9. চিন্তামুক্ত থাকুন

    ক্যান্সার হয়েছে বলে আপনি মারা যাবেন এই চিন্তা করবেন না। কারণ ক্যান্সার মানেই মৃত্যু নয়। নিজের মনে সাহস রাখুন যে আপনি বেঁচে যাবেন এই যাত্রায়। পরিবারের সদস্যদের কথা চিন্তা করুন আর মনকে বুঝান যে তাদের জন্য আপনাকে বেঁচে থাকতে হবে। এতে আপনার বেঁচে থাকার প্রচণ্ড ইচ্ছা তৈরি হবে। এই ইচ্ছাই আপনাকে সুস্থ করার আসল ঔষধ। এটি সবচেয়ে বড় কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায়।

  10. পছন্দের কাজ করুন

    যে কাজ করতে আপনার ভালো লাগে তা আনন্দের সাথে করুন। যেমন- গান শোনা,সিনেমা দেখা,বই পড়া। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিন। প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা ডায়ারিতে লিখে রাখতে পারেন।

  11. বমিভাব দূর করুন

    কেমোথেরাপির একটি কমন সাইড ইফেক্ট হলো বমিভাব। বমিভাব দূর করার জন্য অপছন্দের খাবার খাবেন না। অল্প করে খাবার খান। যে খাবার আপনার পছন্দ তাই খান। আস্তে আস্তে ভালো করে চিবিয়ে খাবার খাবেন। দূর্গন্ধ এরিয়ে চলুন।
    বমিভাব কমানোর জন্য এই খাবারগুলো খেতে পারেন-Plain pasta, rice, noodles and mashed potatoes,Toast, dry Saltine-style crackers, natural potato chips or pretzels,Canned fruit, applesauce and Jell-O,Custard and pudding,Sherbet, popsicles and frozen fruit bars ইত্যাদি।(কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায়)

  12. মুখের ঘাঁ সারানোর চেষ্টা করুন

    থেরাপির প্রভাবে মুখের ঘাঁ হওয়া একটি কমন সমস্যা তাই এতে ঘাবড়ে যাবেন না। ঘাঁ যাতে বেশি না হয় তার চেষ্টা করুন। ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ঔষধ সেবন করুন। নিম পাতার গরম পানিতে দিনে ২ বার গড়গড়া কুলি করতে পারেন।আদা ও তুলশি দিয়ে বানানো চা পান করতে পারেন। হালকা লবণ পানিতে কুলকুচি করতে পারেন। তীব্র ঝাল ও টক খাবার এরিয়ে চলুন কারণ এই খাবারগুলো মুখের জন্য যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে।

  13. চুল পরা নিয়ে চিন্তা করবেন না

    কেমোথেরাপি দিলে প্রায় সবার চুল পরে।এই চুল থেরাপি শেষ হওয়ার ৩ মাসের মধ্যে আবার গজায়। তাই চুলের শোকে মন খারাপ করবেন না।

  14. ধূমপান ও অ্যালকোহল পান করবেন না

    কেমোথেরাপির সময় ধূমপান করা মানে নিজেকে আবার ক্যান্সারের কাছে বিরিয়ে দেয়া তাই ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। মদ্যপান করলে মদের সাথে কেমোথেরাপিউটিক এজেন্ট বিক্রিয়া করে জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে তাই এটি করবেন না।

  15. সঠিক খাবার বেছে নিন

    উচ্চমাত্রার চর্বি,লবণ,চিনি যুক্ত খাবার গ্রহণ করবেন না। এসব খাবারের কারণে ক্যান্সার কোষ কেমোথেরাপির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টি করতে পারে। প্রচুর ফল খেতে পারেন। পাতে রান্না করা শাকসব্জি রাখুন। চর্বিযুক্ত মাছ খেতে পারেন কিন্তু লাল মাংস খাবেন না।মুরগির সাদা মাংস খাওয়া ভালো। মাঝেমাঝে টকদই খেতে পারেন। আপেল, ডালিম,আঙ্গুর,বেরি জাতীয় ফল বেশি খান। সাথে দেশি ফল খেতে ভুলবেন না।অল্প সেদ্ধ ডিম কোনভাবেই খাবেন না। অপাস্তুরিত দুধ খাবেন না।কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায়।

Estimated Cost: 4 USD

Supply:

  • Medicine

Tools:

  • Food

Materials: Fluid

পরামর্শ দিয়েছেন-
ড. এস,এম,ডেভিডসন
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ
কলরাডো,আমেরিকা

কেমোথেরাপির পর মুখের ঘাঁ সারানোর উপায় কি?

ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ঔষধ সেবন করুন। নিম পাতার গরম পানিতে দিনে ২ বার গড়গড়া কুলি করতে পারেন। আদা ও তুলশি দিয়ে বানানো চা পান করতে পারেন। হালকা লবণ পানিতে কুলকুচি করতে পারেন।

কেমোথেরাপির সময় বমিভাব দূর করার উপায় কী?

যে খাবার আপনার পছন্দ তাই খান। আস্তে আস্তে ভালো করে চিবিয়ে খাবার খাবেন। দূর্গন্ধ এরিয়ে চলুন।

কেমোথেরাপির পর দুর্বলতা দূর করার উপায় কি?

কেমোথেরাপি দেয়ার পর একটি সাধারণ সাইড ইফেক্ট হলো প্রচণ্ড দুর্বলতা। এটি সবার ক্ষেত্রেই হয়। এতে ঘাবড়ে যাবেন না। ঘনঘন অল্প করে তরল খাবার যেমন- জ্যুস,স্যুপ,পাতলা করে রান্না করা সুজি,সাবু,আটার হালুয়া, ভাতের মাড় ইত্যাদি খেতে হবে। পচুর বিশ্রাম নিতে হবে। সময়মত ঘুমাতে হবে। ২৪ ঘন্টায় অন্তত দশ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। 

কেমোথেরাপির সাইড ইফেক্ট দূর করার উপায় কী?

কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূরকরার উপায় এর মত একই আলোচনা।

how to survive chemotherapy side effects in bangla

Tips for Managing Chemotherapy Side Effects in Bangla, Chemotherapy Tips: 10 Survival Truths in bangla, chemotherapy side effect dur korar upay, info source : webmd cencer.net

Tag: কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায়, কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায়, কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায়, কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায়, কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায়, কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায়

Please click on Just one Add to Help Us

মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।

এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।