জরায়ুমুখ ক্যান্সার লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়!

সূচিপত্র-Table Of Contents
  1. জরায়ুমুখ ক্যান্সার লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়!

জরায়ুমুখ ক্যান্সার লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়!

বর্তমানে ক্যান্সার শব্দটি খুব পরিচিত।এই শব্দ শোনে নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ক্যান্সার অনেক প্রকারের হয় এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি ক্যান্সার হলো জরায়ুমুখ ক্যান্সার যা মেয়েদের জন্য একটি হুমকি হিসেবে পরিচিত। সাবধানতা অবলম্বন করেই আমরা এই মারণ রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে হবে।

আপনি আরো পড়তে পারেন….পিরিয়ড বা মাসিক কী?মিনস্ কী?ঋতুস্রাব কেন হয়? …. ক্যান্সার প্রতিরোধকারী খাবার|২০ খাবার ক্যান্সার প্রতিরোধ করে#

জরায়ুমুখ ক্যান্সার লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়!

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের কারণ

হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) প্রজননতন্ত্র সংক্রমণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এক শতাধিক প্রকারের এইচপিভি ভাইরাস রয়েছে যাদের মধ্যে কমপক্ষে ১৩টি ক্যান্সার সৃষ্টিকারী এবং এরা উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন এইচপিভি ভাইরাস হিসেবে পরিচিত।

যৌন ক্রিয়াকলাপে সক্রিয় মহিলা ও পুরুষ এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন এবং তারা বারবার সংক্রামিত হতে পারেন।

যৌন ক্রিয়াকলাপে সক্রিয় হয়ে ওঠার পরপরই একজন মহিলা বা পুরুষের মধ্যে এই সংক্রমণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।

বিভিন্ন ধরনের এইচপিভি আছে এবং এদের সবগুলোই ক্ষতিকর নয়। কোনো চিকিৎসা ছাড়াই কয়েক মাসের মধ্যে এই সংক্রমণ দূর হয়ে যায় এবং দু’বছর সময়ের মধ্যে প্রায় ৯০% সংক্রমণ দূর হয়ে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়ে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হতে পারে।

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের কারণ

কোন ভাইরাসের কারণে জরায়ুমুখ ক্যান্সার হয়?

হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি-সৃষ্ট রোগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয় জরায়ুমুখের ক্যান্সার। জরায়ুমুখের প্রায় সব ক্যান্সার উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন এইচপিভি সংক্রমণের ফলে হয়ে থাকে।

দুই ধরনের এইচপিভি (১৬ এবং ১৮) ৭০% জরায়ুমুখের ক্যান্সার এবং ক্যান্সারপূর্ব জরায়ুমুখের ক্ষতের জন্য দায়ী।

জরায়ুমুখের ক্যান্সারের জীবাণুর আণবিক মডেল

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের জীবাণু ছবি
জরায়ুমুখ ক্যান্সারের জীবাণুর ছবি

জরায়ুমুখ ক্যান্সার কিভাবে ছড়ায়?

যৌন ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে এই সংক্রমণ ঘটলেও শুধু যে যৌনমিলনের (penetrative sex) মাধ্যমেই সংক্রমণ ঘটবে এমন কোনো কথা নেই, ত্বকের সাথে ত্বকের সংস্পর্শের মাধ্যমেও এই সংক্রমণ ঘটতে দেখা যায়।

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের লক্ষণ ও উপসর্গ

বেশিরভাগ এইচপিভি সংক্রমণ এবং জরায়ুমুখের ক্ষত বিনা চিকিৎসায় সেরে গেলেও সব মহিলার ক্ষেত্রেই সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়ার এবং ক্যান্সারপূর্ব ক্ষতের ক্যান্সারে রূপ নেওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।

নির্দিষ্ট কিছু এইচপিভি (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ১৬ এবং ১৮) ক্যান্সারপূর্ব ক্ষতের সৃষ্টি করতে পারে। চিকিৎসা করা না হলে এসব ক্ষত একসময় ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। তবে, এতে সাধারণত ১৫ থেকে ২০ বছর সময় লাগতে পারে।

ক্যান্সার একটু অগ্রবর্তী পর্যায়ে পৌঁছালেই কেবল এর উপসর্গগুলো দেখা দিতে শুরু করে।

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের লক্ষণ

এসব উপসর্গের মধ্যে রয়েছে:

  • অনিয়মিত মাসিক
  • দুই মাসিকের মধ্যবর্তী সময়ে অথবা যৌনমিলনের পর যোনিপথে অস্বাভাবিক রক্তপাত।
  • মাসিক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও রক্তপ্রবাহ
  • যৌনমিলনের সময় ব্যথা ও স্রাব
  • পিঠ, পা অথবা কোমরে ব্যথা।
  • অস্বাভাবিক ক্লান্তি।
  • ওজন কমে যাওয়া।
  • ক্ষুধামান্দ্য হওয়া বা ক্ষুধা কমে যাওয়া।
  • যোনিপথে অস্বস্তি বা বাদামি দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব
  • একটি পা ফুলে যাওয়া

জরায়ুমুখের ক্যান্সারের আরো অগ্রবর্তী পর্যায়ে আরো জটিল উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

যে কাজে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের ঝুঁকি বারে

যেসব কারণে এইচপিভি-র দীর্ঘকালীন স্থায়িত্ব ও জরায়ুমুখের ক্যান্সার দেখা দিতে পারে।

  • অতি অল্পবয়সে প্রথম যৌনমিলন
  • একাধিক যৌনসঙ্গী
  • তামাকের ব্যবহার
  • রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা (যেমন
  • এইচআইভি-র রোগীদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে বলে তাদের এইচপিভি সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে)

জরায়ুমুখ ক্যান্সার সমস্যার ব্যাপকতা

বাংলাদেশে মহিলা ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যান্সারের অবস্থান দ্বিতীয়। প্রতিবছর প্রায় ১২,০০০ জন মহিলা এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে প্রায় ৬,৫০০ জন মহিলা জরায়ুমুখের ক্যান্সারের জন্য মৃত্যুবরণ করেন ।

উন্নত দেশসমূহে স্ক্রিনিং কার্যক্রম রয়েছে যার মাধ্যমে মহিলারা নিয়মিত পরীক্ষা করাতে পারেন এবং ক্যান্সারপূর্ব ক্ষত শনাক্ত করে তার চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন। এসব দেশে দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমে ৮০% জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।

উন্নয়নশীল দেশসমূহে কার্যকর পরীক্ষার সুযোগ অত্যন্ত সীমিত যার ফলে এ রোগটি গুরুতর পর্যায়ে না-পৌঁছানো এবং উপসর্গ দেখা না দেওয়া পর্যন্ত রোগ সনাক্তকরণ হয়ে ওঠে না।

কার্যকর স্ক্রিনিং কার্যক্রম এবং উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে জরায়ুমুখের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুহার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

জরায়ু ক্যান্সারের টিকার নাম কি?

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা

জরায়ু ক্যান্সারের টিকার নাম গার্ডাসিল ও সিভারিক্স। বর্তমানে এই দু’টি টিকা পাওয়া যায় যা এইচপিভি ১৬ এবং ১৮ ভাইরাস দু’টিকে প্রতিরোধ করে। এই এইচপিভি ১৬ এবং ১৮ শতকরা ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে জরায়ুমুখের ক্যান্সারের জন্য দায়ী। উল্লেখ্য, দু’টি টিকার একটি যোনিপথে ও পায়ুপথে আঁচিল সৃষ্টিকারী এইচপিভি ৬ এবং ১১ ও প্রতিরোধ করে থাকে।

জরায়ু মুখ ক্যান্সারের টিকার কার্যকরীতা

বিভিন্ন চিকিৎসা-সংক্রান্ত গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, এই দু’টি টিকা নিরাপদ এবং এইচপিভি ১৬ এবং ১৮ দ্বারা সংঘটিত সংক্রমণ প্রতিরোধে বেশ কার্যকর।

এইচপিভি দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আগে এই টিকা গ্রহণ করা হলে বেশি কার্যকারিতা পাওয়া যায়।

কাজেই, প্রথমবারের মতো যৌন ক্রিয়াকলাপ শুরু করার আগে এই টিকা নেওয়া প্রয়োজন।

উল্লেখ্য যে, এই টিকা এইচপিভি ১৬ এবং ১৮ সংক্রমণ প্রতিরোধ করে, কিন্তু ক্যান্সারের বা এইচপিভি-সংশ্লিষ্ট রোগের চিকিৎসা করতে পারে না।

এইচপিভি টিকাদান জরায়ুমুখের ক্যান্সার স্ক্রিনিং পরীক্ষার বিকল্প ব্যবস্থা নয়। যেসব দেশে এইচপিভি-র টিকা রয়েছে, সেখানে স্ক্রিনিং পরীক্ষা কার্যক্রমও গড়ে তোলা এবং জোরদার করা বাঞ্ছনীয়।

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা কখন দেয়া ঠিক নয়?

  • HPV টিকার ১ম ডোজ দেয়ার পর কোনো ব্যক্তির গুরুতর (প্রাণঘাতী) অ্যালার্জি জনিত প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকলে, তার ২য় ডোজ টিকা নেওয়া উচিত নয়।
  • HPV টিকা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সুপারিশ করা হয় না।
  • যদি আপনি কিছুটা বা গুরুতরভাবে অসুস্থ হন, তাহলে আপনি সুস্থ হয়ে ওঠা পর্যন্ত আপনার অপেক্ষা করা উচিত।

কত বছর বয়সে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা দেয়া হয়?

যে টিকা দু’টি বাংলাদেশে পাওয়া যায় যা জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে ৯ থেকে ২৬ বছর-বয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়।

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকার দাম কত?

টিকার নামযে ক্যান্সার প্রতিরোধ করেদাম টাকায়
সারভারিক্স (Cervarix Vaccine)HPV – 16 ও 18 – এর প্রতিরোধক টিকা৩৫০০
গার্ডাসিল (Gardasil Vaccine)HPV – 6, 11, 16 ও 18 – এর প্রতিরোধক টিকা৫৫০০

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা কোথায় পাওয়া যায়?

ব্যক্তিগতভাবে কিনলে এই টিকা ফার্মেসিতে পাওয়া যায়। সরকারি জেলা সদর হাসপাতাল, সরকারি মেডিকেল কলেজ,সন্ধানি,বেসরকারি এনজিও ইত্যাদি স্থান থেকে বিনামূল্যে টিকা পাওয়া যায়।

জরায়ু মুখের ক্যান্সার কি ভালো হয়?

জরায়ু মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত মোট রোগীর ৫০% মারা যায়। তবে আশার কথা এই যে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা পেলে জরায়ুমুখের ক্যানসার সম্পূর্ণ রূপে ভালো হয়ে যায়। টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে এমন একমাত্র ক্যান্সার হলো জরায়ুমুখ ক্যান্সার।

জরায়ুমুখের ক্যান্সার পরীক্ষা

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের পরীক্ষা

যেসব মহিলার মধ্যে কোনো উপসর্গ দেখা যায় না এবং যারা সুস্থ বোধ করেন, জরায়ুমুখের ক্যান্সারের স্ক্রিনিং পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের ক্যান্সারপূর্ব অবস্থা এবং ক্যান্সার নির্ণয় করা যায়।

ক্যান্সারপূর্ব ক্ষত শনাক্ত করা হলে খুব সহজেই তার চিকিৎসা করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।

স্ক্রিনিং পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ের ক্যান্সারও শনাক্ত করা যায় এবং
চিকিৎসার মাধ্যমে সেরে ওঠার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।

ক্যান্সারপূর্ব ক্ষতের সৃষ্টি হতে অনেক বছর লাগে বলে ৩০ থেকে ৪৯ বছর বয়সের সবমহিলাদের জন্য জীবনে অন্তত একবার স্ক্রিনিং পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। সম্ভব হলে আরো ঘনঘন এই পরীক্ষা করানো দরকার।

জরায়ু মুখ ক্যান্সারের স্ক্রিনিং পরীক্ষা

বর্তমানে তিন ধরনের স্ক্রিনিং পরীক্ষা করা হয়ে থাকে:

  • ১।প্যাপ টেস্ট এবং লিকুইড-বেইজড সাইটোলোজি
  • ২।অ্যাসিটিক অ্যাসিডের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ (ভায়া পরীক্ষা)
  • ৩।উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন এইচপিভি-র ধরনসমূহের জন্য এইচপিভি পরীক্ষা

প্যাপ টেস্ট কী?

পেপ টেস্ট এর মাধ্যমে জরায়ু মুখের কোষ নিয়ে পরীক্ষা করা হয়।কোষগুলোকে আবাদ মাধ্যমে সংখ্যাবৃদ্ধি করানো হয় এবং দেখা হয় যে এরা ধীরেধীরে ক্যান্সার কোষে রূপান্তরিত হয় কি না।

প্যাপ টেস্ট কিভাবে করা হয়?

প্যাপ স্মেয়ার টেস্ট

প্যাপ টেস্ট এর সময় চামচের মত একটি যন্ত্র যোনি পথে প্রবেশ করিয়ে ব্রাশ এবং কাঠির সাহায্যে জরায়ু মুখ থেকে কোষ সংগ্রহ করা হয়। এরপর কোষগুলোকে পরীক্ষাগারে নিয়ে পরীক্ষা করা হয়।

ভায়া টেস্ট কেন করা হয়?

বাংলাদেশ সরকার ভায়া টেস্ট এর মাধ্যমে জরায়ুমুখের ক্যান্সার শনাক্তকরণের জন্য স্ক্রিনিং কার্যক্রম চালু করেছে।

ভায়া পরীক্ষা অপেক্ষাকৃত সহজ একটি পরীক্ষা। এর জন্য স্বল্প অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন হয় এবং পরীক্ষার সাথে সাথে রিপোর্ট পাওয়া যায়।

ভায়া টেস্ট কিভাবে করা হয়?

তরল অ্যাসিটিক অ্যাসিড বা ভিনেগার দিয়ে জরায়ু মুখ ভিজিয়ে ডাক্তার চাক্ষুষ করেন জরায়ুমুখের রং পরিবর্তন হয় কি না। জরায়ুমুখের রং পরিবর্তন না হলে ভায়া টেস্ট পজিটিভ হিসেবে চিহ্নিত হয়। তবে ভায়া পজিটিভ হলেই যে ক্যানসার হয়েছে, ভাবা ঠিক নয়।

কোথায় ভায়া টেস্ট করা হয়?

ভায়া টেস্ট বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, কিছু উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ারসমূহে পাওয়া যাচ্ছে।

এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীরা ৩০ ও তদুর্ধ্ব বয়সের মহিলাদের পরীক্ষা করছেন।

জরায়ুমুখের ক্যান্সারের চিকিৎসা

ভায়া-পজিটিভ মহিলাদেরকে বিএসএমএমইউ এবং নানাবিধ সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হচ্ছে।

হাসপাতালের বহির্বিভাগে লোকাল অ্যানেস্থেশিয়ার মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে, যার মাধ্যমে ৮০-৯৬ শতাংশ রোগীর ক্যান্সারপূর্ব ক্ষত ভালো হয়ে যায়। চিকিৎসাপ্রাপ্ত প্রত্যেক মহিলাকে পরবর্তী তিন বছর পর্যন্ত প্রতিবছর একবার পর্যবেক্ষণ করা হয়ে থাকে।

অস্বাভাবিকতা পুরোপুরি দূর হয়েছে কি না তা দেখার জন্য এই পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা অত্যন্ত কার্যকর।

জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়

যৌন ক্রিয়াকলাপে অংশগ্রহণের আগে ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সের মেয়েদেরকে এইচপিভি টিকা দেওয়া প্রয়োজন। ছেলে ও মেয়েদের জন্য অন্যান্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে:

  • তামাকের ব্যবহার সম্পর্কে সতর্কীকরণ যা অনেকসময় বয়ঃসন্ধির সময় শুরু হয় এবং যা জরায়ুমুখ ও অন্যান্য ধরনের ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য ঝুঁকি হিসেবে কাজ করে।
  • দেরিতে যৌন কার্যকলাপ শুরু করাসহ নিরাপদ যৌন কার্যকলাপ-সংক্রান্ত শিক্ষা।
  • যৌনমিলনের ক্ষেত্রে কনডমের ব্যবহার-সংক্রান্ত জ্ঞানের উন্নয়ন।
  • পুরুষদের খতনা বা মুসলমানি

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের চিকিৎসা

যৌনকার্যে সক্রিয় মহিলাদের জরায়ুমুখে অস্বাভাবিক কোষ বা ক্যান্সারপূর্ব ক্ষত আছে কি না তা শনাক্ত করার জন্য স্ক্রিনিং পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

অস্বাভাবিক কোষ বা ক্ষত দূর করার জন্য ক্রায়োথেরাপির সাহায্য নিতে হবে। ক্রায়ো থেরাপি অস্বাভাবিক টিস্যুর বর্ধন রোধ করে এগুলোকে ধ্বংস করে দেয়।

জরায়ুমুখের ক্যান্সার দেখা দিলে শল্যচিকিৎসা, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

লেখক

ডাঃ আনাদিল আলম, আইসিডিডিআর,বি

Please Click on Just one Add to help us

মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।

এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা।