বৃষ্টির পানির উপকারিতা কী?বৃষ্টির পানির অপকারিতা!

বৃষ্টির পানির উপকারিতা কী?বৃষ্টির পানির অপকারিতা!

বৃষ্টিতে ভেজার পর যখন জ্বর আসে তখন সবাই বলে ধুর বাবা! কেন যে বৃষ্টিতে ভিজতে গেলাম! বৃষ্টির পানি আসলেই ভালো না, শুধু শুধু আমার জ্বর হলো। অনেকে আবার অসুখ হওয়ার ভয়ে বৃষ্টি পানি ছুয়ে পর্যন্ত দেখেন না। কিন্তু আপনি বোধহয় জানেন না বৃষ্টির পানির উপকারিতা সম্পর্কে। বৃষ্টির পানির উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি সবসময় বৃষ্টির অপেক্ষা করতেন বৃষ্টিতে ভেজার জন্য। আসুন আজ বৃষ্টিতে আগে ভিজি তারপর জেনে নেই বৃষ্টির পানির উপকারিতা।

বৃষ্টির পানির উপকারিতা কী?
বৃষ্টির পানির উপকারিতা কী?

আপনি আরো পড়তে পারেন……বৃষ্টির দিনে ঘুমাতে ইচ্ছা করে কেন? ……. বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর হয় কেন?

বৃষ্টির পানির উপকারিতা

বৃষ্টির পানির বহুবিদ উপকারিতা রয়েছে। নিচে বৃষ্টির পানির প্রধান কিছু উপকারিতা আলোচনা করছি।

ঘামাচি দূর করে বৃষ্টির পানি

বৃষ্টির পানি ঘামাচি দূর করে

গরমে হওয়া ঘামাচি কমাতে বহু আগে থেকেই বৃষ্টির পানি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বৃষ্টির পানি ত্বকের ঘামাচির উপর পরলে ঘামাচি মরে যায়। বৃষ্টির পানির শীতলতা ঘামাচি কমাতে সাহায্য করে।

বৃষ্টির পানি ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে

ভারী বর্ষণের পর বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। বাতাস আর্দ্র হলে ত্বক আর্দ্র থাকে ফলে ত্বক হয় আরও উজ্জ্বল ও নমনীয়। ত্বকের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরে পেতে বৃষ্টি দারুণ কাজ করে।বৃষ্টির পানিতে ১ চামচ অ্যালোভেরা জেল, ১ চামচ গোলাপজল ও আধা চামচ মধু মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহারে উজ্জ্বলতা বাড়ে।

বৃষ্টির পানি চুলের জন্য উপকারি

বৃষ্টির পানিতে প্রাকৃতিকভাবে অ্যালকালাইন থাকে এটি চুলের প্রাকৃতিক ক্লিনার।এটি চুলের গোড়া থেকে সব ময়লা ও খুশকি দূর করে।তবে বৃষ্টির জলে ভেজার পর অবশ্যই টিউবওয়েল বা ট্যাপের পানিতে চুল ধুয়ে নেবেন।আবার বৃষ্টি শুরু হওয়ার সাথে সাথে চুল ভেজাবেন না এসময় বৃষ্টির জল এসিডিক হতে পারে যা চুলের জন্য ক্ষতিকর। বৃষ্টি শুরু হলে অন্তঃত ৫-১০ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর চুল বৃষ্টির পানিতে ভেজান।

বৃষ্টির পানি ভিটামিন বি-১২ সমৃদ্ধ

বৃষ্টির পানি ভিটামিন বি-১২ সমৃদ্ধ
বৃষ্টির পানি ভিটামিন বি-১২ সমৃদ্ধ

বৃষ্টির পানির মধ্যে কিছু অনুজীব থাকে যারা তাদের বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভিটামিন বি-১২ তৈরি করে।আমরা তো জানিই পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের অণুজীব ঘুরেফিরে বেড়ায়। অণুজীবদের মধ্যে কিছু ব্যাকটেরিয়া বায়ো সিনথেসিসের সময় বাই প্রোডাক্ট হিসেবে ভিটামিন B১২B১২ তৈরি করে থাকে। এই ধরনের কয়েকটি ব্যাকটেরিয়ার নাম- Pseudomonas denitrificans, Bacillus megaterium, Propionibacterium freudenreichii, Streptomyces olivaceus, Prevotella copri ইত্যাদি।
উপরোক্ত ব্যাকটেরিয়া যদি বৃষ্টির পানিতে উপস্থিত থাকে তবে ভিটামিন B১২B১২ পেয়ে যাবো, আর না থাকলে পুরোই ভিটামিনহীন বৃষ্টির পানি।

কান ভালো করে বৃষ্টির পানি

বৃষ্টির পানি কানের অনেক ধরণের সমস্যা দূর করে। কান ব্যথা বা ইনফেকশন সারানোর ক্ষেত্রে বৃষ্টির পানি বেশ উপকারী।

ত্বকের চুলকানি কমায়

ত্বকের বিভিন্ন ফুসকুড়ি ও চুলকানি দূর করে বৃষ্টির পানি। বৃষ্টির পানিতে ভিজলে বা নিয়মিত গোসল করলে ত্বকের খসখসে ভাব চলে যায়। ব্যবহারযোগ্য বৃষ্টির পানি ত্বকের র‍্যাশ ও জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। বৃষ্টির পানি কোষে জমে থাকা খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে দূর করে দেয়। এতে ত্বকের জ্বালা কমে।

দেহের ইম্যুনিটি বাড়ায়

বৃষ্টির জল বিষাক্ত রাসায়নিক মুক্ত। এতে উপস্থিত ভিটামিন বি-১২ এন্টিঅক্সিডেন্ট সৃষ্টি করে এটি দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বৃষ্টির পানিতে ভিজলে বৃষ্টির ফোটা ত্বকে দ্রুত মৃদু আঘাত সৃষ্টি করে ফলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।

পেট কে সুস্থ রাখে বৃষ্টির জল

পেটের নানারকম সমস্যায় এই জল বেশ কার্যকর। পেটে আলসার থাকলে বর্ষার জল ওষুধের ভূমিকা পালন করে। বর্ষার জলে অ্যালকালাইন থাকে এটি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা প্রাকৃতিকভাবে কমায় এবং হজমশক্তি বাড়ায়।প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ২ থেকে ৩ চামচ বৃষ্টির পানি খাওয়া ভালো।

পরিষ্কারক হিসেবে বৃষ্টির পানি

বৃষ্টির জল দিয়ে জিনিসপত্র পরিষ্কার করলে অনেক বেশি উজ্জ্বলতা বারে এবং নতুনের মত চমক দেয়।
কাপড়কাচার ক্ষেত্রে বৃষ্টির পানির সবচেয়ে ভালো উপকারিতা আছে। এতে কোন ধরনের অতিরিক্ত লবণ না থাকায় অর্প সাবানে খুব ভালো ফেনা হয় এতে সাবানের অপচয় কম হয়।

বৃষ্টির পানিতে কি থাকে?

বৃষ্টির পানির উপাদান নিচের টেবিলে দেখুন

বৃষ্টির পানির উপাদান

Rainwater is a mixed electrolyte that contains varying amounts of major and minor ions. Sodium, potassium, magnesium, calcium, chloride, bicarbonate, and sulfate ions are major constituents, to- gether with ammonia, nitrate, nitrite, nitrogen, and other nitroge- nous compounds

বৃষ্টির পানির অপকারিতা

বৃষ্টির পানির অপকারিতা
বৃষ্টির পানির অপকারিতা

বৃষ্টির পানির নানা উপকারিতা থাকলেও এর কিছু অপকারিতাও আছে, যেমন-

চুলের ক্ষতি করে বৃষ্টির পানি

বৃষ্টি শুরুর পর পরই সেই পানিতে ভিজলে এটি চুলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ বৃষ্টি শুরু হলে বাতাসের বিভিন্ন অক্সাইড পানিতে মিশে এসিড বৃষ্টি সৃষ্টি করে এবং প্রচুর ধূলিকণা পানিতে মিশে বৃষ্টির পানি নোংরা করে ফেলে। এমন বৃষ্টির পানি মাথার চামড়ায় চুলকানি সহ খুশকির সৃষ্টি করে।

রোগ সৃষ্টি করতে পারে বৃষ্টির পানি

বৃষ্টি মাটিতে পড়ার আগে বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে আসে, তাই এটি বাতাসের যে কোনো দূষক ধারণ করতে পারে।সব স্থানে বর্ষণ শুরুর দিকে বৃষ্টির পানি যথেষ্ট দূষিত থাকে।বায়ুমণ্ডলে ধুলোবালি এবং অনেক ক্ষতিকর পদার্থ থাকে যেগুলো বৃষ্টির ফোঁটার সঙ্গে সহজেই মিশে যেতে পারে।এই দূষিত পানি খেয়ে মারাত্মক রোগ সৃষ্টি হতে পারে।বৃষ্টি শুরুর পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করা ভালো।

যে স্থানে বায়ুদূষণ বেশি সেখানকার বৃষ্টির পানি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।রাসায়নিক কারখানা রয়েছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে এমন এলাকায় বৃষ্টিরপানি(Rain water) পান না করাটাই ভালো। একইভাবে গাছপালা বা বাড়িঘর ছোঁয়া বৃষ্টিরপানিও পান করা উচিত নয়।

সতর্কতা:
বৃষ্টির পানির কোন উপকারিতাই বৈজ্ঞানিক মহলে অকাট্য পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়নি। উপরিউক্ত উপকারিতাগুলো অনুমান বা ছদ্মপরীক্ষার মাধ্যমে নিরূপন করা হয়েছে। তাই দয়াকরে এই বর্ণনা কখনই বৈজ্ঞানিক যুক্তি তর্কে ব্যবহার করবেন না। অনেকে অখ্যাত জার্নালে বা পত্রিকায় বর্ণনা করা হয় বৃষ্টির পানি ক্যান্সার নিরাময় করে, এটা ডাহা মিথ্যা কথা। নিজেদের প্রচারের জন্য অনেক মিথ্যা তথ্য ছড়ায়। অনেক ধর্ম ব্যবসায়ী বক্তা এসব ধর্ম প্রচারে ব্যবহার করে। প্রমাণ ছাড়া এসব তথ্য কখনই গ্রহণ করবেন না।

Info source: helthline

tag: বৃষ্টির পানির উপকারিতা বৃষ্টির পানির উপকারিতা বৃষ্টির পানির উপকারিতা বৃষ্টির পানির উপকারিতা বৃষ্টির পানির উপকারিতা বৃষ্টির পানির উপকারিতা

Please Click On Just One Add To Help Us


মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।


এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।