মিসওয়াক কী?মেসওয়াকের নিয়ম! মিসওয়াকের উপকারিতা!

Table Of Contents
  1. মিসওয়াক কী?মেসওয়াকের নিয়ম! মিসওয়াকের উপকারিতা!

মিসওয়াক কী?মেসওয়াকের নিয়ম! মিসওয়াকের উপকারিতা!


মিসওয়াক কী?


মিসওয়াক হলো নবীগণের সুন্নাত সমূহের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। ইহা মুসলমানদের দাঁত মাজাঁর একটি সুন্দর উপকরণ। যা একটি গাছের ডাল, কাঠ বা শিকড়’ও হতে পারে। এটি মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি সুন্নাহ পদ্ধতিও বটে। (মিসওয়াক) শব্দটি السواك(সিওয়াক) শব্দমূল থেকে এসেছে। যার আভিধানিক অর্থ হলো ঘষা, মাজাঁ বা মর্দন করা। ইহার বাংলা পাশাপাশি সমার্থক শব্দ হলো দাঁতন। আর ইসলামী পরিভাষায়, দাঁত থেকে ময়লা দূর করার জন্য কাঠ বা গাছের ডাল ব্যবহার করাকে মেসওয়াক বলে। মিসওয়াক শব্দটি
দীর্ঘ সময় ধরে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হওয়ায় এটি এখন বাংলা ভাষার’ও একটি শব্দ।

আপনি আরো পড়তে পারেন….. হ্যালো অর্থ কি জাহান্নামি?


মেসওয়াক করা কী সুন্নত?


হ্যাঁ! মেসওয়াক করা সুন্নাত। এটি নবিজীর একটি পছন্দের কাজ ছিলো তাই এটি নবীর প্রিয় সুন্নাতগুলোর মধ্যে একটি।
হাদীস শরীফে এসেছে-

عَشْرٌ مِنَ الْفِطْرَةِ: قَصُّ الشَّارِبِ، وَإِعْفَاءُ اللِّحْيَةِ، وَالسِّوَاكُ…

দশটি বিষয় স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভুক্ত। মোচ খাটো করা, দাড়ি লম্বা রাখা, মিসওয়াক করা…। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৬১


টুথব্রাশ ব্যবহারে কি মেসওয়াকের সুন্নত পুরোপুরি আদায় হয়?


মেসওয়াসের মাঝে দুটি বিষয় সুন্নত
মুখ পরিষ্কার করা।
গাছের ডাল ব্যবহার করা।
তাই গাছের ডাল ছাড়া অন্য কিছুর মাধ্যমে দাঁত মাজলে একটি সুন্নত আদায় হবে। অপরটি হবেনা। সুতরাং মেসওয়াক না থাকলে আঙ্গুল ও শুকনো কাপড় দ্বারাও মেসওয়াক করা যেতে পারে। ব্রাশের মাধ্যমেও দাঁত মাজা যেতে পারে। তবে এতে পুরপুরি মেসওয়াকের সুন্নাত আদায় হবে না।


টুথব্রাশ ব্যবহারে মেসওয়াক সওয়াব পাওয়া যাবে কি?


টুথব্রাশ ব্যবহারে মিসওয়াকের সওয়াব পুরপুরি পাওয়া যাবেনা। ব্রাশ করলে মেসওয়াকের একটি সুন্নত আদায় হবে তাই অর্ধেক ছাওয়াব পাবেন।


মেসওয়াকের সুন্নত কয়টি?

 মেসওয়াকের সুন্নত কয়টি?
মেসওয়াকের সুন্নত


মেসওয়াসের মাঝে দুটি বিষয় সুন্নত
মুখ পরিষ্কার করা- ভালোভাবে দাঁত, জিহ্বা,মুখের ভেতর পরিষ্কার করা।
গাছের ডাল হওয়া- মেসওয়াকের জন্য উপযুক্ত গাছের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করা।


কোন গাছের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করা ভালো?

 কোন গাছের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করা ভালো?
মেসওয়াক করার উপযোগী বৃক্ষ


তিনটি গাছের ডাল মেসওয়াক এর জন্য বিশেষ উপকারী ও উপযোগী যেমন, (১)পিলু গাছ (২) নিম গাছ (৩) বাবলা গাছ।


মেসওয়াক ধরার পদ্ধতি


ডান হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলি মেসওয়াকের নিচে থাকবে। মধ্যমা ও তর্জনী উপরে ও বৃদ্ধাঙ্গুলি নিচে রেখে মেসওয়াক ধরা। এতে করে মুখের ভিতর ভালভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মেসওয়াক করা যায়। এপদ্ধতিটি হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত আছে।


মিসওয়াক করার সুন্নত পদ্ধতি কী?


রসূল সা. যেভাবে মেসওয়াক করতেন সেটাই মেসওয়াকের সুন্নত পদ্ধতি।


মেসওয়াক করার পদ্ধতি

  • মেসওয়াকমেসওয়াক পীলু, যয়তুন, বাবুল অথবা নিম গাছের ডাল হওয়া উত্তম।
  • প্রথমত এক বিঘত পরিমাণ দ্বারা মিসওয়াক শুরু করা। তবে পরবর্তীতে উহা খাটো হয়ে গেলে তাহা ভিন্ন কথা। তবে এক বিঘতের চেয়ে লম্বা না হওয়া। কারণ এতে শয়তান চড়ে বসে।
  • প্রথমে উপরের দাঁতে মেসওয়াক করা। অতঃপর নিচের দাঁত সমূহ।
  • মেসওয়াকমেসওয়াক ব্যবহারের পূর্বে ও পরে তা ধুয়ে নেওয়া।
  • মিসওয়াক নিজ হাতের কনিষ্ঠ আংগুল পরিমাণ মোটা হওয়া।


মেসওয়াকের আদব

  • ডান হাত দ্বারা মেসওয়াক ধরা।
  • ডান হাত দিয়ে মেসওয়াক করা।
  • ডান দিক হতে মেসওয়াক করা।
  • মেছওয়াকের সময় কথা না বলা।
  • মেছওয়াকের সময় হাটাহাটি না করা।


মেসওয়াক করার নিয়ম কী?

মেসওয়াক করার নিয়ম
মেসওয়াক করার নিয়ম
  • মেসওয়াক করার নিয়ম উল্লেখ করছি…
  • মুখের ডান দিক থেকে শুরু করা এবং উপর থেকে নিচে মেসওয়াক করা।
  • আড়াআড়ি ভাবে না করা।
  • মেসওয়াক করার সময় দাঁতের ভিতর বাহির সহ মেসওয়াক করা এবং জিহবাও গোড়া পর্যন্ত মেসওয়াক করা।
  • হাকীম তিরমিযী রাহ. বলেন, প্রথমবার মেসওয়াক করার সময় মিসওয়াক চুষবে এবং রক্ত বিহীন পরিষ্কার থুথু গিলে ফেলবে। ইহা মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের জন্য উপকারী।
  • তবে প্রথমবারের পরে আর চুষবে না। কারণ এতে সন্দেহ রোগ ও অন্ধতা সৃষ্টি হয়। (ফাযায়িলে মিসওয়াক)
  • মেসওয়াকমেসওয়াক করা শেষ হলে তাহা খাড়া করে রাখবে। জমিনে ফেলে রাখা যাবে না। অন্যথায় মাতলামি রোগের আশংকা রয়েছে।
  • হযরত সাঈদ বিন যুবাইর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মেসওয়াক করার পর তাহা জমিনে অযত্নে রাখার কারণে মাতাল হয়ে যায়, সে যেন নিজেকে ব্যতিত অন্য কাউকে ভর্ৎসনা না করে। কেননা, এটা কেবল তাহার নিজস্ব ভুল।


কখন মেসওয়াক করা ভালো?

কখন মেসওয়াক করা ভালো
মেসওয়াক করার সময়
  • রাতে ঘুমানোর আগে মেছওয়াক করা
  • সকালে ঘুমথেকে উঠে মেছওয়াক করা
  • ওযুর পূর্বে মেছওয়াক করা।
  • গোসলের পূর্বে মেছওয়াক করা।
  • নামাযের পূর্বে মেছওয়াক করা।
  • কোরআন তেলাওয়াতের সময়।
  • ঘরে প্রবেশের পর।


মেসওয়াকের দোয়া ও জিকির


মেসওয়াক শুরু করার সময় দুআ পড়া মোস্তাহাব ।বিসমিল্লাহ বলে মেসওয়াক শুরু করবে তারপর এই দুআটি পড়বে,
বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মায আল সিওয়াকি হাজা মাহি ছললিজুনুবী ওয়ামারদ্বতাল লাকা ওয়াবায়্য়্যিজ্ব বিহি অযহি কামা বায়্য়্যাজ্বতা আসনানী ।
অর্থ : হে আল্লাহ এই মেসওয়াক করাকে আমার পাপ মোচনকারি ও তোমার রেজামন্দীর ওছিলা বানাও ।আর আমার দাঁতগুলিকে যেমনি তুমি সুন্দর করেছো, তেমনি আমার চেহারাকট উজ্জল(সুন্দর) কর ।
সূত্র আহকামে যিন্দেগী ১৩৬ পৃঃ ।


মেসওয়াক করার দোয়া -২য়
মেসওয়াক করার সময় এই দোয়া পড়তে হয় । উচ্চারণঃআল্লাহুম্মা বারিকলী ফীহি । অথঃহে আল্লাহ,আপনি এতে আমার জন্য বরকত দান করুন ।


মেসওয়াক করার দোয়া -৩য়

মেসওয়াকের দোয়া
মেসওয়াকের দোয়া


মেসওয়াকের হাদিস

মেসওয়াকের হাদিস
মেসওয়াকের হাদিস


হাদীসে বর্ণিত আছে যে, হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যদি আমি আমার উম্মতের উপর অধিক কষ্টকর হওয়ার ভয় না করতাম, তাহলে আমি তাদের উপর মেসওয়াক করা অবধারিত তথা ফরয করে দিতাম।
তিনি আরো বলেন যে, আমার ভয় হয় যে, আমি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম এর বারংবার আদেশের কারণে মেসওয়াক করতে করতে মুখের অগ্রভাগ ক্ষয় করে না ফেলি।


মেসওয়াক হুকুম কি?


হযরত আবু হুরায়রা (রাযি.) হইতে বর্ণিত আছে যে, হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে, আমি যদি আমার উম্মতের উপর কষ্টকর মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে আমি অবশ্যই প্রত্যেক নামাযের সময় মেসওয়াক নির্দেশ দিতাম।

অন্য আরেক হাদীসে বর্ণিত আছে যে, হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যদি আমি আমার উম্মতের উপর অধিক কষ্টকর মনে না করিতাম, তাহলে তাদেরকে অবশ্যই এশার নামায দেরীতে পড়া ও প্রত্যেক নামাযের সময় মেসওয়াক করার হুকুম দিতাম।


মেসওয়াক ঘটনা

মিসওয়াকের ঘটনা
মিসওয়াকের ঘটনা


হযরত আয়েশা (রাযি.) হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিসওয়াক করার বর্ণনা করে বলেন, তিনি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে ঢুকতে ও মেসওয়াক করতেন, বাহির হতেও মেসওয়াক করতেন। শুধু তাই নয়; তিনি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতো বেশী মেসওয়াক করতেন যে, শেষ পর্যন্ত তাঁর দাঁত মোবারক ক্ষয় হতে লাগে। অন্য আরেক বর্ণনায় হযরত আয়েশা (রাযি.) বলেন যে, হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের শেষ যে আমল ছিল, তা হলো মেসওয়াক করা।


মেসওয়াক এর গুরুত্ব


মেসওয়াক গুরুত্ব অপরিসীম। বলা হয় মেসওয়াক হলো মুমিনের ঢাল স্বরূপ।হাদীস শরীফে হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা বেশী বেশী করে মিসওয়াক করো। কারণ, মেসওয়াক মুখ পরিষ্কার করে এবং তা আল্লাহর নিকট অতি পছন্দনীয়।

হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, হযরত জিবরীল (আঃ) যখনই আমার কাছে আসতেন, তখন তিনি আমাকে মিসওয়াকের নির্দেশ দিতেন। আর তাঁর নির্দেশনা এতো বেশী ছিল যে, আমি আমার উম্মতের উপর মিসওয়াক ফরয হয়ে যাওয়ার আশংকা করছিলাম।সুতরাং উল্লিখিত বর্ণনা দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম যে, মেসওয়াক গুরুত্ব অনন্ত ও অসীম।


মেসওয়াকের উপকারিতা

  • দাঁতের মাড়ি মজবুত হয়।
  • দৃষ্টি শক্তি পরিষ্কার হয়।
  • মানুষের বাক শক্তি বাড়ে।
  • মুখস্থ শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • দাঁত শক্ত হয়।
  • জ্ঞান বাড়ে।
  • নিয়মিত মেসওয়াক করার ফলে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পায়।
  • মাথা ব্যথা ও মাথার সর্বপ্রকার রোগ ভালো হয়।
  • মেসওয়াকের ফলে কোনো অচল রগ নড়চড়া করে না এবং কোনো নড়াচড়াকারী রগ অচল হয় না।
  • কফ দূর হয়।
  • পাকস্থলী ঠিক থাকে।
  • শরীর সুস্থ হয়ে উঠে।
  • মেসওয়াক খাদ্য হজম করে।
  • মেসওয়াক বার্ধক্যকে পিছিয়ে দেয়।
  • মেসওয়াক পিঠ মজবুত করে।


মেসওয়াকের ফজিলত


হাদীস শরীফে হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে,
মেসওয়াক হলো মুখ পরিচ্ছন্নকারী এবং আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্টিকারী একটি যন্ত্র।
অন্য আরেক হাদীসে বর্ণিত আছে যে, মেসওয়াক হলো আল্লাহর কাছে পছন্দনীয়, ফেরেশতাদের উৎফুল্লকারী, নেকী বৃদ্ধিকারী এবং গুনাহ নিপাতকারী।

তেমনিভাবে বিখ্যাত গ্রন্থ মিশকাত শরীফের সহায়কগ্রন্থ মিরকাত শরীফে বর্ণিত আছে যে, মেসওয়াকের মধ্যে সত্তরটি উপকারিতা রয়েছে। তন্মধ্যে সর্বনিম্ন উপকারিতা হলো মৃত্যুর সময় কালিমা নসীব হওয়া। আর আফিনের মধ্যে সত্তরটি ক্ষতি আছে। যার সর্বনিম্ন ক্ষতি হলো- ইহা মৃত্যুর সময় মানুষের কালিমা নসীব না হতে সহায়তা করে।

এদিকে মুসলিম শ্রেষ্ট গ্রন্থ সমূহের অন্যতম এক গ্রন্থকার আল্লামা তাহাবী (রাহ.) মারাকিউল ফালাহ নামক গ্রন্থের টীকায় মিসওয়াকের ফজিলত বর্ণনায় লিখেন- হযরত আলী (রাযি), হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রাযি) ও হযরত আতা (রাযি.) বর্ণনা করেন যে, তোমরা অবশ্যই মিসওয়াক করবে, উহার ব্যাপারে কখনো উদাসীন হবে না এবং নিয়মিত মিসওয়াক করবে।কেননা, নিয়মিত মিসওয়াক করলে…

  • আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জন হয়।
  • জীবিকা নির্বাহ করা সহজ হয়।
  • মিসওয়াক যুক্ত নামাযের এক রাকাতের সাওয়াব- সাতাশ, নিরানব্বই অথবা চারশত গুণ রাকাতের সওয়াবে পরিণত হয়।
  • অন্তর পবিত্র হয়।
  • ভালো কাজে আগ্রহ বাড়ে।
  • ফেরেশতাগণ খুশি হন।
  • মিসওয়াককারীর চেহারার নূরের কারণে ফেরেশতাগণ তাঁর সাথে মুসাফহা করেন।
  • যখন মিসওয়াককারী মসজিদ থেকে বের হয়, তখন আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণ তাঁর জন্য মাগফিরাত কামনা করেন।
  • নবী ও রাসুলগণ তাঁর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
  • মিসওয়াক করার দরুণ শয়তান অসন্তুষ্ট হয় এবং বিতাড়িত হয়ে চলে যায়।
  • অধিক সন্তান জন্মদানে সহায়তা করে।
  • মিসওয়াকের ফলে পুলসিরাত সহজে পার পাওয়া যায়।
  • মিসওয়াকের ফলে কিয়ামত ময়দানে আমলনামা ডান হাতে আসবে।
  • আল্লাহর ইবাদতে আগ্রহ জন্মে।
  • মিসওয়াক মৃত্যুর সময় কালিমায়ে শাহাদাৎ স্মরণ করিয়ে দেয়। {সুবহানাল্লাহ}


মিসওয়াকের বৈজ্ঞানিক উপকারিতা


বিজ্ঞানের আলোকে মিসওয়াক এর উপকারিতাগুলো উল্লেখ করছি।

মিসওয়াকের উপকারিতা
মেসওয়াকের বৈজ্ঞানিক উপকারিতা


আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণা করে প্রকাশ করে যে, যদি কোনো মানুষের স্থায়ী সর্দি-কাশি রোগীর শ্লেষ্মা জমাট বেঁধে থাকে, তাহলে তার জন্য বিনামূল্যে সহজ ও সঠিক চিকিৎসা হলো মিসওয়াক করা। কেননা, নিয়মিত মিসওয়াক করা মানুষের ভিতরে জমে থাকা শ্লেষ্মা সহজেই দূর করে মস্তিষ্ককে হালকা করে দেয়।

আর এজন্যই জনৈক প্যাথলজিষ্ট বলেছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা আমাকে একথা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, মিসওয়াক হলো সর্দি-কাশির সর্বোচ্চ প্রতিরোধক।
তিনি আরো বলেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত সর্বদা মিসওয়াক ব্যবহার করে, তার নাক ও গলার অসুখে অপারেশনের সম্ভাবনা একেবারে নিতান্তই কম। (সুন্নতে রাসূল ও আধুনিক বিজ্ঞান)

জনৈক ডাক্তার সম্পর্কে বলা হয় যে, তিনি সর্বদা মিসওয়াক করতেন আর লোকদেরকেও মিসওয়াক করার পরামর্শ দিতেন। সাথে সাথে তিনি আরো বলতেন যে, হয়তো মিসওয়াক ধরো, নয়তো রোগ-বিরোগ গ্রহণে আত্মসমর্পণ করো।


অন্য আরেক দার্শনিক খুব সুন্দর করে বলেছেন যে, যে দিন থেকে আমরা মিসওয়াক করা ছেড়ে দিয়েছি, সে দিন থেকে ডেন্টাল সার্জন এর সূচনা হয়।


টুথব্রাশ ভালো নাকি মিসওয়াক ভালো?

টুথব্রাশ ভালো নাকি মিসওয়াক ভালো
টুথব্রাশ ও মেসওয়াকের পার্থক্য


বিজ্ঞানীরা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এ কথা প্রমাণ করেছেন যে, দাঁত মাঁজার সময় যখন টুথব্রাশ ব্যবহার করা হয়, তখন তার মধ্যে রোগ জীবাণু জমা হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায় অনেক, যা পানি দ্বারা পরিষ্কার করার পরও থেকেই যায়। শুধু তাই নয়, এ রোগ জীবাণু পরবর্তীতে ক্রমাগত বাড়তেই থাকে। সেই সাথে ব্রাশ ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্যে নানাবিধ অসুখ-বিসুখ হওয়ার ও সম্ভাবনা রয়েছে প্রবল। তাছাড়া ব্রাশ ব্যবহারের ফলে দাঁতের ওপরে থাকা সাদা ঔজ্জ্বল্য ধীরে ধীরে শেষ হতে থাকে।

ফলস্বরূপ অকালেই দাঁতে বিপর্যয় দেখা দেয়। এমনকি অধিক ব্রাশ ব্যবহারের কারণে মাড়ির মাঝে ধীরে ধীরে ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়,যা দাঁতের দৃঢ়তাকে কোনো একসময় শেষ করে দেয়। আর এই ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন সময় খাদ্য আটকে গিয়ে ভীষণ যন্ত্রণা সৃষ্টি করে। সেই সাথে সেখানে জন্ম নেয় নানাবিধ রোগ জীবাণু ও সংক্রামক।


পক্ষান্তরে মিসওয়াক হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি মহা সুন্নাত। যা আদায়ে রয়েছে পরকালীন মুক্তি ও ইহকালীন শান্তি। সাথে সাথে ইহাতে রয়েছে ইহকালীন অনেক সুস্থতা ও উপকারিতা। কেননা, মিসওয়াক হলো এমন একটি বস্তু, যাতে রয়েছে ভেষজ জাতীয় পদার্থ। আর ইহা দাঁতের জন্য খুবই উপকারী।

সেই সাথে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রোধে উহা অনেক সহায়ক। আর নেই তাতে কোনো ক্ষতিকর সম্ভাবনা। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউ, এইচ,ও,) তারা ‘মৌখিক পরিচ্ছন্না’ বিষয়ে অনেক গবেষণা করে একথা বলেছেন যে, ডেন্টাল স্বাস্থ্য বিধির জন্য মিসওয়াক ব্যবহারের বিকল্প বলে কিছু নেই। ইহার জন্য কেবল মিসওয়াক ব্যবহারই উপকারী।


মেসওয়াক ও টুথব্রাশের পার্থক্য


মেসওয়াক ও টুথব্রাশের পার্থক্য নিচের চিত্রের মাধ্যমে দেখুন।

মেসওয়াক ও টুথব্রাশের পার্থক্য
মেসওয়াক ও টুথব্রাশের পার্থক্য

উপসংহার


পরিশেষে সম্মানিত পাঠকবৃন্দের কাছে লক্ষণীয় বিষয় এই যে- দেখুন, যেখানে আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই সাড়ে ১৪০০ বছর আগে কোনো প্রকার যন্ত্র বিহীন যে মিসওয়াকের বিশদ বিবরণ ও ফাযায়িল বর্ণনা করে গেছেন, আধুনিক বিজ্ঞান যৌথভাবে বিভিন্ন মেশিনের সাহায্যে তা আজ প্রমাণ করছে।


তাই আসুন, এখন থেকেই আমরা ইসলামের ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র যে কোনো বিধানই হউক না কেন তার উপর গুরুত্ব সহকারে আমল করার চেষ্টা করি। নিজে আমল করি এবং অন্যকেও উৎসাহিত করি। আর ইহাই হলো ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির একমাত্র পথ ও পন্থা। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফীক দান করুন, আ মীন।

লেখক- আবদুল মতিন,শিক্ষক

তথ্যসূত্র : উইকিপেডিয়া


Please Click On Just One Add To Help Us


মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।


এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।