- ইনহেলার ব্যবহার এর নিয়ম!নেবুলাইজার ব্যবহার!
- সঠিকভাবে ইনহেলার ব্যবহারের নিয়ম
- কখন ইনহেলার ব্যবহার করবেন না
- ইনহেলার ব্যবহারে সতর্কতা
- স্পেসার দিয়ে ইনহেলার ব্যবহার
- ড্রাই পাউডার ইনহেলার্স (ডিপিআই) ব্যবহার
- নেবুলাইজার ব্যবহারের নিয়ম
- নেবুলাইজারের মধ্য দিয়ে কী ওষুধ প্রদান করা হয়?
- কতক্ষণ পর পর নেবুলাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে?
- সঠিকভাবে নেবুলাইজার ব্যবহার করার উপায়
ইনহেলার ব্যবহার এর নিয়ম!নেবুলাইজার ব্যবহার!
যাদের হাঁপানি বা অ্যাজমা রোগ আছে তাদের নিয়মিত বা মাঝেমাঝে ইনহেলার ব্যবহার করতে হয়। অনেকে ইনহেলার ব্যবহার করার পরেও ভালো সুফল পান না। রোগ কমে না অথবা রোগ থেকে মুক্তি পেতে অনেক সময় লাগে তখন রোগী ডাক্তারের চৌদ্দ গোষ্ঠীর পিণ্ডি চটকায় আর বলে শালা ডাক্তার কি ঔষধ দিলো যে অসুখ ভালো হয় না।
কিন্তু ডাক্তার কে গালি দেয়ার আগে ভাবুন আপনি অষুধ ও ইনহেলার সঠিক নিয়মে নিচ্ছেন কিনা।বেশিরভগ মানুষ সঠিকভাবে ইনহেলার ব্যবহার করতে পারে না। আজ আসুন বিনামূল্যে শিখে নিন সঠিকভাবে ইনহেলার ব্যবহার এর নিয়ম।
আপনি আরও পড়তে পারেন ……. সিওপিডি কী? সিওপিডি কারণ,লক্ষণ,চিকিৎসা ও প্রতিরোধ!
সঠিকভাবে ইনহেলার ব্যবহারের নিয়ম
সঠিকভাবে ইনহেলার ব্যবহার করতে নিচের বর্ণনা ধারাবাহিকভাবে ফলো করুন।
ধাপ- ১ –
নিজের হাত সাবান কা হ্যান্ডওয়াস দিয়ে ভালোকরে ধুয়ে ফেলুন।হাত ধোয়ার পর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ভালোভাবে মুছে ফেলুন।ভেজা হাতে ইনহেলার না ধরাই ভালো। জীবাণুযুক্ত ময়লা হাতে ইনহেলার ব্যবহার করলে ফুসফুসে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে। পরবর্তীতে এই জীবাণুর দ্বারা বড় ধরণের ইনফেকশন হতে পারে।
ধাপ- ২ –
ইনহেলার টি হাতে নিয়ে লম্বাকরে ধরুন এবং ভালোমত ঝাঁকুনি দিন কয়েকবার। এরপর ইনহেলারের মুখ খুলে দেখুন কোন ময়লা আছে কি না? যদি ময়লা থাকে তাহলে পরিষ্কার করুন। ময়লা সহ চাপ দিয়ে ইনহেলার নিলে ফুসফুসে ইনফেকশন হতে পারে। ইনহেলারের মুখের ছোট্ট ছিদ্র বন্ধ মনে হলে একবার বাতাসে ইনহেলার স্প্রে করুন।
ধাপ – ৩ –
নিজর সোজা হয়ে দাড়ান চোখ সামনের দিকে থাকবে। দাড়াতে সমস্যা হলে একটি চেয়ারে পিঠ সোজা করে বসুন।সামনে ঝুঁকে থাকবেন না। এবার ইনহেলারের মাউথ পিসের নিচে হাতের তালুর গোড়ার অংশ ঠেকান অথবা বুড়ো আঙ্গুলের পেটের উপর ইনহেলারের মাউথ পিস রাখুন। তর্জনি আঙ্গুল বা ২য় আঙ্গুল ইনহেলারের গোড়ার দিকে যেখানে চাপ দেয়া যায় তার উপর রাখুন।
ধাপ – ৪ –
এরপর বুক ভরে শ্বাস নিয়ে আরামে শ্বাস ছাড়ুন। যতটা সম্ভব ফুসফুস খালি করে ফেলুন। তাড়াহুড়ো করবেন না।
ধাপ – ৫ –
ইনহেলারের মাউথপিস মুখে প্রবেশ করান।মাউথপিস পুরোটাই মুখে প্রবেশ করিয়ে দুই চোয়ালের দাঁতের ফাঁকে সেট করুন।ভালোভাবে ঠোট দিয়ে মুখের ফাঁকা অংশ যতটা সম্ভব বন্ধ করুন। এবার ইনহেলারে ভালোভাবে ১ বার চাপ দিন। ঔষধ সহ যতটা সম্ভব ফুসফুস ভরে শ্বাস গ্রহণ করুন। মনে রাখবেন আপনি যত বেশি শ্বাস নিতে পারবেন ঔষধ তত বেশি আপনার ফুসফুসে প্রবেশ করবে এতে ঔষধের পূর্ণ গুনাগুণ লাভ করবেন।দ্রুত শ্বাসকষ্ট লাঘব হবে।
ধাপ – ৬ –
শ্বাস নেয়ার পর ১০ সেকেন্ড দম বন্ধ করে শ্বাস ধরে রাখুন। সেকেন্ড হিসেব করতে না পারলে মনে মনে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনবেন। এই সময় ঔষধ ফুসফুসে এবজর্ব হয় তাই ভালোকরে এই ধাপ ফলো করবেন তা না হলে ঔষধের কোন উপকার পাবেন না। ১০ সেকেন্ড পার হলে ধিরে ধিরে শ্বাস ছেড়ে দিন। একবারে ভুস করে শ্বাস ছাড়বেন না।
ধাপ – ৭ –
কাজ শেষে কয়েক মিনিট বিশ্রাম নিবেন তারপর ইনহেলারের মাউথপিস পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে ঢাকনা বন্ধ করে রেখে দিবেন। ইনহেলার ব্যবহার শেষে ভালোভাবে কুলকুচি করবেন এতে করে মুখের গহ্বরে ছত্রাকের আক্রমণ হবে না। স্টেরয়েড জাতীয় ইনহেলার ব্যবহার করার পর অবশ্যই কুলি করবেন।
কখন ইনহেলার ব্যবহার করবেন না
- ১। বেশি পরিশ্রম করার পর হাপিয়ে উঠলে তখন শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ইনহেলার ব্যবহার করবেন না। একটু সময় অপেক্ষা করে আগে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক হতে দিন তারপর ইনহেলার ব্যবহার করুন।
- ২। ইনহেলার ব্যবহার করার পরপরই হাপিয়ে যাবেন এমন ভারি কাজ করবেন না।
- ৩। শারীরিক পরিশ্রমের ফাঁকে ইনহেলার ব্যবহার করবেন না। আগে সুস্থির হবেন তারপর ব্যবহার করবেন।
ইনহেলার ব্যবহারে সতর্কতা
- একাধিক চাপ ইনহেলার ব্যবহারের প্রয়োজন হলে প্রত্যেক বার ব্যবহারের পর অন্তত ২-৪ মিনিট বিরতি দিন।
- পুরো চাপ ইনহেলার ব্যবহার করবেন।আংশিক চাপ ব্যবহার করলে ফলাফল পাবেন না। একসময় ইনহেলার ব্যবহারে আর কাজ হবে না।
- অপ্রয়োজনে ইনহেলার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
- ১ চাপে শ্বাসকষ্ট কমলে দ্রুত আরাম পাবার জন্য ২ চাপ ব্যবহার করবেন না।
স্পেসার দিয়ে ইনহেলার ব্যবহার
স্পেসার হল একটি পেট মোটা চোঙার মত গঠন এটি প্লাস্টিকের তৈরি।এটির একপ্রান্তে ইনহেলার যুক্ত করার ছিদ্র ও অপর প্রান্তে রয়েছে শ্বাস নেয়ার জন্য ছিদ্র।ইনহেলার চাপলে ঔষধ আগে প্লাস্টিকের চোঙে আসে তারপর মুখ দিয়ে টানতে হয়। ডাক্তাররা এটা ব্যবহার করেই ইনহেলার নেয়ার সুপারিশ করেন।
স্পেসার দিয়ে ইনহেলার নেয়ার পদ্ধতি, নীচে চিত্রে দেখানো।
ড্রাই পাউডার ইনহেলার্স (ডিপিআই) ব্যবহার
ক্যাপসুলে পাউডার রূপে ওষুধ থাকে। ক্যাপসুল ড্রাই পাউডার ইনহেলার বা রোটাহেলার নামে একটি যন্ত্রের ভেতর বসানো হয়৷ক্যাপসুল ভরে যন্তের ঢাকনা বন্ধ করলে একটি ধাঁরালো সূঁচ ক্যাপসুলটিকে ফেটে দেয়। এবার
ব্যবহারকারী যন্ত্রটির মুখপাত্র দিয়ে খুব জোড়ে শ্বাস নিলে ক্যাপসুলের ভেতরের পাউডার ঔষধ গভীর শ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করবে।গভীর শ্বাসের পর, যতক্ষণ সম্ভব শ্বাস রোধ করে রাখুন যাতে ওষুধ ফুসফুসে মিশে যেতে পারে।
যন্ত্রটির সাফল্যের জন্য দ্রুতগতিতে শ্বাস গ্রহণ অপরিহার্য যাতে পুরো ওষুধ একটি শ্বাসে ফুসফুসে যেতে পারে। না হলে, ওষুধটি গলায় আটকে থাকবে। এই কারণে, ডিপিআই একমাত্র ব্যবহৃত হতে পারে ৮-১০ বছর বয়সের উপরের রোগীর দ্বারা।
নেবুলাইজার ব্যবহারের নিয়ম
নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয় অ্যাজমার (হাঁপানির) ভয়ানক আক্রমণের সময় যদি ইনহেলার থেকে স্বস্তি পাওয়া না যায়। অথবা যখন আক্রমণ খুব মারাত্মক এবং রোগী ইনহেলার ব্যবহারে সক্ষম নয়।
নেবুলাইজার, নিজে কোনো হাঁপানির মেডিকেশন নয়। এটি মেকানিক্যাল পাম্প সহ একটি ছোট বৈদ্যুতিক ডিভাইস যা তরল ওষুধকে সূক্ষ্ম কুয়াশায় রূপান্তর করে যা একটি ফেস মাস্কের মধ্য দিয়ে প্রশ্বাসের সাথে গ্রহণ করা যায়।
প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সাধারণত সময় লাগে 5-10 মিনিট।এসময় মাঙ্কটি পরে থাকার দরকার হয়।এটি ফুসফুসের সব অংশে হাঁপানির ওষুধ প্রবেশ করায় এবং হাঁপানির উপসর্গ থেকে তাৎক্ষণিক স্বস্তির নিশ্চয়তা দেয়।
নেবুলাইজারের মধ্য দিয়ে কী ওষুধ প্রদান করা হয়?
রিলিভার ওষুধ বা ব্রঙ্কোডাইলেটর হিসেবে সাধারণত সালবুটামল নেবুলাইজারের মধ্য দিয়ে প্রদান করা হয়। অনেক সময় সালবুটামলের সাথে ইপ্রাসল ও ট্রায়োটপিয়াম ব্যবহার করা হয়।
কতক্ষণ পর পর নেবুলাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে?
একবার নেবুলাইজার নেবার ৫-১০ মিনিট পর যদি শ্বাসকষ্ট না কমে তাহলে প্রতি ২০ মিনিট অন্তর ওষুধটির পুনরাবৃত্তি করা যেতে পারে। এর পরেও যদি যদি রোগীর কোনো উন্নতি দেখা না যায় তাহলে নেবুলাইজার ও অক্সিজেন লাগিয়ে রোগীকে হাসপাতালে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
নেবুলাইজারের মধ্য দিয়ে কী ওষুধ প্রদান করা হয়
রিলিভার ওষুধ বা ব্রঙ্কোডাইলেটর হিসেবে সাধারণত সালবুটামল নেবুলাইজারের মধ্য দিয়ে প্রদান করা হয়। অনেক সময় সালবুটামলের সাথে ইপ্রাসল ও ট্রায়োটপিয়াম ব্যবহার করা হয়।
কতক্ষণ পর পর নেবুলাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে
একবার নেবুলাইজার নেবার ৫-১০ মিনিট পর যদি শ্বাসকষ্ট না কমে তাহলে প্রতি ২০ মিনিট অন্তর ওষুধটির পুনরাবৃত্তি করা যেতে পারে। এর পরেও যদি যদি রোগীর কোনো উন্নতি দেখা না যায় তাহলে নেবুলাইজার ও অক্সিজেন লাগিয়ে রোগীকে হাসপাতালে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
সঠিকভাবে নেবুলাইজার ব্যবহার করার উপায়
নেবুলাইজারের সঠিক ব্যবহার নীচের চিত্রগুলিতে বর্ণনা করা হয়েছে :
লেখক
জন ডেন ও স্যমসন ডি মোর
রেসপিরেটরি বিশেষজ্ঞ
মেলবোর্ন, হেলথ ইনস্টিটিউট
অনুবাদ – মো: শান্ত সরকার
Please Click on Just one Add to help us
মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।
এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা।