কেমোথেরাপি দিলে চুল পরে কেন?
কেমোথেরাপি দেয়ার পর অধিকাংশ ক্যান্সার রোগীর চুল পরে যায়। তখন ন্যাড়া তেততেলে মাথা দেখে খুব সহজেই বোঝা যায় যে লোকটি ক্যান্সারের চিকিৎসা করছেন। অনেকের ভ্রূ একদম খালি হয়ে যায় এদের অনেকটা কিম্ভুতকিমাকার লাগে।
এখন প্রশ্ন হলো কেমোথেরাপি দিলে চুল পরে কেন? প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আপনি লেখাটি পড়তে থাকুন।
আপনি আরো পরতে পারেন… ব্লাক ফাঙ্গাস রোগ কী?….. কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি? …… কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার উপায় কী?
কেমোথেরাপি কী?
ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি বন্ধ করার জন্য বা একেবারে মেরে ফেলার জন্য যে সকল রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় সেগুলোকে বলে কেমোথেরাপিউটিক এজেন্ট (chemotherapeutic agents)। এই কেমোথেরাপিউটিক এজেন্ট এর মাধ্যমে ক্যান্সারের চিকিৎসা করার পদ্ধতিকে বলে কেমোথেরাপি।
কেমোথেরাপি দিলে চুল পরে কেন?
পশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য প্রথমে জানতে হবে ক্যান্সার কোষ কী?
ক্যান্সার কোষ কী?
দেহের পুরাতন কোষগুলো বিভাজিত হয়ে নতুন কোষ সৃষ্টি হয়। এই প্রক্রিয়া কোষ বিভাজন নামে পরিচিত। কোষ বিভাজনের প্রধান ধাপ ২ টি। ইন্টারফেজ দশা বা বিরাম দশা এবং বিভাজন দশা। ইন্টারফেজ দশায় সময় ব্যয় হয় প্রায় ৯০%। মাত্র ১০% সময় লাগে বিভাজন দশায়।
বিভাজন দশায় পৌছাতে হলে কোষকে আগে ইন্টারফেজ দশা পার হতে হবে। এই দশায় কিছু পরীক্ষা পদ্ধতি আছে এগুলোকে বলে চেক পয়েন্ট। প্রত্যেক চেক পয়েন্ট পার হতে পারলে তবেই একটি কোষ বিভাজনের জন্য অনুমতি পায়। বিভাজনের মাধ্যমে নতুন নতুন কোষ সৃষ্টি করে।
কোন কোষ চেক পয়েন্ট পার হতে না পারলে সে কোন দিন বিভাজিত হবে না। ক্যান্সার সৃষ্টির উপাদান কার্সিনোজেন দেহে প্রবেশ করে কোষের ডিএনএ এর নকশা পরিবর্তন করে ফলে এই পরিবর্তিত ডিএনএ বিশিষ্ট কোষকে চেকপয়েন্ট আর চেক করতে পারে না।
খুব সহজে এই খারাপ কোষগুলো চেক পয়েন্ট ফাঁকি দেয় এবং বিভাজিত হতে থাকে। এই অস্বাভাবিক কোষ গুলোকে বলে ক্যান্সার কোষ। যেহেতু এদের বিভাজিত হওয়ার জন্য চেক পয়েন্টের চেকিং এর ঝামেলায় পরতে হয় না তাই এরা স্বাভাবিক কোষের চাইতে খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং খাদ্য সংগ্রহ বেশি করে।
খাদ্যের অভাব হলে এরা পার্শ্ববর্তী ভালো কোষগুলোর থেকে খাদ্য ছিনতাই করে। একসময় গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ৯০% কোষের জায়গা দখল করে ফেললে অরগ্যান ফেইলর হয়ে রোগীর মৃত্যু ঘটে।
এবার জানতে হবে কেমোথেরাপির মূলনীতি সম্পর্কে,
কেমোথেরাপির মূলনীতি কী?
ক্যান্সার চিকিৎসায় ক্যামোথেরাপি ২ টি প্রধান মূলনীতির উপর ভিত্তি করে প্রয়োগ করা হয়।
১। ক্যান্সার কোষের খাদ্য সংগ্রহে বাধা সৃষ্টি করা
ক্যামোথেরাপিতে ব্যবহৃত ঔষধগুলো দেহে প্রবেশের পর রক্তের মাধ্যমে পরিবাহিত হয় এবং ক্যান্সার কোষ গুলোর খাদ্য সংগ্রহে বাধা দিয়ে মেরে ফেলে। টিউমারের খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে আকৃতি কমিয়ে আনে। খাদ্যের অভাবে ক্যান্সার কোষের বিস্তার হ্রাস পায়
২। ডিএএনএ স্ট্রাকচার পরিবর্তন করা
কেমোথেরাপিউটিক এজেন্ট ক্যান্সার কোষের ডিএনএ স্ট্রাকচার পরিবর্তন করে কোষগুলোকে মেরে ফেলে।
এবার আসাযাক আসল প্রশ্নে,
কেমোথেরাপি দিলে চুল পরে কেন?
কেমোথেরাপি কে পারমাণবিক বোমার মত মনে করুন একবার মেরে দিলে ভালো খারাপ নির্বিশেষে উজার হয়ে যায়। কেমোথেরাপি হিসেবে ব্যবহৃত কেমোথেরাপিউটিক এজেন্ট ক্যান্সার কোষের আশেপাশে অবস্থিত ভালো কোষগুলোকেও মেরে ফেলে।
বিরাট সংখ্যক ভালো সদস্যকে বাঁচাতে কিছু সংখ্যক ভালোর আত্মত্যাগ করার মত ঘটনা বলতে পারেন।
ক্যান্সার কোষ খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় তাই কেমোথেরাপিউটিক এজেন্ট দ্রুত বর্ধনশীল কোষগুলোকে আক্রমণ করে।স্বাভাবিক কোষের মধ্যে দ্রুত বর্ধনশীল অন্যতম কোষ হলো চুল। কেমোথেরাপিউটিক এজেন্টগুলো দ্রুত বর্ধনশীল চুলের গোড়াতে আক্রমণ করে ক্যান্সার কোষ ভেবে ফলে চুলের মৃত্যু ঘটে।
ভালো কোষ হিসেবে চুল আত্মত্যাগ করে।কেমোথেরাপিউটিক এজেন্টের প্রভাবে চুল পড়ে যাওয়াকে অ্যানাজেন ইফফ্লুভিয়াম বলে ।কেমোথেরাপির প্রথম ডোজ দেয়ার দুই থেকে তিন সপ্তাহ পরে চুল পড়তে শুরু করে।
কেমোথেরাপি শেষ হলে কি আবার চুল গজায়?
মাথার চামড়া ও শরীরের চামড়া থেকে একদিনে গড়ে ১০০ থেকে ১২৫ টি চুল এমনিতে খসে পড়ে। পড়ে যাওয়া চুলের জায়গা দখল করে নতুন চুল। কিন্ত কেমোথেরাপিতে সব চুল একসাথে পড়ে যায়।থেরাপির সর্বশেষ ডোজের তিন চার মাস পর থেকে চুল গজানো শুরু করে।থেরাপি পরবর্তী গজানো নতুন চুল আগের থেকে দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে থাকে।
এই চুলগুলো বেশ পাতলা হয় মাথার চামড়া পুরোপুরি ঢাকে না। অনেকসময় নতুন গজানো চুলের স্টাইল পূর্বের স্টাইল থেকে পরিবর্তন হয়ে যায়। যেমন ধরুন থেরাপির আগে আপনার চুল ছিলো সোজা কিন্তু থেরাপির পর নিগ্রোদের মত কোঁকড়া হয়ে গেলো। আবার খাঁড়া চুল সোজা হয়ে যেতে পারে।
কেমোথেরাপি পরবর্তী চুল গজানোর টিপস
কেমোথেরাপি দেয়ার পর চুলের যত্ন কিভাবে নিবেন?
10080
তিলের তেল মালিশ করুন
নিয়ম করে সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন মাথায় তিলের তেল মালিশ করুন।
চুল আঁচড়ানো
দিনে দুইবার চিরুনি দিয়ে কোমলভাবে চুল আঁড়ান। এতে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়বে। চুলের পুষ্টি উপাদান বেশি সরবরাহ হবে।
পেয়াজের রস দিতে পারেন
কাচা পেঁয়াজের রস ২ দিন পরপর মাথার ত্বকে
মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখুন
থেরাপির পর মানব দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তাই ত্বকে জীবাণু সংক্রমণ বেশি হয়। জীবাণুর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মাথার ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন।
ভিটামিন সি ও ই গ্রহণ করুন
ভিটামিন সি ও ই সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিন গ্রহণ করতে হবে। এই ভিটামিন গুলো নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
Estimated Cost: 1 USD
Supply:
- তিলের তেল
Tools:
- পেয়াজের রস
Materials: ভিটামিন
রেডিয়েশন থেরাপি দিলে চুল পরে কেন?
মাথা, ঘাড় ও বুকে রেডিওথেরাপি প্রয়োগে চুল পড়ে যায়।উচ্চমাত্রার রেডিয়েশন দ্রুত বর্ধনশীল চুলের গোড়াতে আক্রমণ করে ক্যান্সার কোষ ভেবে ফলে চুলের মৃত্যু ঘটে।
Why Chemotherapy is caused for hair loss in Bangla
chemotherapy dile chul pore keno? kemotherapy dile chul pore keno? kemotherapi shesh hole ki chul abar uthe?
tag: কেমোথেরাপি দিলে চুল পরে কেন? কেমোথেরাপি দিলে চুল পরে কেন? কেমোথেরাপি দিলে চুল পরে কেন? কেমোথেরাপি দিলে চুল পরে কেন? কেমোথেরাপি দিলে চুল উঠে যায় কেন? কেমোথেরাপি দিলে চুল ঝরে পরে কেন?
ধন্যবাদ, ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন। লেখাটি সবার সাথে শেয়ার করুন।
Info Source : Myoclinic.org
Please click on Just one Add to Help Us
মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।
এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।