- গাধা সম্পর্কে ২৫টি বিস্ময়কর তথ্য
- ১)গাধা কি সত্যি গাধা?
- ২) গাধার ঘ্রাণশক্তি ও শ্রবণ শক্তি
- ৩) বড় বাঁধা থাকলে আগেই বুঝতে পারে
- ৪) দ্বিগুণেরও বেশি ওজন বহন করতে পারে
- ৫) গাধার প্ৰকৃত ইংরেজি নাম
- ৬) গাধাদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা আছে
- ৭) গাধা পাহারা দেয় ভেড়ার পাল
- ৮) নেকড়ে বাঘ ও শেয়াল গাধাকে ভয় করে
- ৯) গাধা তার সঙ্গীনিকে খুব ভালোবাসে
- ১০) গাধা সামাজিক প্রাণী
- ১১) গাধা ৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচে
- ১২) গাধার আদি বাসস্থান মরুভূমি
- ১৩) গাধা ও ঘোড়ার হাঁটার ভঙ্গি একই
- ১৪) কখনো চমকায় না
- ১৫) গাধা ঘাসের ৯৫% ই শরীরের কাজে লাগায়
- ১৭) গাধার সংকর প্রাণী
- ১৮) সিল্ক রোড নির্মাণে গাধার ভূমিকা
- ১৯) গাধার দুধ নন- এলার্জিক
- ২০) গাধার পাসপোর্ট প্রয়োজন হয়
- ২১) গাধা যিশুখ্রিস্টের বাহক
- ২২) jerusalem dunk
- ২৩) গাধাকে বেশি খাওয়ানো নিষেধ
- ২৪) ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রতীক গাধা
গাধা সম্পর্কে ২৫টি বিস্ময়কর তথ্য
ক্লাশে স্যার পড়া ধরলে যদি না পারতাম তাহলে কমন ডাইলোগ শুনতে হতো “গাধা”। কেউ বোকামি করলে আমরা জোড়ছে গালি দেই “গাধার বাচ্চা গাধা”। বেচারা বাপ ছেলের কল্যাণে গাধা হয়ে যায়।
যাই হোক গাধার কথা শুনতে শুনতে হয়তো ভাবছেন, এত প্রাণী থাকতে কেন এই গাধাকে সবচেয়ে বোকা প্রাণির খেতাব দেয়া হলো? তাহলে শুরু করা যাক গাধা কাহিনি। গাধা সম্পর্কে বিশ্ময়কর তথ্য।
আপনি আরো পড়তে পারেন… গান্ধি পোকার গন্ধ রহস্য! গান্ধি পোকার গন্ধ ছড়ায় কেন? …. চুলকানি সম্পর্কে আশ্চর্যজনক তথ্য
১)গাধা কি সত্যি গাধা?
জনমত জরিপে সর্বজন স্বীকৃত বোকা প্রাণী হলো গাধা। কিন্তু প্রাণিবিজ্ঞানীরা একে বুদ্ধিমান ও স্মার্ট প্রাণী বলেই মনে করেন। মানুষের কণ্ঠের নির্দেশ বোঝে। গাধা পুরনো মনিব ও সঙ্গীসাথীকে ২৫ বছর পরেও চিনতে পারে এমন রেকর্ডও আছে।
২) গাধার ঘ্রাণশক্তি ও শ্রবণ শক্তি
গাধার ঘ্রাণশক্তি ও শ্রবণ শক্তি প্রবল । অনাগত বিপদের সংকেত গাধা আগেই বুঝে ফেলে এবং বিপদের দিকে কোনমতেই পা ফেলে না। মালিক কে বিপদের গুরুত্ব ববোঝাতে পা দিয়ে মাটিতে বারবার আঘাত করতে থাকে। বেশিরভাগ গাধার মমালিক এই সংকেতের অর্থ না বুঝে গাধাকে একগুঁয়ে ও নির্বোধ প্রাণী মনে করেন।
৩) বড় বাঁধা থাকলে আগেই বুঝতে পারে
সামনে বড় বাঁধা থাকলে ভারবাহি গাধা আগেই বুঝতে পারে এবং নিজের গতিপথ বদলে নেয়।
৪) দ্বিগুণেরও বেশি ওজন বহন করতে পারে
গাধা নিজের ওজনের দ্বিগুণেরও বেশি ওজন বহন করতে পারে ( ৫০০kg’র মত) । এদের ভারসাম্য রক্ষার কৌশল বেশ ভালো। বেশি ওজন পিঠে চাপলেও সহজে টলে পরে না। যত বন্ধুর পথ হোক সে তার মনিবকে কখনো নীচে ফেলে দেবে না। কিন্তু এই মহৎ গুণ ঘোড়ার নেই ।
৫) গাধার প্ৰকৃত ইংরেজি নাম
গাধার প্ৰকৃত ইংরেজি নাম ছিল Ass ও she-ass কিন্তু সেটা গালিতে বা ভালগার শব্দে পরিনত হওয়ায় , পরে dunkey বলে ইংরেজি তে ডাকা শুরু হয় ।
৬) গাধাদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা আছে
গাধাদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা আছে। নিজের ও মনিবের নিরাপত্তা সবার আগে চিন্তা করে সে।
৭) গাধা পাহারা দেয় ভেড়ার পাল
ভেড়া ও ছাগলের পাল পাহারা দেয়ার জন্য একটি গাধা যথেষ্ট। খুব মনোযোগ দিয়ে গাধা পাহারা দেয় ভেড়ার পাল।
৮) নেকড়ে বাঘ ও শেয়াল গাধাকে ভয় করে
নেকড়ে বাঘ ও শেয়াল গাধাকে ভয় করে। তারা কোন ভেড়ার খোঁয়ারে ঢুকে পাহারায় গাধাকে দেখতে পেলে , দ্রুত সটকে পড়ে।
৯) গাধা তার সঙ্গীনিকে খুব ভালোবাসে
গাধা তার সঙ্গীনিকে খুব ভালোবাসে। গলা জড়িয়ে ঘুমায়, শরীর পরিস্কারও করে দেয় সারাক্ষন।
১০) গাধা সামাজিক প্রাণী
গাধা সামাজিক প্রাণী। গাধা একা থাকতে পারেনা। কমপক্ষে একটি ছাগল বা শিশুর সাহচর্য পেলেও সে উৎফুল্ল থাকে।
১১) গাধা ৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচে
গাধা ৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। একই বয়সের ঘোড়ার চেয়ে গাধা শক্তিশালী।
১২) গাধার আদি বাসস্থান মরুভূমি
গাধার আদি বাসস্থান মরুভূমি। সেজন্য গরম আবহাওয়া পছন্দ তার। শরীরের চামড়া ঘোড়ার চেয়ে পাতলা ও পশম পানিরোধী নয় । তাই সে বৃষ্টিকে ভয় পায় ও ঠান্ডায় কাঁপে।
১৩) গাধা ও ঘোড়ার হাঁটার ভঙ্গি একই
গাধা ও ঘোড়ার হাঁটার ভঙ্গি একই। কিন্তু মরুভূমির প্রাণী হওয়ায়, গাধা ঘোড়ার মতো দৌঁড়তে পারেনা, এতে শক্তি বেশি ক্ষয় হবে বলে। সেজন্য বিবর্তনের শুরুতে গাধা যেমন ছিল এখন প্রায় তেমনি আছে , কেবল কান দুটো ঘোড়ার চেয়ে লম্বা হয়েছে, মরুভূমিতে ষাট মাইল দূরের আওয়াজ ও শুনতে পায় গাধা।
১৪) কখনো চমকায় না
তারা কখনো চমকায় না। জোরে আওয়াজ হলে কৌতূহলে দেখে তারপর সিদ্ধান্ত নেয় । অথচ জোরে আওয়াজ হলে ঘোড়া দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে।
১৫) গাধা ঘাসের ৯৫% ই শরীরের কাজে লাগায়
মরুভূমি তে ঘাস কম থাকায় গাধা ঘাসের ৯৫% ই শরীরের কাজে লাগায়। তাই এদের গোবরে খুব বেশি জৈব সার থাকে না।
১৬) কখনোই সওয়ারী কে ফেলে দেয় না
যারা ঘোড়ায় চড়া শিখতে চান তাদের জন্য গাধা “ভাল শুরু” হতে পারে। সে কখনোই সওয়ারী কে ফেলে দেয় না।
১৭) গাধার সংকর প্রাণী
সংকর প্রাণী উৎপাদনে গাধার জিন চমৎকার মানিয়ে নেয়। পশ্চিমে ছেলে গাধাকে জ্যাক ও গাধিকে জেনি বলা হয়। পুরুষ গাধার সাথে স্ত্রী ঘোড়ার মিলনে উৎপন্ন সংকর প্রাণী হল মিউল বা খচ্চর।
গাধা ও জেব্রার সংকর হল জংকি।
গাধীর সাথে ঘোড়ার সংকর হলো হিনী।
হিনীর চেয়ে মিউল শক্তিশালী হয়। এরা সব অনুর্বর বা বন্ধ্যা হয়।
১৮) সিল্ক রোড নির্মাণে গাধার ভূমিকা
মিশরীয় সভ্যতা ও সিল্ক রোড নির্মাণে গাধার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গাধার পিঠে চড়েই পিরামিড ও ফারাওদের প্রাসাদ তৈরির সরঞ্জাম আসতো। তাই মিশরীয়দের দেয়াল চিত্রে গাধার উল্লেখযোগ্য ছবি আছে।
১৯) গাধার দুধ নন- এলার্জিক
সব প্রাণীর দুধের মধ্যে একমাত্র গাধার দুধই নন- এলার্জিক। যেসব শিশুদের পেটে সমস্যা থাকে তাদের জন্য এর দুধই সর্বোত্তম।
২০) গাধার পাসপোর্ট প্রয়োজন হয়
চিনে পৃথিবীর সবচে বেশি গাধা আছে। ব্রিটেনে গাধা আমদানি করতে হলে তার (গাধার) পাসপোর্ট প্রয়োজন হয়।
২১) গাধা যিশুখ্রিস্টের বাহক
বাইবেলের উভয়ই সংস্করনে গাধাকে যিশুখ্রিস্টের বাহক বলা হয়েছে। যীশু জেরুজালেমে ঘোড়ার পিঠে না চড়ে গাধার পিঠে চড়ে প্রবেশ করেছিলেন। কারণ তিনি নিজেকে রাজা বা শাসক পরিচয় দিতে চান না।
২২) jerusalem dunk
যে সকল গাধার পিঠে ও সামনের দুই দিকে ক্রস চিন্হ থাকে তাদের jerusalem dunkey বলা হয়।
২৩) গাধাকে বেশি খাওয়ানো নিষেধ
ঘোড়ার মতোই গাধাকে বেশি খাওয়ানো নিষেধ। মোটা হলে ক্ষুরের নীচে হাড় বেড়ে তার ভার বহন ক্ষমতা কমে যায় ।
২৪) ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রতীক গাধা
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রতীক গাধাটি অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের 1828 সালের রাষ্ট্রপতি প্রচারে প্রথম ব্যবহার করা হয়। প্রতিদ্বন্দ্বীতা চলাকালীন, জ্যাকসনের বিরোধীরা তাকে একটি জ্যাকাস বা গাধা বলে অভিহিত করেছিলেন।
তবে গালিটি প্রত্যাখ্যান করার পরিবর্তে, ১৮১২ সালের যুদ্ধের নায়ক জ্যাকসন তার প্রচারের পোস্টারে পশুটির একটি চিত্র অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। জ্যাকসন, কুইন্সি অ্যাডামসকে পরাস্ত করে আমেরিকার প্রথম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত হন । 1870 এর দশকে প্রভাবশালী রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট থমাস নস্ট গাধাকে পুরো ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রতীক হিসাবে জনপ্রিয় করতে সহায়তা করেছিলেন।
মূল লেখক
Md Samshuddin, ঔষধ ও স্বাস্থ্যপরিচর্যা এ সহকারী অধ্যাপক
Please Click On Just One Add To Help Us
মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।
এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।