- ব্রংকাইটিস কী?ব্রংকাইটিসের কারণ,লক্ষণ,চিকিৎসা!
- ব্রংকাইটিস কী?
- ব্রংকাইটিসের কারণ
- কাদের ব্রংকাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি
- ব্রংকাইটিস এর লক্ষণ বা উপসর্গ
- ব্রংকাইটিস এর প্রকারভেদ
- ১। ক্রনিক ব্রংকাইটিস
- ক্রনিক ব্রংকাইটিস এর লক্ষণ
- ক্রনিক ব্রংকাইটিস এর কারণ
- ২। একিউট বা তীব্র ব্রঙ্কাইটিস
- তীব্র ব্রঙ্কাইটিস এর লক্ষণ
- তীব্র ব্রঙ্কাইটিস এর কারণ
- ব্রংকাইটিস রোগ নির্ণয়
- ব্রংকাইটিস এর চিকিৎসা
- ব্রংকাইটিস এর ঔষধ
- ব্রংকাইটিস এর ঘরোয়া চিকিৎসা
- ব্রংকাইটিস কি ভালো হয়?
- কোন ভাইরাসের কারণে ব্রংকাইটিস হয়?
- ব্রংকাইটিস হলে করণীয়
- ব্রংকাইটিস প্রতিরোধ করার উপায়
ব্রংকাইটিস কী?ব্রংকাইটিসের কারণ,লক্ষণ,চিকিৎসা!
র্তমানে বায়ু দূষণ ও ধূমপানের কারণে বিশ্বের অনেক মানুষ ফুসফুসের বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছে।এমন একটি ফুসফুসের রোগ হলো ব্রংকাইটিস। বিশ্বের যেসব দেশে বায়ুদূষণ বেশি সেসব দেশে ব্রংকাইটিস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পরছে।
ব্রংকাইটিস কী?
শ্বাসনালির ভিতরের প্রাচীরে প্রদাহের ফলে বাতাস চলাচলের পথ সংকুচিত হলে শ্বাসকষ্ট হয় এই অবস্থাকে ব্রংকাইটিস বলে।
উইকিপিডিয়া
আপনি আরও পড়তে পারেন ……. সিওপিডি কী? সিওপিডি কারণ,লক্ষণ,চিকিৎসা ও প্রতিরোধ! ….. এমফাইসিমা কী? এমফাইসিমার কারণ,লক্ষণ,চিকিৎসা ও প্রতিরোধ! ….. ইনহেলার ব্যবহার এর নিয়ম!নেবুলাইজার ব্যবহার!
ব্রংকাইটিসের কারণ
ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও দূষণ (যেমন কলকারখানার ধুলাবালি এবং ধোঁয়াময় পরিবেশ) এ রোগের কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়।
কারণ | বিবরণ |
জীবাণু | ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে শ্বাসনালির ঝিল্লিগাত্রে প্রদাহ হতে পারে এই প্রদাহ থেকে ভবিষ্যতে ব্রঙ্কাইটিস হয়।নিউমোনিয়ার ব্যাকটেরিয়া নিউমোক্কাস বারবার আক্রমণ করলে শ্বাসনালির প্রাচীরে স্থায়ী প্রদাহ সৃষ্টি হয়ে ব্রঙ্কাইটিস হতে পারে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের আক্রমণ উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় করা না গেলে। |
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ | প্রচুর ধূলাবালি ও রাসায়নিক দূষক পদার্থে পরিপূর্ণ বাতাসে প্রতিনিয়ত শ্বাস গ্রহণ করলে ব্রংকাইটিস হয়। |
স্যাঁতসেঁতে ধূলিকণা মিশ্রিত আবহাওয়া | বর্ষার শেষে ও শীতকালে ঠাণ্ডা ভেজা বাতাসের সাথে ধূলিকণা মিশ্রিত হয়ে তৈরি হয় স্মগ এটি দেখতে কুয়াশার মত হলেও আসলে কুয়াশা নয়। স্মগ বারবার ফুসফুসে প্রবেশ করলে ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং ব্রংকাইটিস হয়। |
ঠাণ্ডা লাগা | বারবার ঠাণ্ডা লেগে কাশি হলে যদি ভালোভাবে চিকিৎসা করা না হয় তাহলে ব্রংকাইটিস হতে পারে। |
ধূমপান | চেইন স্মোকারদের ব্রংকাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। দীর্ঘদিন ধরে ধূমপান করলে বৃদ্ধ বয়সে ব্রংকাইটিস হয়। আবার দীর্ঘদিন ধরে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হলেও এই রোগ হতে পারে। |
কাদের ব্রংকাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি
একবার ব্রংকাইটিস হলে বারবার এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সাধারণত শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।সিওপিডি রোগে আক্রান্ত মানুষদের ব্রংকাইটিস হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। যারা রাসায়নিক এবং ভারী ধাতব কারখানায় কাজ করেন তাদের ও এই রোগ হতে পারে।
ব্রংকাইটিস এর লক্ষণ বা উপসর্গ
ব্রংকাইটিস রোগীর সচরাচর দেখা যায় এমন লক্ষণগুলো হলো-
- কাশি, বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট হয়।
- একটানা ৩ সপ্তাহ কাশির সাথে কফ বের হওয়া।
- কাশির সময় রোগী বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করে।
- শক্ত খাবার খেতে পারে না।
- নিঃশ্বাসে সাঁ সাঁ শব্দ হয়।
- বুকে চাপ অনুভূত হয়।
- অল্প পরিশ্রমে রোগী হাপিয়ে উঠে।
- মুখে এক ধরণের বাজে স্বাদ অনুভূত হওয়া।
- ভালোভাবে কথা বলতে অসুবিধা হয়।
- জ্বর হয়।
- শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।
- কাশির সাথে অনেক সময় কফ বা রক্ত বের হয় ইত্যাদি।
ব্রংকাইটিস এর প্রকারভেদ
- ব্রঙ্কাইটিস ২ ধনের।যথা-
- ১। ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী ব্রংকাইটিস
- ২। একিউট বা তীব্র ব্রংকাইটিস
১। ক্রনিক ব্রংকাইটিস
ফুসফুসে বাতাস চলাচলের পথের ভেতর অবস্থিত কফ তৈরির গ্রন্থি বেশি পরিমাণে কফ তৈরি করলে সবসময় শ্বাসকষ্ট লেগে থাকে একে ক্রনিক ব্রংকাইটিস বলে।
এটি মারত্বক ফুসফুসের রোগ। এর কারণে সিওপিডি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।অনেক সময় এর কারণে শ্বাসনালিতে স্থায়ী ক্ষত হয়।
ক্রনিক ব্রংকাইটিস এর লক্ষণ
যদি কমপক্ষে একটানা ৩ মাস কাশির সাথে কফ থাকে এবং এরকম অসুস্থতা পরপর ২ বছর দেখা যায়, তাহলে রোগীর ক্রনিক ব্রংকাইটিস হয়ে থাকতে পারে।
ক্রনিক ব্রংকাইটিস এর কারণ
দীর্ঘদিন যাবত দিনে ১০ টির বেশি সিগারেট খাওয়া ক্রনিক ব্রংকাইটিস এর প্রধান কারণ।
কয়লা ও খনিজ পদার্থের খনিতে কাজ করলেও এই রোগ হতে পারে।
কীটনাশক প্রস্তুত করার কারখানায় দীর্ঘদিন সেফটি মাস্ক ব্যবহার না করলেও এই রোগ হতে পারে।
২। একিউট বা তীব্র ব্রঙ্কাইটিস
শ্বাসনালিতে ক্ষণস্থায়ী প্রদাহের ফলে তীব্র ব্রঙ্কাইটিস হয়। এটি সাধারণ রোগ। সাধারণত ১ সপ্তাহের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়।
তীব্র ব্রঙ্কাইটিস এর লক্ষণ
- ঘনঘন কাশি
- জ্বর
- গলায় ব্যথা
- নিঃশ্বাসে সাঁ সাঁ শব্দ হয়।
তীব্র ব্রঙ্কাইটিস এর কারণ
সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ও নিউমোকক্কাল ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এই রোগ হয়।
ব্রংকাইটিস রোগ নির্ণয়
প্রাথমিক অবস্থায় ব্রংকাইটিসকে একটি সাধারণ ঠান্ডা লাগা থেকে আলাদা করা খুব কঠিন। তবে এ অবস্থার রোগ নির্ণয় করতে চিকিৎসক নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলো করে থাকেন –
- অ্যালার্জি অথবা অন্যান্য রোগের লক্ষণের জন্য থুতুর পরীক্ষা।
- বুকের এক্সরে করা।
- পালমোনারী ফাংশন টেস্ট ধার্য করা।
ব্রংকাইটিস এর চিকিৎসা
প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে তীব্র ব্রঙ্কাইটিস সহজে নির্মূল করা যায়। ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস ও যদি প্রথম ধাপে সনাক্ত করা হয় তবে চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় করা যায়।
ব্রংকাইটিস এর ঔষধ
ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে এন্টিভাইরাল এবং ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন রোধ করতে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। বহুল ব্যবহৃত এন্টিবায়োটিক হলো – এমক্সিসিলিন,সেফুরক্সিম,এজিথ্রোমাইসিন,লিভোফ্লোক্সাসিন ইত্যাদি।
শ্বাসকষ্ট কম করতে সালবুটামল,ইপ্রাসল ইনহেলার বা নেবুলাইজার এর মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়।
ব্রংকাইটিস এর ঘরোয়া চিকিৎসা
ব্রংকাইটিস এর ভেষজ ঔষধ | ব্যবহার |
সরিষার তেল | সরিষার তেলে আইসোথিয়োকানেটস উপাদান থাকে এটি শ্বাসনালির প্রদাহ কম করে ফলে শ্বাসনালির ভেতরে জমে থাকা কফ দূর হয়। বুকে গরম তেল মালিশ করলে ব্রংকাইটিস এর শ্বাস কষ্ট কমে। |
গোলমরিচের তেল | শ্বাসনালিকে প্রসারিত করে ফলে বায়ু চলাচল বৃদ্ধি পায়। শ্বাসকষ্ট অনেকটাই কমে। |
ইউক্যাপিল্টাস তেল | শ্বাস নালিতে জমে থাকা কফ তরল করে ফলে কাশির সাথে কফ বের হয়ে শ্বাসনালি পরিষ্কার হয়। |
হরিদ্রা | শ্বাসনালির প্রদাহ কমায় বায়ু প্রবাহ বৃদ্ধি করে। |
আদা ও তুলসি | শ্বাসনালির প্রদাহ দূর করতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর আদা ও তুলসি। গরম চা এর সাথে আদা ও তুলসি পাতার রস মিশ্রিত করে পান করলে ব্রঙ্কাইটিস এর সমস্যা মোটামুটি কমে। |
যষ্টিমধু | এটি কাশি ও শ্বাসনালির প্রদাহ নিবারক। |
লবঙ্গ | শ্বাসনালির ইনফেকশন দূর করতে এটি একটি শ্রেষ্ঠ ভেষজ। গরম পানি বা চা এর সাথে ফুটিয়ে পান করলে শ্বাসকষ্ট কমে। |
দারুচিনি ও তেজপাতা | অধিক কাশির কারণে স্বরভঙ্গ হলে এই ভেষজ বেশ আরাম দেয়। |
ব্রংকাইটিস কি ভালো হয়?
একিউট বা তীব্র ব্রঙ্কাইটিস সম্পূর্ণভাবে নিরাময়যোগ্য কিন্তু ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস সহজে নিরাময় করা যায় না।
কোন ভাইরাসের কারণে ব্রংকাইটিস হয়?
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ভাইরাসের কারণে ব্রংকাইটিস হয়।
ব্রংকাইটিস হলে করণীয়
- ধূমপান, মদ্যপান, তামাক বা সাদাপাতা খাওয়া বন্ধ করা।
- ডাক্তারের পরমার্শ অনুযায়ী রোগীর চিকিৎসা করানো।
- রোগীকে সহনীয় উষ্ণতা ও শুষ্ক পরিবেশে রাখা।
- পুষ্টিকর তরল ও গরম খাবার খাওয়ানো। যেমন: গরম দুধ, স্যুপ ইত্যাদি।
- রোগীর পূর্ণ বিশ্রাম নেওয়া।
ব্রংকাইটিস প্রতিরোধ করার উপায়
- ধূমপান ও তামাক সেবনের মতো বদ অভ্যাস ত্যাগ করা
- ধুলাবালি ও ধোঁয়াপূর্ণ পরিবেশে কাজ করা থেকে বিরত থাকা।
- শিশু বা বয়স্কদের যেন মাথায় ঠাণ্ডা না লাগে সেদিকে নজর রাখা।
লেখক
ডা. ইমানুয়েল হফ
বক্ষব্যাধি মেডিক্যাল অফিসার
ভ্যাঙ্কুবার,কানাডা
Tag- ব্রংকাইটিস কী ব্রংকাইটিস কী ব্রংকাইটিস কী ব্রংকাইটিস কী ব্রংকাইটিস কী ব্রংকাইটিস কী ব্রংকাইটিস কী ব্রংকাইটিস কী
Please Click on Just one Add to help us
মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।
এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা।