রাতে গাছের নিচে ঘুমানো উচিৎ নয় কেন?
রাতে গাছের নিচে ঘুমানো উচিৎ নয় কেন?……অনেক গল্পে আমরা পড়েছি যে রাতে শ্যওড়া গাছে ভূতের আনাগোনা থাকে।ঘন অন্ধকারে জঙ্গলের মধ্যে পথ চলতে গেলে গাছের পাতা বাতাসে সড়সড় করে শব্দ করলে পিলে চমকে যায় মনে হয় এই বুঝি ভূত এসে ঘাড়ে চেপে বসলো।
শাঁকচুন্নি, মেছোভূত,গেছোভূত,ব্রহ্মদৈত্য নামে কত ভূত যে গাছে বসে থাকে তার কোন ইয়াত্তা নেই।
এসব ভূত রাতে সক্রিয় হয় এবং গাছের নিচ দিয়ে যাওয়া পথিক কে আক্রমণ করে ঘাড় মটকায়। এসব গল্প শুনে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু আসলেই কি তাই? রাতে গাছের নিচে ঘুমালে কি সত্যি ভূতে ধরে?
তাহলে আসুন জানাযাক আসল বৈজ্ঞানিক কারণ, রাতে গাছের নিচে ঘুমানো উচিৎ নয় কেন?
আপনি আরো পড়তে পারেন…. এন্টিভেনম কি? সাপের বিষের প্রতিষেধক| কুকুর মিলনের সময় আটকে যায় কেন ?
গাছ দিনে অক্সিজেন দেয়
গাছ হলো স্বভোজি অর্থাৎ নিজের খাবার নিজে তৈরি করতে পারে।দিনের বেলা সূর্যের আলোতে গাছ নিজের খাবার নিজে তৈরি করে।সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে পানি, কার্বনডাইঅক্সাইড, ও ক্লোরোপ্লাস্ট এর সাহায্যে গাছ শর্করা জাতীয় খাবার তৈরি করে।
গাছের খাদ্য তৈরির এই প্রক্রিয়াকে বলে সালোকসংশ্লেষ। সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় কার্বনডাইঅক্সাইড গৃহীত হয় এবং অক্সিজেন উৎপন্ন হয়।
গাছ দিনের বেলা সূর্যের আলোতে প্রচুর শর্করা জাতীয় খাদ্য উৎপাদন করে সাথেসাথে প্রচুর অক্সিজেন ফ্রি দেয় আমাদের।গাছ দিনে অক্সিজেন দেয়।
গাছের পাতা ও অন্যান্য সবুজ অংশ এই শর্করা জাতীয় খাবার তৈরির ফ্যাক্টরি। আমরা বলতে পারি পাতা হলো গাছের রান্নাঘর। পাতায় খাবার তৈরি হওয়ার পর তৈরিকৃত খাদ্য শ্বসন প্রক্রিয়ায় ভেঙ্গে গিয়ে শক্তি ও কার্বনডাইঅক্সাইড তৈরি করে।
এই প্রক্রিয়া চলে কোষের সাইটোপ্লাজমে ও মাইটোকন্ড্রিয়াতে।শুধু উদ্ভিদ নয় সকল সবাত শ্বসনকারী প্রাণিতেও শ্বসন প্রক্রিয়া ৪ধাপে সম্পন্ন হয়।এই ৪ধাপের শেষ ধাপে যে বিক্রিয়া ঘটে তাকে অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন বলে।
অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন ধাপে শ্বসনে উৎপন্ন শক্তি স্থানান্তরিত হয় ইলেকট্রন ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম(ETS) এর মাধ্যমে। ETS এর সর্বশেষ ইলেকট্রন গ্রহীতা হলো অক্সিজেন।
তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম খাদ্য ভেঙ্গে শক্তি উৎপাদন করার জন্য গাছের অক্সিজেন দরকার হয়।গাছ, মানুষের মতই অক্সিজেন গ্রহণ করে।
গাছ রাতে অক্সিজেন নেয়
দিনের বেলা গাছ অক্সিজেন গ্রহণ করলেও সমস্যা নাই কারণ সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় আবার অক্সিজেন তৈরি করে।কিন্তু রাতের বেলা তো সূর্য উঠে না ফলে সালোকসংশ্লেষ ও ঘটে না।সালোকসংশ্লেষ না হলে তো অক্সিজেন ও তৈরি হয়না।
তাই গাছ গাছ রাতে অক্সিজেন নেয় বা শুধু অক্সিজেন গ্রহণ করে কিন্তু প্রস্তুত করে না পাশাপাশি প্রচুর কার্বনডাইঅক্সাইড তৈরি করে।
আপনি যদি রাতের বেলা গাছের নিচে ঘুমান তাহলে গাছও অক্সিজেন নিচ্ছে আপনিও নিচ্ছেন। গাছের সাথে অক্সিজেন নেওয়ার এই প্রতিযোগিতায় আপনি কখনই জিতবেন না।
এর কারণ গাছের এক বর্গ সেন্টিমিটার পরিমাণ পাতায় প্রায় ১০০০-১০০০০পত্ররন্ধ্র থাকে যা দিয়ে অক্সিজেন গ্রহণ করে।এবার ভাবুন তো গাছের পাতা কতগুলো?
তাহলে সব পাতা মিলে কত অক্সিজেন গ্রহণ করবে আর আপনি মাত্র দুটো নাকের ছিদ্র দিয়ে কত অক্সিজেন গ্রহণ করবেন?
রাতে গাছের নিচে ঘুমানোর অপকারিতা
রাতে গাছের নিচে ঘুমালে যেসব ভয়ঙ্কর ক্ষতি হতে পারে
রাতে বড় গাছের নিচে ঘুমানোর অপকারিতা
- ১। স্বাভাবিক নিয়মে অক্সিজেন ঘাটতি হলে মস্তিষ্ক ভালোভাবে কাজ করতে পারে না। মস্তিষ্ক জরুরি অবস্থা জারি করে শুধু অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ গুলোকে সচল রাখতে চেষ্টা করে।মস্তিষকের কম গুরুত্বপূর্ণ অংশ কাজ করা বন্ধ করে দেয় এর ফলে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।শুধু পূর্বে জমা স্মৃতি হতে মস্তিষ্ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।এই অবস্থায় মানুষ অসংলগ্ন কথা বলতে থাকে বা অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। তখন আমরা বলি ভূতে ধরেছে।
- ২। তিব্র অক্সিজেন ঘাটতিতে মস্তিষ্কের কোন অংশ চিরদিনের মত কার্যক্ষমতা হারাতে পারে।এর ফলে আপনি স্থায়ীভাবে পাগল হয়ে যেতে পারেন।
- ৩। গভীর ঘুমের মধ্যে অক্সিজেন ঘাটতি হলে আপনি সচেতন হওয়ার আগেই মস্তিষ্ক জরুরী অবস্থা জারি করবে ফলে হাত পা অবস হয়ে চলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবেন।আপনি ইচ্ছা করলেও স্থান ত্যাগ করতে পারবেন না। ঘুমের মধ্যেই কোমায় চলে যাবেন।
- ৪। শ্বাস কষ্ঠ বা হাপানি রোগ থাকলে রাতে গাছের নিচে গেলে রোগ বৃদ্ধি পাবে।
তবে বাতাস থাকলে বড় গাছের নিচে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন কারণ প্রবাহমাণ বাতাস বিভিন্ন স্থান থেকে অক্সিজেন বহন করে নিয়ে আসে।এতে অক্সিজেন ঘনত্ব ঠিক থাকে।
অক্সিজেনের বিষয় ছাড়াও আরো কিছু কারণ আছে রাতে গাছের নিচে না ঘুমানোর।
- ১। রাতে গাছে প্রচুর পাখি বিশ্রাম নিতে বসে থাকে। এই সব পাখিদের শিকার করার জন্য বিষধর সাপ গাছে ঘাপটি মেরে বসে থাকে। আপনার উপস্থিতি এদের ভালো না লাগলে এরা যে কোন সময় ছোবল দিতে পারে।
- ২।অনেক শিকারি প্রাণী বড় গাছের কোঠরে দিনের বেলা বিশ্রাম করে। রাতে এরা শিকারের খোঁজে বাইরে বেড় হয়ে আসে। এদের সামনে আপনি পরে গেলে সহজ শিকার মনে করে আপনাকে আক্রমণ করবে।
তাই আসুন নিজেকে সুরক্ষিত রাখি, রাতে গাছের নিচে ঘুমানোর অভ্যাস ছেড়ে দিন।
রাতে অক্সিজেন দেয় যেসকল গাছ
অ্যালোভেরা,অর্কিড,স্নেক প্ল্যান্ট,পিপুল গাছ, নিম গাছ এই গাছগুলি রাতের বেলা অক্সিজেন নিঃসরণ করে এবং আয়ু বাড়ায়। রাতে বেশী অক্সিজেনের জন্য এই গাছগুলি শোবার ঘরে রাখুন ,আপনাকে আরও বেশি পরিমাণে অক্সিজেন দেবে,ঘর ভরে থাকবে সতেজ বাতাসে।
রাতে গাছের নিচে ঘুমানো উচিৎ নয় কেন?
আপনি যদি রাতের বেলা গাছের নিচে ঘুমান তাহলে গাছও অক্সিজেন নিচ্ছে আপনিও নিচ্ছেন। গাছের সাথে অক্সিজেন নেওয়ার এই প্রতিযোগিতায় আপনি কখনই জিতবেন না।
rate gaser niche ghumano uchit noy keno?
rate boro gaser niche ghumano uchit noy keno? night e tree er niche ghumano harmful, tree rate oxizen ney, tree dine oxizen dey, rate oxizen dey je sob tree,
Tag: রাতে গাছের নিচে ঘুমানো রাতে গাছের নিচে ঘুমানো রাতে গাছের নিচে ঘুমানো রাতে গাছের নিচে ঘুমানো
Please Click On Just One Add To Help Us
মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।
এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।
All photo credit Goes to sutterstock.com