হেরোইন কিভাবে তৈরি হয়?
কাওকে খুব রোগা পাতলা দেখলে আমরা হামেশাই বলে থাকি হেরোইঞ্চি বা হেরোইন খোঁড়। নেশার রাজ্যে হেরোইন রাজার মতই একটি নেশা। এটি মারণ নেশা হিসেবেই বেশি পরিচিত। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে এই মারণ নেশা হেরোইন কিভাবে তৈরি হয়? তাহলে আসুন আজ জেনে নেই হেরোইন কিভাবে তৈরি হয়?
আপনি আরো পড়তে পারেন…….. কোন মাদক দেহে কতদিন থাকে? ….. এলএসডি কি? ভয়ঙ্কর মারণ নেশা এলএসডি! …. শয়তানের শ্বাস মাদক কী? সবচেয়ে ভয়ংকর মাদক স্কোপোলামিন!
হেরোইন কী?
হেরোইন অপিওয়েড ধরনের শক্তিশালী পেইনকিলার বা ব্যথানাশক ঔষধ। কিন্তু মাদকদ্রব্য হিসেবেই এই পেইনকিলা্রের পরিচিতি ও চাহিদা বেশি। স্ম্যাক, বিগ এইচ, কাবালা, ব্ল্যাক টার, এইট বল, জাঙ্ক, টিএনটি ইত্যাদি ছদ্মনামে এই ড্রাগ বেশ জনপ্রিয়।
হেরোইন আবিষ্কারের ইতিহাস
১৮৭৪ সালে সি. আর. এডলার রাইট মরফিনের সাথে অ্যাসিটাইল মূলক যোগ করে হেরোইন সংশ্লেষণ করেন। ১৮৯৮ সালে প্রথম তা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা হয়। ১৯৯০ সালে ঔষধ হিসেবে চিকিৎসাক্ষেত্রে হেরোইনের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়।চিকিৎসাবিজ্ঞানে হেরোইন ডায়ামরফিন (diamorphine) হিসাবে পরিচিত।
কোন দেশে হেরোইন তৈরি হয়?
চীন, মেক্সিকো, ইরান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ইত্যাদি দেশে হেরোইন তৈরি করে। আফিম ফুলের (opium poppy) দুধের মত সাদা আঠা থেকে হেরোইন। আফিম গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Papaver somniferum আফিম গাছ শুষ্ক পাহাড়ি অঞ্চলে ভালো জন্মে। একারণে আফগানিস্থানের পাহাড়ি অঞ্চলে আফিম চাষ করা হয় বেশি।
কি দিয়ে হেরোইন তৈরি হয়?
আফিম গাছের যখন ফুল ফুটে তখন এটা দেখতে বেশ সুন্দর লাগে কিন্তু এই ভয়ঙ্কর সুন্দর ফুলের বীজ থেকেই তৈরি হয় প্রাণঘাতী মারণ নেশার বস্তু হেরোইন।ফুল থেকে যখন কলস আকৃতির ফল হয় তখন এই ফলের গায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ২ থেকে ৩ টি দাগ কাটা হয়।এই কাটা দাগ বরাবর সাদা দুধের মত আঠা বের হয়। সাদা দুধের মত এই নিরিহ বস্তুই ল্যাবর্যাটরিতে যাবার পর মানব জাতীর অভিশাপ হেরোইনে পরিণত হয়।দুধের মত আঠা থেকে কোডিন ও উৎপাদন করা হয়।
হেরোইন তৈরির পদ্ধতি
সাদা আঠাকে ফারমেন্ট করে বাদামি বর্ণের কাঁচা আফিম তৈরি করা হয়। কাঁচা আফিম কে ল্যাবর্যাটরিতে মরফিনে রূপান্তর করা হয়। কাচের পাত্রে সম পরিমাণ মরফিন ও অ্যাসিটিক অ্যানহাইড্রাইড (acetic anhydride) নিয়ে ৮৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপে প্রায় ৬ ঘন্টা জ্বাল করা হয়। এর ফলে মরফিন বিক্রিয়া করে ডাইঅ্যাসিটাইলমরফিন বা অবিশুদ্ধ হেরোইন তৈরি হয়। ডাইঅ্যাসিটাইলমরফিন কে ক্লোরোফরম ও পানি দিয়ে ধৌত করা হয় এর ফলে তরল হেরোইন তৈরি হয়।
এই তরল হেরোইন কে দানাদার করার জন্য এর মধ্যে সোডিয়াম কার্বনেট দিয়ে বিক্রিয়া ঘটানো হয়। এতে দানাদার হেরোইন তৈরি হয় কিন্তু এতে সোডিয়াম কারবোনেট গুরা মিশ্রিত থাকে তাই একটিভ চারকোল ফিল্টারে এই দ্রবনকে ফিল্টার করলে শুধু হেরোইন পাউডার পাওয়া যায়। এই হেরোইন পাউডার কে এলকোহল দিয়ে জ্বাল করলে বিশুদ্ধ সাদা পাউডার হেরোইন পাওয়া যায়।
হেরোইনের প্রকারভেদ
পৃথিবীর নানা দেশে নানান বর্ণের হেরোইন পাওয়া যায় যেমন- কালচে বাদামি,বাদামি,ধুসর,লালচে,এবং কালো কিন্তু সাদা পাউডার হেরোইন সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে এবং এটিকে আসল হেরোইন বলা হয়।‘মেক্সিকান মাড (mud)’ বা ‘বস্ন্যাক টার (tar)’ হেরোইন, যুক্তরাষ্ট্রে বেশি জনপ্রিয়।
Please Click On Just One Add To Help Us
মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।
এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।