কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন এর পার্থক্য কি?
করোনা মহামারীর এই সংকটকালে যে শব্দগুলো আমাদের মুখস্ত হয়ে গিয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২টি শব্দ হলো কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন। শব্দ দুটির মানে অনেকে একই মনে করে। কিন্তু এদের মধ্যে সূক্ষ্ম একটি পার্থক্য আছে। তাহলে আর দেরি নয় আসুন এখনি পার্থক্যের জট খুলতে শুরুকরি….
আপনি আরো পড়তে পারেন….কখন মাস্ক পরা উচিৎ নয়
কোয়ারেন্টাইন কি?
কোয়ারেন্টাইনের মাধ্যমে সেই সকল সুস্থ ব্যক্তিদের (যারা কোন সংক্রামক রােগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছে) অন্য সুস্থ ব্যক্তি থেকে আলাদা রাখা হয়, তাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং তারা ঐ সংক্রামক রােগে আক্রান্ত হয় কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
কোয়ারেন্টাইন কোন ভাষার শব্দ?
ইতালীয় ভাষার শব্দ হলো কোয়ারেন্টাইন।
কোয়ারেন্টাইন শব্দের উৎপত্তি
একটি ইতালীয় শব্দ “কোয়ারান্তিনা”
(ইতালীয়: Quarantina) থেকে “কোয়ারেন্টিন” শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। ইতালীয় ভাষায় এর অর্থ “চল্লিশ (দিন)”।
১৫০০ সালে ইউরোপে বিউবনিক প্লেগ রোগের আক্রমণে মহামারী দেখা দেয়। সে সময়ে প্লেগ আক্রান্ত কোন স্থান থেকে মালামাল নিয়ে জাহাজ অনাক্রান্ত অঞ্চলের বন্দরে আসলে ঐ জাহাজের সকল নাবিক ও লোকদের বন্দরে ৪০ দিনের জন্য পৃথক করে রাখা হত যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় তারা রোগে আক্রান্ত কিনা।
এই ৪০ দিন পার হলে তাদের শহরে প্রবেশ করতে দেয়া হতো। কেউ আক্রান্ত থাকলে তারা এই ৪০ দিনের মধ্যেই মারা যেত।
এই ধারণা একসময় গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পরে এবং কোয়ারেন্টাইন শব্দটি পরিচিতি পায়।
কোয়ারেন্টাইনের প্রকারভেদ
এটি সাধারণত দুই প্রকার।যথা হোম কোয়ারেন্টাইন বা সেল্ফ কোয়ারেন্টাইন ও মেডিকেল কোয়ারেন্টাইন।
হোম কোয়ারেন্টাইন কি?
রোগ লক্ষণ প্রকাশ পায়নি কিন্তু সন্দেহ আছে যে রোগে আক্রান্ত হয়েছে বা রোগে আক্রান্ত হয় নি এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কোন ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি না করে নিজ বাড়িতে একটি নির্দিষ্ট বসবাসযোগ্য কক্ষে পরিবার থেকে আলাদা রাখাকে বলে হোম কোয়ারেন্টাইন বা সেল্ফ কোয়ারেন্টাইন।
এসময় পরিবারের সদস্যদের সাথে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং মাস্ক পরতে হবে।
মেডিকেল কোয়ারেন্টাইন?
রোগে আক্রান্ত সন্দেহে কোন মানুষকে হাসপাতালে চিকিৎসকদের তত্বাবধানে কোয়ারেন্টাইন করা কে বলে মেডিকেল কোয়ারেন্টাইন।
কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ কত?
এর মেয়াদ নির্ভর করে আক্রান্ত রোগের ধরণের উপর। রোগের জীবাণু যতদিন সুপ্ত অবস্থায় থাকে কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ ততদিন হয়। যেমন কোন জীবাণু যদি সংক্রমণ করার ১৪ দিন পর রোগ লক্ষণ প্রকাশ করে তবে তার কোয়ারেন্টাইন সময় হবে ২০ দিন। করোনাভাইরাস এর ক্ষেত্রে এটা ১৪ দিন কারণ জীবাণুটি ৭দিনের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ করতে শুরু করে।
আইসােলেশন কি?
কোয়ারেন্টাইনের মতই নিয়মকানুন মেনে
সংক্রামক রােগে আক্রান্ত অসুস্থ ব্যক্তিদের অন্য সুস্থ ব্যক্তি হতে আলাদা রাখা হয় একে আইসোলেশন বলে।
কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন এর পার্থক্য কি?
ছকের মাধ্যমে পার্থক্য উপস্থাপন করা হলো-
কোয়ারেন্টাইন | আইসোলেশন |
কোয়ারেন্টাইনের মাধ্যমে সংক্রামক রােগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছে এমন সুস্থ ব্যক্তিদের আলাদা রাখা হয় ও তাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হয় | আইসােলেশন এর মাধ্যমে সংক্রামক রােগে আক্রান্ত অসুস্থ ব্যক্তিদের আলাদা রাখা হয়। |
কোয়ারেন্টাইনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণাধীন সুস্থ ব্যক্তিবর্গ ঐ নির্দিষ্ট সংক্রামক রােগে আক্রান্ত হয় কিনা তা দেখা হয় | আইসােলেশন এর মাধ্যমে অসুস্থ ব্যক্তি হতে যেন সুস্থ ব্যক্তিরা আক্রান্ত না হয় সে জন্য অসুস্থ ব্যক্তিদের অন্য সুস্থ ব্যক্তি হতে আলাদা রাখা হয়। |
এটি নিজ গৃহে করার অনুমতি আছে বা নিয়মে কিছু শীথিলতা আছে। | এটি স্বাস্থসেবা কেন্দ্রে হয় বেশি। নিয়ম কঠোরভাবে পালন করা হয়। |
সন্দেহের অবসান ঘটাতে এটি করা হয় | সংক্রমণ প্রতিরোধ করা হয়। |
সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের উপস্থিতি প্রয়োজন নেই। | চিকিৎসকের তত্বাবধানে এটি করা হয়। |
তথ্যসূত্রঃ আইইডসিআর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
Tag: কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন এর পার্থক্য কি?কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন এর পার্থক্য কি?কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন এর পার্থক্য কি?কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন এর পার্থক্য কি?
Please click on Just one Add to Help Us
মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।
এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।