দ্য আলকেমিস্ট বই রিভিউ। The Alchemist Bangla Review!
বর্তমানে সারাজাগানো একটি মাস্টার পিস বই দ্য আলকেমিস্ট। আজ আপনাদের কাছে প্রেজেন্ট করছি দ্য আলকেমিস্ট বইয়ের সবচেয়ে সহজ কিন্তু বিস্তারিত রিভিউ।
আপনি আরো পড়তে পারেন……. ঈশপের নীতিমূলক গল্প।মোরাল স্টোরি।পার্ট-১ ….. ঈশপের গল্প! বাংলা মোরাল স্টোরি! পার্ট-৩ … ঈশপের গল্প-পার্ট-২ … ঈশপের গল্প| বাংলা মোরাল গল্প!পার্ট-৪ ….. বাংলা মোরাল স্টোরি! ঈশপের গল্প! পার্ট-৫ …
দ্য আলকেমিস্ট বুক রিভিউ
লেখক পরিচিতি
১৯৪৭ সালে ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেইরো’তে জন্মগ্রহন করেন পাওলো কোয়েলহো। বাল্যকালে কোয়েলহো তার মা কে বলেছিলো বড় হয়ে সে লেখক হবে।ছেলের কথা শুনে মা বলেছিলো ” তোমার বাবা একজন ইঞ্জিনিয়ার সে জগতের বাস্তবিক বিষয় নিয়ে চিন্তা করে আর তুমি তার ছেলে হয়ে কাল্পনিকতার উপর নির্ভর করে লেখক হতে চাও?”
কিন্তু ‘বিধাতার লিখন না যায় খণ্ডন’ এই কথা আবারো সত্যি করার জন্যই বোধহয় উপরওয়ালা তার খেল দেখালেন কোয়েলহো কে লেখক বানানোর মাধ্যমে।
দি নিউ ইয়র্ক টাইমস এর তথ্যমতে, কোয়েলহোর লেখা “দ্য এ্যালকেমিস্ট” উপন্যাসটি এখন পর্যন্ত ৮০টি ভাষায় অনুবাদ হয়েছে এবং ৮ কোটি ৩০ লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছে। একজন জীবিত লেখক হিসেবে এত ভাষায় অনুবাদিত বই আর কারো নেই।
এমন কৃর্তীর কারণে জীবিত লেখক হিসেবে গিনেস-বুকে স্থান পেয়েছে কোয়েলহোর নাম।দ্য আলকেমিস্ট তার সেরা কাজ।দ্য এ্যালকেমিস্ট উপন্যাসটি মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যে লেখা হয়েছিলো।
দ্য আল কেমিস্ট বই এর চরিত্র
সান্তিয়াগো(Santiago)
এই উপন্যাসটির মূল চরিত্র সান্তিয়াগো। আন্দালুসিয়ান এই রাখাল ছেলেটি বই পড়তে জানে। তার বাবা-মা চেয়েছিলো সে যাজক হবে। কিন্তু সে পৃথিবীটা ঘুরে দেখতে চায়। তাই, স্বপ্নে দেখা গুপ্তধনের খোঁজে মিশরের দিকে যাত্রা শুরু করে।
দ্য আল কেমিস্ট(The Alchemist)
দ্য আল কেমিস্ট একটি রহস্যময় চরিত্র।২০০ বছর বয়স্ক একজন অভিজ্ঞ মানুষ।যার রসায়ন বিজ্ঞানে বিস্তর অভিজ্ঞতা আছে। সে আল ফায়ুম মরুদ্যানে বাস করে।সে কালো আলখেল্লা পরে এবং সাদা ঘোড়ার পিঠে যাতায়াত করে।তার হাতে সবসময় একটি তরবারি থাকে।
তার হাতে দার্শনিক পাথরও শোভা পায়। সে অমৃতরস সংগ্রহ করেছে।তিনি প্রায়শ সাংকেতিক ভাষায় আধ্যাতিক কথা বলেন।তিনি পৃথিবীর প্রাণ সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন এবং ব্যক্তিগত কিংবদন্তির গুরুত্ব সম্পর্কে নির্দেশনা দেন।
কাচ ব্যবসায়ী (Crystal Merchant)
বণিক চরিত্রটি একজন মূল্যবান পাথর ব্যবসায়ী যে জনমানবশূন্য একটি পাহাড়ে বাস করে এবং সেখানে তার দোকান আছে।একসময় তার দোকানের বেশ নামডাক থাকলেও বর্তমানে নগরায়নের ফলে তার ব্যবসা ভালো চলছে না।সে খুব ধার্মিক মুসলিম এবং কোমল হৃদয়ের মানুষ।সে পরিবর্তন কে ভয় পায়।
ইংরেজ যুবক(Englishman)
এই চরিত্রের মানুষটি একজন বিজ্ঞানের ছাত্র যে রসায়নের গোপন রহস্য জানতে একজন সত্যিকার আলকেমিস্টের খোঁজে ঘুরে বেরায়।সে একজন সন্দেহবাদী মানুষ।
মেলচিজেডেক(Melchizedek)
সালেমের রাজা বলে পরিচয় দেয়।সে একজন বৃদ্ধ ও জ্ঞানী ব্যক্তি সাথে সাথে একজন যাদুকর। অতিত ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সে সব জানে। গল্পের নায়ক সান্তিয়াগো কে ভবিষ্যত সম্পর্কে ধারণা দেয় এবং গুপ্তধন খুঁজতে সাহায্য করে।
ফাতিমা(Fatima)
এই উপন্যাসের নায়িকা হলো ফাতিমা।সে আল ফায়ুম মরুদ্যানে বাস করে। ফাতিমা সান্তিয়াগো কে খুব ভালোবাসে তাকে বিয়ে করতে চায় কিন্তু সান্তিয়াগোর স্বপ্ন পূরনের জন্য তাকে তার পথে চলতে বলে এবং তার ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করে।
সত্যিকার ভালোবাসার একটি অপরূপ দৃষ্টান্ত এই ফাতিমা। ভালোবাসা কখনো স্বপ্ন জয়ের পথে বাঁধা সৃষ্টি করে না এটার প্রমাণ ফাতিমার ভালোবাসা।
জিপসি তান্ত্রিক বুড়ি(Gypsy)
একজন ভবঘুরে মহিলা যিনি তারিফাতে থাকেন।তিনি স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা করতে পারেন পাশাপাশি তিনি একজন হস্তরেখা বিশারদ ও কালাজাদুতে দক্ষ। তার কাছে সবসময় যিসু খৃষ্টের ছবি থাকে।সান্তিয়াগো কে তিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলে দেন এবং গুপ্তধনের ভাগ চান।
উটচালক(Camel Driver)
একজন বন্ধুসুলভ ধর্মপ্রাণ মুসলিম। তার একসময় ফলবাগান ছিলো কিন্তু বন্যায় বাগান নষ্ট হয়ে যায় তাই সে এখন মক্কার দিকে যাত্রা করছে আল্লাহর কাছে নিজেকে সপে দিতে। তার কাছে অর্থ না থাকলেও সে বেশ সুখি।
পশম ব্যবসায়ীর মেয়ে
সান্তিয়াগো প্রথম এই মেয়েয়ের প্রেমে পরে। সে ব্যবসায়ীর কাছে পশম বিক্রি করতে যেতো এই মেয়েকে দেখার জন্য।
এছাড়াও আরো কিছু চরিত্র আছে উপন্যাসটিতে
চরিত্রের নাম | পরিচয় |
পশম ব্যবসায়ী | ভেড়ার পশম কেনে |
আল ফায়ুম এর উপজাতির সর্দার | সান্তিয়াগো একে আগাম সংকেত দিয়েছিলো শত্রুদের হামলার বিষয়ে। |
সন্ন্যাসী | মিশরের পিরামিডের কাছে বাস করে। |
সান্তিয়াগোর বাবা | তিনি চান তার ছেলে ধর্মযাজক হোক। |
যুবক | স্প্যানিশ ও আরবি উভয় ভাষা জানে |
চকলেট বিক্রেতা | তাঞ্জিয়ারে বাস করে। সে নিজের পেশাকে ভালোবাসে। |
ক্যারাভান লিডার | দুঃসাহসী মানুষ, তিনি তাঞ্জিয়ার থেকে মিশরে যাওয়ার জন্য যাত্রীদের পথ দেখান। |
দ্য আল কেমিস্ট বই রিভিউ
খুবই সহজ সরল কাহিনীতে লেখক তুলে ধরেছেন সান্তিয়াগো নামের এক কিশোরের জীবনের কথা। যে কিনা ভালোবাসে স্বপ্নে দেখতে। যার কাছে ঈশ্বর বা পাপ সম্পর্কে জানার চেয়ে পৃথিবী সম্পর্কে জানার আগ্রহ বেশি তীব্র।
এই উপন্যাসটির মূল চরিত্র সান্তিয়াগো। আন্দালুসিয়ান এই রাখাল ছেলেটি বই পড়তে জানে। তার বাবা-মা চেয়েছিলো সে যাজক হবে। কিন্তু সে পৃথিবীটা ঘুরে দেখতে চায়।
দ্য আল কেমিস্ট বই কাহিনী সংক্ষেপ
সান্তিয়াগো মেষ বা ভেড়া পালন করে এবং ভেড়ার পশম বিক্রি করে। এতে তার বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে দিন কেটে যায়। যে পশম ব্যবসায়ীর কাছে সে পশম বিক্রি করতো তার একটা মেয়ে ছিলো, সান্তিয়াগো সে মেয়ের প্রেমে পরে যায় তাকে বিয়ে করার স্বপ্ন দেখতে থাকে। এভাবে তার জীবন সুখেই কেটে যাচ্ছিল।
একদিন সে ভেড়ার পশম বিক্রি করার জন্য দোকানে যাচ্ছিলো পতিমধ্যে রাত নেমে আসে। সে আশ্রয়ের জন্য একটি ভাঙ্গা চার্চে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয়।চার্চের একটি ডুমুর গাছের নিচে সে ঘুমিয়ে পরে।
রাতে ঘুমের মধ্যে সে স্বপ্নে দেখে একটি ছোট বালক তার হাত ধরে একটি পিরামিডের কাছে নিয়ে যায় এবং বলে এর নিচে গুপ্তধন আছে। সান্তিয়াগোর ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং সে অস্থির হয়ে পরে কারণ এমন স্বপ্ন সে আগেও দেখেছিলো। সকালে সে একজন তান্ত্রিক জিপসি বুড়ির কাছে যায় স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানার জন্য।বুড়ি তাকে বলে সে যদি গুপ্তধনের ১০ ভাগের এক ভাগ তাকে দেয় তাহলে সে স্বপ্নের মানে বলে দেবে।
সান্তিয়াগো রাজি হয় হয় এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা শুনে নেয়।বুড়ি স্বপ্নের ব্যাখ্যায় বলে সান্তিয়াগো কে মিশর যেতে হবে পিরামিডের কাছে গুপ্তধন খোঁজার জন্য।সান্তিয়াগো তাই, স্বপ্নে দেখা গুপ্তধনের খোঁজে মিশরের দিকে যাত্রা শুরু করে। পতিমধ্যে তার সঙ্গে দেখা হয়, নিজেকে সালেমের রাজা দাবি করা এবং ভিখারী বেশে থাকা এক বৃদ্ধের সঙ্গে।যার নাম মেলচিজেদেক।
সান্তিয়াগো বৃদ্ধের পোষাক ও চালচলন দেখে তাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছিলো কিন্তু মেলচিজেদেক তাকে ডাক দেয় এবং কথা বলে। সে বলে, স্বপ্নকে অনুসরণ করা উচিত। সব ভেড়া বিক্রি করে টাকা জোগার করে মিশরের পথে বের হওয়া উচিত বলে পরামর্শ দেয় মেলচিজেদেক। বৃদ্ধের জ্ঞানগর্ভ পরামর্শ ও বিচক্ষণতা দেখে সান্তিয়াগো মিশরে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্প করে।
একদিন সে সব ভেড়া বেঁচে টাকা জোগার করে মিশরের পথে যাত্রা শুরু করে। এক দালালের সাথে সান্তিয়াগোর দেখা হয় সেই দালাল তাকে বোকা বানিয়ে তার সমস্ত টাকা নিয়ে গায়েব হয়ে যায়। এরপর সান্তিয়াগো খুব ভেঙ্গে পরে ভাবতে থাকে ভেড়া চরিয়ে সে কতই না সুখে ছিলো কিন্তু এই গুপ্তধনের চক্করে পরে তার সব গেলো তাই সে আর এ পথে যাবে না সোজা বাড়ি ফিরে যাবে।
কিন্তু তার হঠাৎ মেলচিজেদেক এর কথা মনে পরে যায় ঐ বৃদ্ধ বলেছিলো যাত্রা পথে অনেক বাঁধা আসবে তাই বলে স্বপ্নের পথ থেকে সরে যাওয়া যাবে না। সব বাঁধা পেরিয়ে নিজের স্বপ্নের পথে চলতে হবে।
সান্তিয়াগো এবার টাকা যোগার করার জন্য পাহাড়ের উপর অবস্থিত এক কাচের আসবাব বিক্রিকারী দোকানদারের দোকানে কাজ নেয়। সে লক্ষ্য করে এই পথে অনেক লোক যাতায়াত করে কিন্তু তাদের চা বা কফি পান করার মত কোন দোকান সেই। এই ভেবে সান্তিয়াগো একটি চা-কফির দোকান দেয়।
সে পরিষ্কার কাচের পাত্রে চা-কফি পরিবেশন করতো এবং অত্যন্ত ভদ্রতার সাথে কাস্টমারদের আপ্যায়ন করতো এতে করে খুব দ্রুত তাদের ব্যবসা বড় হতে লাগলো এবং প্রচুর অর্থ উপার্জন করে ফেললো। তার দিন বেশ সুখেই কাটছিলো কিন্তু সে আবার তার স্বপ্নের কথা মনে করে এবং অস্থির হয়ে উঠে।
একদিন ব্যবসা ছেড়ে জমানো অর্থ নিয়ে আবার মিশরের পথে যাত্রা করে।সান্তিয়াগোর মূল দর্শন হলো লেগে থাকো নিরন্তরভাবে, স্বপ্ন জয় তোমারই হবে। মরুভূমিতে যাত্রাকালে তার সাথে এক ইংরেজ যুবকের দেখা হয়।
এই যুবক মিশরে যাচ্ছে এক আলকেমিস্টের খোঁজে যে যেকোন ধাতুকে সোনায় রূপান্তর করতে পারে এবং অমৃত তৈরি করতে পারে।সান্তিয়াগো এই যুবকের সাথে আলকেমিস্ট কে খুঁজতে বের হয়।
তারা আল ফায়ুম মরুদ্যানে পৌছায় সেখানে সান্তিয়াগোর সাথে ফাতিমা নামে এক আরব মরু কন্যার দেখা হয়। প্রথম দর্শনেই ফাতিমাকে তার ভালোলাগে এবং তার প্রেমে পরে। ফাতিমা ও তার প্রেমে পরে। দুজনে বিয়ে করে সুখি হতে চায়।ফাতিমার সাথে একটু সাক্ষাত পেতে উদগ্রীব থাকতো সান্তিয়াগো।
কিন্তু এই মিলনে বিরহ তৈরি করে সান্তিয়াগোর স্বপ্ন। সে তার স্বপ্নের কথা ফাতিমাকে জানায়। ফাতিমা সান্তিয়াগো কে স্বপ্নের পথে চলতে বলে এবং তার জন্য আমৃত্যু অপেক্ষা করবে বলে কথা দেয়।
আল ফায়ুম মরুদ্যানে ঘোরার সময় সান্তিয়াগো আকাশে দুটি বাজ পাখিকে লড়াই করতে দেখে বুঝতে পারে এই এলাকায় শত্রুপক্ষ হামলা করবে তাই সে এই খবর এলাকার সর্দার কে জানায়। সর্দার তার কথা হেসে উড়িয়ে দেয়।
কিন্তু সান্তিয়াগোর জেদের কারণে সর্দার শর্ত দেয় যে যদি হামলা না হয় তাহলে সান্তিয়াগোর জীবন যাবে আর হামলা হলে তাকে পুরস্কার দেয়া হবে। সান্তিয়াগোর কথা মত সর্দার হামলা প্রতিরোধের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলেন এবং যোদ্ধাদের মোতায়েন করলেন।
সত্যি সত্যি হামলা হলো কিন্তু আগাম প্রস্তুতির জন্য আল ফায়ুমের জনগণ রক্ষা পেলো। এই ঘটনায় খুশি হয়ে সর্দার তাকে প্রচুর অর্থ পুরস্কার দিলো সাথে বড় পদে চাকুরি দিলো।
এবার সান্তিয়াগো ভাবতে থাকে তার কাছে অনেক টাকা আছে এবং ভালো চাকুরি আছে তাই সে ফাতিমাকে বিয়ে করে সুখে সংসার করবে। এই কথা শোনার পর ফাতিমা তাকে বলে তুমি তোমার স্বপ্নের পথে চলো।
ফাতিমা তাকে জানায়, মরুভূমি তাদের কাছ থেকে আপনজন কেড়ে নেয়। মাঝে মাঝে আর ফিরে আসে না তারা। আরও বলে, ”কেউ কেউ সত্যি ফিরে আসে। তখন আশায় বুক বাঁধে অন্যেরা। আমি হিংসা করতাম সে সব মেয়েকে। এখন থেকে আমিও একজনের অপেক্ষায় থাকব।”
ফাতিমার নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় সে বুঝতে পারে, ভালোবাসা মানুষের স্বপ্নকে পাল্টে দেয় না।
আমাদের অনেকের ধারণানুযায়ী ভালোবাসা শব্দটি লক্ষ্য অর্জনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে! এটা ভিত্তিহীন ধারণা ছাড়া কিছুই না।
কেননা,ভালোবাসা কাউকে কখনো লক্ষ্য থেকে সরিয়ে দিতে চায় না। কেউ যদি লক্ষ্য ছেড়ে দেয়, বুঝতে হবে সে ভালোবাসা সত্যি না।
হৃদয় কাঁপে গল্পটি পড়ার সময়। হৃদয়ঙ্গম করার বিশেষ শক্তি থাকতে হবে। অনুভূতিতে ধাক্কা দিবে। প্রেম, ভালোবাসা, যুদ্ধ, বর্বরতা, স্বপ্ন, দর্শন সব মিলিয়ে টানটান উত্তেজনা সৃষ্টি করতে সক্ষম উপন্যাসের কাহিনী।
সান্তিয়াগো ও ইংরেজ যুবক ফাতিমার কাছ থেকে আলকেমিস্টের খোঁজ জেনে নেয় এবং তার সাথে দেখা করার জন্য যাত্রা শুরু করে।তারা আলকেমিস্টের দেখা পায়।
আলকেমিস্ট ইংরেজ যুবক কে বলে তুমি ১০ বছর ধরে আমার খোঁজ না করে যদি সোনা তৈরির উপায় নিয়ে গবেষণা করতে তাহলে এতদিনে তুমি তোমার কাজে সফল হতে তাই আর দেরি না করে কাজ শুরু করো এবং ঘরে ফিরে যাও।
আলকেমিস্ট সান্তিয়াগো কে গুপ্তধন খুঁজে পেতে সাহায্য করবে বলে কথা দেয়। তারা দুজনে মিশরের পিরামিডের দিকে যাত্রা শুরু করে। পতিমধ্যে একদল ডাকাত তাদের সব অর্থ কেড়ে নেয় এবং তাদের হত্যা করতে চায়।
তখন আলকেমিস্ট ডাকাতদের বলে এই ছেলেটি হাওয়ায় মিশে যেতে পারে একে হত্যা করো না। ডাকাতরা বলে তোমাকে তিন দিন সময় দিলাম এর মধ্যে বাতাসে রূপান্তরিত হতে না পারলে তোমাকে হত্যা করবো। সান্তিয়াগো পরে যায় মহা বিপদে।সে ভেবে পায়না কি করবে। সে তো হাওয়ায় রূপান্তরিত হতে পারে না।
আলকেমিস্ট তাকে পরামর্শ দেয় মন দিয়ে চেষ্টা করো তুমি অবশ্যই পারবে।দুই দিন চেষ্টা করে কোন ফল হয় না। তিন দিনের দিন সান্তিয়াগো ধ্যানে বসে এবং একমনে ধ্যান করতে থাকে। হঠাৎ সে হাওয়ায় রূপান্তরিত হয় এটা দেখে ডাকাতরা ভীষণ ভয় পায় এবং পালিয়ে যায়।
এবার দুজন পথ চলতে থাকে। একটি পাহাড়ের কাছে পৌছে আলকেমিস্ট কিছু তামাকে সোনা তে পরিণত করে। এই সোনাগুলো সান্তিয়াগো কে দিয়ে বলে তুমি এখন একাই চলে যাও মিশরের পিরামিডের কাছে। সেখানে গেলেই তোমার গুপ্তধন পেয়ে যাবে।
সান্তিয়াগো এবার একাই পথ চলতে চলতে তার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য পিরামিডের কাছে পৌছে যায়। সেখানে তাকে আবার কিছু ডাকাত আক্রমণ করে সব সোনা ছিনিয়ে নেয়।
একজন ডাকাত হাসতে হাসতে বলে স্বপ্নের সংকেতের উপর ভর করে কোন মানুষ এত পথ পারি দিয়ে এখানে আসতে পারে এটা ভাবতেই অবাক লাগে।এর মত এত বোকা আমি জীবনে দেখিনি। এমন স্বপ্ন তো আমিও দেখেছিলাম যে স্পেনের এক চার্চের ডুমুর গাছের নিচে গুপ্তধন আছে। তাই বলে কি আমি ঐ গুপ্তধন খুঁজতে যাবো?
ডাকাতের কথা শুনে এবার সান্তিয়াগো হাসতে থাকে আর মনে মনে ভাবে আমি যে ডুমুর গাছের নিচে শুয়ে ঘুমের মধ্যে এমন স্বপ্ন দেখেছিলাম তার নিচেই সত্যি সত্যি গুপ্তধন আছে আর আমি এতদূর পথ ভ্রমণ করলাম গুপ্তধনের খোঁজে।
এরপর সান্তিয়াগো দেশে ফিরে আসে এবং চার্চের ডুমুর গাছের নিচে মাটি খুড়ে গুপ্তধন উদ্ধার করে। তান্ত্রিক জিপসি বুড়িকে তার ভাগ দেয় এবং বাঁকি সম্পদ নিয়ে ফাতিমার কাছে ফিরে যায়। উপন্যাসটি এখানেই শেষ হয়।
দ্য আলকেমিস্ট বইয়ের উক্তি বা কয়েকটি দর্শন
- ভোগান্তির ভয় ভোগান্তির চেয়ে কষ্টকর।
- সূর্য উদিত হওয়ার আগের প্রহর সবচেয়ে বেশী অন্ধকার।
- যখন কেউ অন্যের লক্ষ্যে হস্তক্ষেপ করে তারা কখনো নিজেরটুকু পূরণ করতে পারে না।
- সাধারনত মৃত্যূর হুমকি মানুষের মননে বেঁচে থাকার আশা বাঁচিয়ে রাখে।
- কাল মরে যাওয়া আর যেকোন একদিন মরে যাওয়া একি কথা।
- শিখার একটাই পথ কাজ করা।
- লোকে চলে যাবার কথা বেশী ভাবে না ফিরে আশার কথা বেশী ভাবে।
- মরুভূমি কে ভালবাসা যায় বিশ্বাস করা যায় না।
- তুমি যা হাতে পাও নাই তা নিয়েই যদি ওয়াদা দিতে থাক তবে সেটা পাবার আশাই চলে যাবে।
- ভবিষ্যৎ জানতে চাই কারণ আমি একজন মানুষ।
ট্যাগ- আলকেমিস্ট বই, আলকেমিস্ট বই, আলকেমিস্ট বই, আলকেমিস্ট উপন্যাস,
Please Click on Just one Add to help us
মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।
এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা। আপনি লিখতে পারেন এই ব্লগে। এগিয়ে নিন বাংলায় ভালো কিছু শেখার প্রচেষ্টা।