শয়তানের শ্বাস মাদক কী? সবচেয়ে ভয়ংকর মাদক স্কোপোলামিন!

সূচিপত্র
  1. শয়তানের শ্বাস মাদক কী? সবচেয়ে ভয়ংকর মাদক স্কোপোলামিন!

শয়তানের শ্বাস মাদক কী? সবচেয়ে ভয়ংকর মাদক স্কোপোলামিন!

ধরুন আপনি রাস্তায় হাটতে বের হয়েছেন হঠাৎ কোন অচেনা লোক এসে আপনার কুশল জিজ্ঞাসা করে আপনার সাথে হ্যান্ডশেক করলো এবং বিদায় নেবার সময় আবার হ্যান্ডশেক করলো। একটু পর আপনি লোকটির কথামত সব কাজ করতে শুরু করলেন। অচেনা লোকটির দাস হিসেবে তার সমস্ত নির্দেশ পালন করে নিজের সব দিয়ে দিলেন।

স্বাভাবিক অবস্থায় আসার পর আপনার পূর্বের ঘটনা কিছুই মনে নেই। আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই এমন ঘটনা ঘটতেই পারে যে কারো সাথে। আসলে আপনি এই অবস্থায় পরেছিলেন একটি ভয়ানক ড্রাগের কারণে সেই ভয়ানক ড্রাগটির নাম “স্কোপোলামিন” বা শয়তানের শ্বাস মাদক।আসুন আজ এই শয়তানি ড্রাগ সম্পর্কে একটু বিশদ বিবরণ জেনে নেই।
আপনি আরো পড়তে পারেন…. এলএসডি কি? ভয়ঙ্কর মারণ নেশা এলএসডি!কোন মাদক দেহে কতদিন থাকে?ডিএমটি কী? ডিএমটি মাদক সব নেশার বাপ!

Info Box

শয়তানের শ্বাস মাদক এর পরিচিতি

শয়তানের শ্বাস মাদক কী? সবচেয়ে ভয়ংকর মাদক স্কোপোলামিন!

শয়তানের শ্বাস মাদক একটি হেলুসিনেটিক ড্রাগ। রাসায়নিকভাবে এটি স্কোপোলামিন নামে পরিচিত।
স্কোপোলামিন একটি প্রাকৃতিক বা কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত ট্রোপেন অ্যালকালয়েড এবং অ্যান্টিকোলিনার্জিক ড্রাগ। এটি হায়োসিন, ডেভিলস ব্রেথ,শয়তানের নিঃশ্বাস,বুরুন্ডাঙ্গা (burundanga),“রোবট ড্রাগ” “জম্বি ড্রাগ” বা “কলম্বিয়ান ডেভিলের শ্বাস” নামেও পরিচিত।এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় রয়েছে।
রোগিকে অপারেশনের আগে অজ্ঞান করতে এটা ব্যবহার করা হয়। এটি মস্তিষ্কের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। দুর্বৃত্তরা লোকজনকে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুটে নিতে এটি ব্যবহার করে। বর্তমানে এটি শয়তানের শ্বাস মাদক হিসেবে বা হেলুসিনেটিক ড্রাগ হিসেবে খুব ব্যবহৃত হচ্ছে।ড্রাগটি দেখতে হুবহু কোকেন পাউডারের মতই সাদা তবে এর ক্ষতির মাত্রা কোকেন থেকে বহুগুনে বেশি।

নামকরণ

“scopolamine” নামটি এক ধরণের নিদ্রা উদ্রেককর লতা Scopolia হতে উদ্ভব হয়েছে।হায়োসিন নামটি Hyoscyamus niger নামক উদ্ভিদ থেকে নেয়া হয়েছে। এটির আরো একটি পরিচিত নাম বুরুন্ডাঙ্গা ক্যারিবীয় এবং কলম্বিয়ান “মোরোডাঙ্গা” শব্দ থেকে এসেছে। “মোরন্ডো” অর্থ “টাক বা খালি”। ল্যাটিন “মুন্ডাস” অর্থ “পরিষ্কার”। বুরুন্ডাঙ্গা অর্থ ” এমন কিছু যা পরিষ্কার বা ফাঁকা করে ছেড়ে দেয়”।

স্কোপোলামিন এর উৎস:

শয়তানের শ্বাস মাদক এর উৎস

শয়তানের শ্বাস মাদক এর উৎস

শয়তানের শ্বাস মাদক বা স্কোপোলামিন Solanaceae (nightshade) পরিবারের সদস্য উদ্ভিদের বীজের পাউডার থেকে প্রাকৃতিকভাবে সংগ্রহ করা হয়।

যেসব গাছ থেকে স্কোপোলামিন সংগ্রহ করা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য উদ্ভিদগুলো হলো- henbane শয়তান বৃক্ষ (Hyoscyamus niger), jimson weed বা ধুতরা (Datura), angel’s trumpets (Brugmansia), deadly nightshade (Belladonna), mandrake (Mandragora officinarum), and corkwood (Duboisia).

ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর ও ভেনিজুয়েলা,কলম্বিয়ার মানুষেরা henbane বা শয়তান বৃক্ষ গাছের বীজ থেকে স্কোপোলামিন সংশ্লেষ করে। এই গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Hyoscyamus niger। এই গাছ দেখতে কিছুটা ধুতরা গাছের মত।ফুল দেখতে অবিকল ধুতরা ফুলের মত। ফুল ফলে পরিণত হয়। ফল দেখতে লম্বাটে -গোলাকার। এর বাইরের ত্বক কাটাযুক্ত। আবরণের ভেতর ১০-৩০ টি বীজ থাকে। বীজগুলো কালো বর্ণের।একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে বিষ দিয়ে আক্রান্ত করতে জন্য কেবল একটি বীজই যথেষ্ট।

আমেরিকাতে “বোরাচেরো”, “মাতাল বেগুন গাছ” নামে পরিচিত গাছের বীজ থেকে শয়তানের শ্বাস মাদক সংগ্রহ করা হয়।এর ফলের নাম “কাকো সাবানিরো”।অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের আদিবাসিরা corkwood গাছের পাতা থেকে শয়তানের শ্বাস মাদক সংগ্রহ করে।

বাংলাদেশে অজ্ঞান পার্টি কালো ধুতরার বীজ থেকে এটি সংগ্রহ করে।ধুতরা ও শয়তান বৃক্ষ গাছ একই পরিবারের সদস্য।বর্তমানে ঔষধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো ল্যবরেটরিতে কৃত্রিমভাবে সংশ্লেষণ করেন।কখনও কখনও, এর প্রভাব বাড়ানোর জন্য বেনজোডিয়াজেপাইন যুক্ত করা হয়।

স্কোপোলামিন মাদক দেখতে কেমন?

স্কোপোলামিন মাদক দেখতে কেমন?

স্কোপোলামাইন একটি সূক্ষ্ম, সাদা, স্ফটিক পাউডার। এটি গন্ধহীন এবং এর তিক্ত স্বাদ রয়েছে।

শয়তানের শ্বাস মাদক রাসায়নিক গঠন

শয়তানের শ্বাস মাদক রাসায়নিক গঠন:
রাসায়নিকভাবে(–)-(S)-3-Hydroxy-2-phenylpropionic acid (1R,2R,4S,5S,7α,9S)-9-methyl-3-oxa-9-azatricyclo[3.3.1.02,4]non-7-yl ester.
FormulaC17H21NO4
Molar mass303.358 g·mol−1

শয়তানের শ্বাস মাদক ব্যবহার পদ্ধতি

  • স্কোপোলামিন পাউডার হিসেবে শ্বাসের সাথে গ্রহণ করলে দ্রুত কাজ করে।
  • ধোঁয়ার মাধ্যমে এটি গ্রহণ করা যায়।
  • মুখ বা নাকের ত্বকে এটি দ্রুত শোষিত হয়।
  • হাত সহ দেহের কোন অঙ্গের ত্বকে এটির প্রলেপ লাগিয়ে দিলে ধিরে ধিরে এটি রক্তে মিশে যায়।
  • ট্যাবলেট হিসেবে গিলে খাওয়া যায়।
  • ইনজেকশনের মাধ্যমে ত্বকের নিচে বা সরাসরি রক্তে পুশ করা যায়।ইনজেকশন দ্বারা ব্যবহার করা হলে, প্রভাব প্রায় 20 মিনিট পরে শুরু হয় এবং 8 ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

শয়তানের শ্বাস মাদক কতটুকু গ্রহণ করলে নেশা হয়

সাধারণ ডোজ: প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ০.৩ মিলিগ্রাম সাধারণ ডোজ। ৬০ কেজি ওজনের মানুষের জন্য ১৮ মিলিগ্রাম সাধারণ ডোজ।

ওভারডোজ

ওভারডোজ স্কোপোলামাইন শোষণের পরিমাণ এবং ব্যক্তির স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। এটির বিশুদ্ধতা ও অন্য পদার্থের সাথে মিশ্রিত করার উপরও এটির ওভারডোজ নির্ভর করে।সাধারণভাবে, ওভারডোজ শিশুদের জন্য 10 মিলিগ্রাম এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য 100 মিলিগ্রামের একটু বেশি হিসাবে অনুমান করা হয়।

স্কোপোলামিন কিভাবে কাজ করে?

শয়তানের শ্বাস মাদক কিভাবে কাজ করে?

এটি মস্তিষ্ক ও দেহের উপর আলাদাভাবে প্রভাব বিস্তার করে।

মস্তিষ্কের উপর শয়তানের শ্বাস মাদক এর প্রভাব:

কোন অনুভূতি যেমন- শব্দ,তাপ,চাপ,ব্যথা নিউরনের মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। নিউরন গুলো একটার সাথে একটি যুক্ত হয় সিন্যাপস নামক সংযোগ স্থলের মাধ্যমে। সিন্যাপস এ নিউরোট্রান্সমিটার নামক তরল থাকে। এটি স্নায়ু উদ্দিপনা পরিবহনে প্রধান ভূমিকা রাখে। স্কোপোলামিন ,শয়তানের শ্বাস মাদক দেহে প্রবেশের পর রক্তে মিশে যায় এবং নিউরোট্রান্সমিটারে প্রবেশ করে। এটি নিউরোট্রান্সমিটারকে ব্লক করে দেয় ফলে স্নায়ু উদ্দিপনা ও অনুভূতি পরিবহনের হার হ্রাস পায়।

মস্তিষ্কের উপর স্কোপোলামিন এর প্রভাব

মস্তিষ্কে প্রবেশের পর স্কোপোলামিন,শয়তানের শ্বাস মাদক মস্তিষ্কের সিদ্ধান্ত গ্রহনকারী অংশকে দ্রুত আক্রমণ করে এতে ব্যক্তি নিজে কোন চিন্তা করতে পারে না। ব্যক্তির ইচ্ছাকে বাধা দেয়, স্মৃতি এবং আচরণকে প্রভাবিত করে,পূর্বের স্মৃতি ভুলে যায়। তীব্র হেলুসিনেশন শুরু হয়। অন্যের দেয়া আদেশকে যান্ত্রিকভাবে অনুসরণ করতে বাধ্য করে। মানে আপনি নিজে কিছু করতে পারবেন না শুধু সামনের লোক যা বলবে তাই করবেন রোবটের মত। ভাবা যায় কি ভয়ংকর অবস্থা! ঔষধের প্রভাবে জলজ্যান্ত মানুষ রোবটের মত আচরণ করে। নেশা কেটে যাওয়ার পর ব্যক্তির কোন কিছুই আর মনে পরে না।

দেহের উপর শয়তানের শ্বাস এর প্রভাব:

স্কোপোলামাইন,শয়তানের শ্বাস মাদক দেহের অনেক কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে।

  • দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে, চোখের মনি বড় হয়ে যায়।একধরণের ঘুমঘুম ভাব তৈরি হয় প্রচণ্ড ঘুম পায় এবং দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে কিন্তু চোখের মনি বড় হয়ে যাওয়া ও চোখের পেশির দুর্বরতার কারণে চোখ বন্ধ করতে পারে না তাই এই অবস্থাকে “twilight sleep” বলা হয়।
  • মুখের লালা কমে যায় ফলে মুখ শুষ্ক হয়ে যায়। ইচ্ছা করলেও থুতু ফেলতে পারে না।
  • উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হয়।
  • হৃদস্পন্দন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি বা কমে যেতে পারে।
  • প্রসাব দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখতে পারে।
  • স্কোপোলামাইন এর ওভারডোজের প্রভাব।
  • প্রধান প্রভাবগুলির মধ্যে রয়েছে:
  • ডিমেনশিয়া
  • সাইকোসিস
  • স্মৃতির পরিবর্তন
  • দুর্ঘটনা পরবর্তী মানসিক বৈকল্য
  • অভারডোজের কারণে সেবনকারী কোমায় যেতে পারে,এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

শয়তানের শ্বাস মাদক চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যবহার:

  • অপারেশন করার আগে রোগিকে অজ্ঞান করতে এটি ব্যবহার করা হতো। এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে এর সাথে মরফিন মেশানো হতো।
  • সমুদ্রে জাহাজে ভ্রমণ করার সময় জাহাজের দুলুনিতে মাথা ঘুরে এবং বমিভাব হয় এই অবস্থাকে সি-সিকনেস বলে। সি-সিকনেস দূর করার জন্য স্কোপোলামিন ব্যবহার করা হয়।
  • অপারেশনের পর বমিভাব কমাতে এটি ব্যবহৃতহয়।
  • পেটের পেশিগুলোর খিঁচুনি কমাতে এটি ব্যবহৃত হয়।
  • মুখের অপারেশনের সময় মুখের ভেতর যাতে লালা ক্ষরণ না হয় সেজন্য এটি ব্যবহৃত হয়।
  • পারকিনসন রোগে হাত পা কাঁপে এটি কমানোর জন্য স্কোপোলামিন ব্যবহৃত হয়।
  • প্রসবেকালীন অ্যামনেসিয়া এবং সিনারজিস্টিক ব্যথা কমানোর জন্য এই ড্রাগটি বছরের পর বছর ব্যবহার করা হতো।

মাদক হিসেবে শয়তানের শ্বাস মাদক ব্যবহার

ভয়ঙ্কর মাদক স্কোপোলামিন বা ডেভিল ব্রেথ,চূড়ান্ত মাত্রার হেলুসিনেটিক মাদক হিসেবে স্কোপোলামিন ব্যবহার করা হয়। এটি গ্রহণ করার পর মাদকসেবী নিজের চিন্তা শক্তি হারিয়ে ফেলে ফলে নিজের মত অপার্থিব কল্পনার জগৎ সৃষ্টি করে আনন্দ পায়। লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে বিশেষ করে কলম্বিয়া,ভেনেজুয়েলা,আর্জেন্টিনা,পেরু,চিলি ইত্যাদি দেশে এটি মাদক হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে অভিজাত শ্রেণির সন্তানরা এটি ব্যবহার করে। কোন আনন্দ উৎসবে এটি ব্যবহার করা হয় ধোঁয়া বা পানিয়ের মাধ্যমে।

ট্রুথ সিরাম হিসেবে স্কোপোলামিন বা শয়তানের শ্বাস মাদক ব্যবহার

১৯২২ সালে যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ) সন্দেহভাজন অপরাধি বা গুপ্তচরদের কাছ থেকে কনফিডেনসিয়াল তথ্য সংগ্রহ করার জন্য ইন্টেরোগেশন সেলে বন্দির উপর স্কোপোলামিন প্রয়োগ করেছিলো।

রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি গুপ্তচরদের থেকে তথ্য উদ্ধারে এটি ব্যবহার করতো।
সিআইএ এবং সোভিয়েত উভয়ইই শীত যুদ্ধের সময় জিজ্ঞাসাবাদে স্কোপোলামাইন ব্যবহার করেছেন বলে ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয়, এবং এই ধরনের কার্যকলাপের প্রমাণ প্রাক্তন চেকোস্লোভাকিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে।

২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের নাৎসি বাহিনি বন্দিদের উপর এটি প্রয়োগ করতো।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ ট্রুথ সিরাম হিসেবে এটি ব্যবহার করতো বলে প্রমাণ আছে।
বর্তমানে এটির ব্যবহার অনেক দেশে নিষিদ্ধ।
২০০৮ সালে চেক প্রজাতন্ত্রের সরকার স্কোপোলামাইন ব্যবহার করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা মঞ্জুর করেছে।

অপরাধ জগৎে স্কোপোলামিন বা শয়তানের শ্বাস মাদক এর ব্যবহার

ভণ্ড কবিরাজ জীন তাড়ানোর নাম করে সুস্থ মানুষের উপর স্কোপোলামিন প্রয়োগ করে। এটি প্রয়োগ করার পর মানুষ নিজের চিন্তা শক্তি হারিয়ে ফেলে ফলে সে নির্দেশ দাতার কথা নির্দিধায় মেনে চলে। যেমন- কবিরাজ নির্দেশ দিলো নিজের থুতু নিজে চেটে খা তখন ব্যক্তিটি নির্দেশমত কাজ করবে। এটা দেখে দর্শক ভাবতে থাকে সত্যি লোকটির উপর জীনের আছর হয়েছে।

লম্পট ব্যক্তি কোন মেয়ের সাথে সেক্স করতে চাইলে মেয়েটিকে কৌশলে স্কোপোলামিন প্রয়োগ করে খাদ্য,ধোঁয়া বা ত্বকের মাধ্যমে। এরপর মেয়েটির আর নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তাকে যে নির্দেশনা দেয়া হয় সেই মত কাজ করে। নিজেই লোকটির সাথে রগরগে যৌনতায় মেতে উঠে।

শয়তানের শ্বাস মাদকের মাধ্যমে যৌন হয়রানি
শয়তানের শ্বাস মাদকের মাধ্যমে যৌন হয়রানি

অপরাধীরা বাচ্চাদের যৌন মিলনে বাধ্য করতে এই পদার্থটি ব্যবহার করে, পর্নোগ্রাফিক ভিডিও রেকর্ড করতে বা তাদের নগ্ন ছবি তোলার জন্যেও এটি ব্যবহার করা হয়।সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হ’ল এটি স্কোপোলামাইন জড়িত যৌন নির্যাতনের ঘটনা বাড়ছে।

যৌনকর্মীরা নিজেদের কাছে আসা খদ্দের কে স্কোপোলামাইন ব্যবহার করে সব হাতিয়ে নেয়।

সাবধান! অচেনা ব্যক্তির সাথে হ্যান্ডশেক করবেন না!

ছিনতাইকারী খুব ভালো মানুষ সেজে আপনার সাথে হ্যান্ডশেক করবে। আপনি জানতেও পারবেন না যে কি ভুল করলেন। ছিনতাইকারীর হাতে থাকে স্কোপোলামিন এটি হ্যান্ডশেক করার সময় আপনার হাতে লেগে যাবে তারপর ধিরে ধিরে রক্তে মিশে যাবে। এরপর খেল শুরু আপনি তার হুকুমের গোলাম হয়ে যাবেন। তার কথামত আপনি নিজের বাড়িতে গিয়ে সমস্ত টাকা পয়সা তার হাতে দিয়ে দিবেন। নির্দিষ্ট সময় পর যখন আপনার হুঁশ ফিরবে তখন আর কিছু করার নেই। ছিনতাইকারীর চেহারা আপনার মনে থাকবে না। সেই সময় কি ঘটেছিল তাও আপনার মনে থাকবে ফলস্বরূপ আপনি পুলিশের কাছেও মামলা করতে পারবেন না।

সাবধান! কারো ঠিকানা বা প্রেসক্রিপশন দেখে দিবেন না!

সাবধান! কারো ঠিকানা বা প্রেসক্রিপশন দেখে দিবেন না

হাসপাতাল বা ঔষধের দোকানের সামনে খুব অসহায় লোকের ভান করে কোন মানুষ আপনার কাছে এসে বলবে স্যার আমি মূর্খ মানুষ পড়তে পারিনা একটু দেখুন তো ডাক্তার আমাকে কি ঔষধ লেখে দিলো? আপনি যখন প্রেসক্রিপশন টা হাতে নিবেন তখন দেখবেন এর লেখাগুলো খুবই ছোট। ভালোকরে পড়ার জন্য প্রেসক্রিপশন টা চোখের আরো কাছে নেবেন তখন এতে লাগানো স্কোপোলামিন শ্বাসের মাধ্যমে আপনার ফুসফুসে পৌছে যাবে।এই ড্রাগটি ৬ থেকে ১২ ইঞ্চি দূরত্ব থেকে শ্বাসের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে।তারপরের ঘটনা পূর্বের মত…
ঠিক একইভাবে কোট প্যান্ট পরা বয়ষ্ক ভদ্রলোক আপনাকে বলবে চশমা নেই তো তাই ঠিকমত দেখতে পাচ্ছি না দেখতো বাবা প্রেসক্রিপশন টাতে ডাক্তার কি ঔষধ দিলো।

বাড়ির ঠিকানা লেখা কোন চিরকুট দিয়ে আপনাকে বলতে পারে একইরকম কথা।অনেকসময় এটিএম বুথের কিপ্যাডে এই পদার্থ লাগানো থাকে।গাড়িতে উঠে পাশের ছিটে বসা অনেক ভদ্রলোক আপনাকে ইন্টারেস্টিং কোন গল্প পরে শোনাবে। অতি আগ্রহের বশে তার মার্ক করা পৃষ্ঠা দেখতে শুরু করলেন তো আপনার কম্ম কাবাব।

জঙ্গিবাদে স্কোপোলামিন বা শয়তানের শ্বাস মাদক ব্যবহার

জঙ্গিগোষ্টি কোন ভিকটিম কে টারগেট করার পর তার সাথে সখ্যতা গরে তুলে। ঘনিষ্ঠা বৃদ্ধি পেলে একসময় কৌশলে তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবগত করে। এরপর কোন একদিন বিশেষ কৌশলে তাকে স্কোপোলামিন প্রয়োগ করে। এটি প্রয়োগ করার পর ভিকটিম নিজের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তখন জঙ্গিগোষ্টি তার ব্রেইন ওয়াশ করে।

স্কোপোলামিন থেকে বাঁচার উপায়

ডেভিল ব্রেথ থেকে বাঁচার উপায়

শয়তানের শ্বাস থেকে বাঁচার উপায়

  • অচেনা বা সন্দেহজনক ব্যক্তির কাছ থেকে কোন জিনিষ খাবেন না। কোন পানিয় পান করবেন না।
  • ভ্রমণের সময় অচেনা বা সন্দেহজনক ব্যক্তির ব্যবহার করা কোন বস্তু নিজে হাত দিয়ে ধরবেন না।
  • অচেনা ব্যক্তির সাথে হ্যান্ডশেক করা থেকে বিরত থাকুন। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে স্পর্শ করুন। অচেনা ব্যক্তি গ্লাভস পরা থাকলে কোন মতেই হ্যান্ডশেক করবেন না।
  • অচেনা কেউ ঠিকানা বা প্রেশক্রিপশন দেখে দিতে বললে ঐ ব্যক্তিকে ৩ বার প্রেশক্রিপশন টি জোড়ে শুকতে বলুন তারপর ৫ মিনিট বিরতি দিয়ে ঠিকানা বা প্রেশক্রিপশন পড়ে দিন।
  • অচেনা ফুল বিক্রেতার ফুলের গন্ধ শুকবেন না।
  • অচেনা জায়গায় ঘুরতে গেলে কোন রুমে থাকা অবস্থায় মশা নিধনকারী স্প্রে বা ফ্রেশনার স্প্রে ব্যবহার করবেন না।প্রয়োজনে মশারি ব্যবহার করুন।
  • অপরিচিত দোকান থেকে সিগারেট কিনবেন না।
  • আপনার অর্থ সম্পদ বেশি থাকলে এটিএম বুথে টাকা তোলার পর দ্রুত হাত পরিষ্কার করুন।

স্কোপোলামিন বা শয়তানের শ্বাস মাদক আবিষ্কারের ইতিহাস:

প্রাচীন গ্রীকরা henbane বা “শয়তান বৃক্ষ”(স্কোপোলামিন এর প্রাকৃতিক উৎস) গাছের বীজের পাউডার মাদক হিসেবে আনন্দানুষ্ঠানে বা কোন উৎসবে ব্যবহার করত।প্রাচিন গ্রিসে চিকিৎসাক্ষেত্রে এর ব্যবহের ইতিহাস আছে। প্রাচীন ইউরোপ এবং উত্তর এশিয়ার দেশে বিয়ারের সাথে হেনবেন গাছের বীজের পাউডার মেশানো হতো এতে মাদকের প্রভাব আরো বেড়ে যেত এবং মাদক গ্রহণকারী অপার্থিব স্বপ্ন রাজ্যে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা লাভ করতো। হেনবেন গাছের বীজ মিশ্রিত এই বিয়ার কে “ম্যাজিক বিয়ার” বলা হতো। আনন্দ উৎসবে ম্যাজিক বিয়ার ছিলো প্রধান আকর্ষণ।

প্রাচীন ও মধ্যযুগে স্পেন দেশের মহিলা যাদুকর বা ডাইনিরা হেনবেন গাছের বীজ চূর্ণ তাদের কাস্টমারদের বশ করতে ব্যবহার করত।প্রাচীন উপজাতিরা দেবতার উদ্দেশ্যে মানুষ বলি দিত তখন বলি দেয়ার মানুষটিকে এই হেনবেন গাছের বীজ খাওয়াতো। এতে মানুষটি নেশার ঘোরে পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে বা তারসাথে কি ঘটতে চলছে সে সম্পর্কে কিছুই জানতো না।

১৮৮০ সালে জার্মান সাইনটিস্ট Albert Ladenburg সর্ব প্রথম বিশুদ্ধ স্কোপোলামিন সংশ্লেষণ করেন। তিনি এটিকে উদ্ভিদদেহ থেকে অ্যালকালয়েড হিসেবে সংশ্লেষণ করেন। তার গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করে পরবর্তিতে মরফিন সংশ্লেষণ করা হয়।

আলবার্ট লেডেনবার্গ শয়তানের শ্বাস আবিষ্কারক
আলবার্ট লেডেনবার্গ শয়তানের শ্বাস আবিষ্কারক

১৮৯৯ সালে Dr.Schneiderlin স্কোপোলামিন ও মরফিন কে অবচেতন করার কাজে ব্যবহারের নির্দেশনা দেন।

1902 সালে Richard von Steinbuchel অপারেশনের আগে রোগিকে অজ্ঞান করার জন্য এটি প্রথম ব্যবহার করেন। জার্মানির ফ্রেইবার্গ শহরের ডাক্তার Carl Gauss স্কোপোলামিন ও মরফিনের একটি যৌথ কম্বিনেশন অজ্ঞান করার কাজে সফলভাবে প্রয়োগ করেন। তার এই প্রক্রিয়া Dämmerschlaf (“twilight sleep”) বা the “Freiburg method” নামে পরিচিতি পায়।

১৯০০ সালের পর থেকে এটি সন্তান জন্মদানের সময় প্রসব বেদনা কমানোর জন্য ব্যবহার হতে থাকে। এটি ব্যবহারের পর একধরণের ঘুমঘুম ভাব তৈরি হয় এবং দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে তাই এই অবস্থাকে “twilight sleep” বলা হয়।
মধ্যযুগে স্কোপোলামাইন ব্যবহারের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়। তখনকার মানুষ এটিকে তথ্য বা অপরাধের স্বীকারোক্তি বের করার জন্য ব্যবহার করতো।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-কলম্বিয়ার সময়েও এটি ব্যবহার হতো বলে জানাযায়। এটি ভুডু জাতির বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হতো।1970 দশকে কলম্বিয়াতে অপরাধমূলক কিছু মামলা কোর্টে বিচারের জন্য উপস্থাপিত হলে স্কোপোলামাইন এর নাম জানা যায় অপরাধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য। অপরাধিরা এটিকে খুন, অপহরণ,চুরি,ডাকাতি,ধর্ষণ ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করে।

স্কোপোলামিন বা শয়তানের শ্বাস এর দাম কত?

একবার ব্যবহার করা যায় এমন এক ডোজের দাম ১১ ইউরো মানে বাংলাদেশী টাকায় ১১০০ টাকা প্রায়।

স্কোপোলামিন বা শয়তানের শ্বাস কোথায় পাওয়া যায়?

রোগির ঔষধ হিসেবে এটি ফার্মেসিতে পাওয়া যায়। নেশা করার জন্য বা অপরাধ কাজে ব্যবহারের জন্য মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পাওয়া যায়। লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে এটি বাংলাদেশে আসে।

স্কোপোলামিন বা শয়তানের শ্বাস মাদক এর নেশা কতক্ষণ স্থায়ী হয়?

এটি রক্তে প্রবেশের পর হতে ৪-৮ ঘন্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে। এরপর প্রভাব শেষ হয়ে যায়।

শয়তানের শ্বাস মাদক এর নেশা দূর করার উপায় কী?

হরিতকির রস বা আঙ্গুরের রস পান করলে নেশা ধিরে ধিরে কমে। খুব খারাপ অবস্থায় রোগিকে হাসপাতালে Physostigmine এর সাহায্যে চিকিৎসা করা হয়।

শয়তানের শ্বাস মাদক বাড়িতে কিভাবে বানাবেন?

শয়তানের শ্বাস মাদক বাড়িতে বানাতে চাইলে নিচের ধাপগুলো ফলো করুন….

ধাপঃ১: হেনবেন বা বোরাচিরো গাছের বীজ পরিপক্ব ও শুকনো অবস্থায় সংগ্রহ করুন। এরপর এটিকে শীল দিয়ে পাটায় পিষে বা গ্রাইন্ডারে দিয়ে পাউডার বানান।

ধাপ-১-পাউডার তৈরি

ধাপঃ২: পাউডার কে কফি ফিল্টার এর মত ছাঁকনি দিয়ে ভালোকরে ছাঁকুন।

ধাপঃ৩: একটি পাত্রে পাউডার নিয়ে তাতে এসিটোন(acetone) মেশান। লক্ষ্য রাখবেন যাতে পাউডার একদম এসিটোনে ডুবে থাকে। এভাবে ২৪ ঘন্টা রাখুন।২৪ ঘন্টা পর পাতলা সুতি কাপরের ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিন। এরপর কাপরে বাঁধা জমাট পাউডার কে আবার এসিটোনে ডুবে রাখুন ২৪ ঘন্টা। আরো একবার এরকম ২৪ ঘন্টা ডুবে রাখুন। এবার কাপরের পদার্থ ভালোকরে চিপুন এবং ফেলে দিন। পাত্রে যে তরল পরে থাকবে সেটা সংগ্রহ করুন।

ধাপ-৩-এসিটোনে ডুবানো
ধাপ-৩-এসিটোনে ডুবানো

ধাপঃ৪: এবার তরলটিকে একটি করাইয়ে দিয়ে জ্বাল দিন। এক সময় সব তরল উড়ে গিয়ে শুধু দলা পরে থাকবে। এর মধ্যে স্কোপোলামিন আছে। এটাকে গুড়া করে সংরক্ষণ করুন।

ধাপঃ৪-সংরক্ষণ
ধাপঃ৪-সংরক্ষণ

Info Source : wikipedia …. How to make devil breath in home?

Devil’s breath drug in Bangla

Devil’s Breath: Most Dangerous Drug In The World details in bangla, scopolamine details in Bangla, scopolamine ki? soytaner shash ki? soytaner shash madok Ki? barite devil breath madok kivabe banabo? soytaner shash madok kothay paoa jay?

আপনি আরও পড়তে পারেন …… স্বপ্নে মৃত মানুষ দেখা ব্যাখ্যা কী? …… স্বপ্নে তরবারি দেখলে কী হয়? … স্বপ্নে যুদ্ধের অস্ত্র দেখার ব্যাখ্যা … স্বপ্নে ঘোড়া, গাধা, খচ্চর এবং এদের রং দেখার অর্থ! … স্বপ্নে সাপ দেখলে কি হয়?স্বপ্নে বিচ্ছু, পোকা-মাকড়, কীট-পতঙ্গ দেখার অর্থ! … স্বপ্নে বিয়ে-শাদী, নারীর গুপ্তাঙ্গ, গর্ভাবস্থা, জন্ম, দুধপান দেখার ব্যাখ্যা কী? … স্বপ্নে জান্নাত জাহান্নাম ও আগুন দেখলে কি হয়? ……. স্বপ্নে হাঁড়ি-পাতিল,আয়না,চিরুনি,সুঁই,কাঁচি দেখার অর্থ কী? …… স্বপ্নে ফেরেশতা,কাবা,নামায,হজ্জ্ব করতে দেখার ব্যাখ্যা কী? …. স্বপ্নে আকাশ,সূর্য,চাঁদ,তারা,কিয়ামত দেখার অর্থ কী? …. স্বপ্নে বাড়ি ঘড়,দরজা,সিঁড়ি,শাহী মহল ,ভূমিকম্প দেখার ব্যাখ্যা!

Please Click on Just one Add to help us

মহাশয়, জ্ঞান বিতরণের মত মহৎ কাজে অংশ নিন।ওয়েবসাইট টি পরিচালনার খরচ হিসেবে আপনি কিছু অনুদান দিতে পারেন, স্পন্সর করতে পারেন, এড দিতে পারেন, নিজে না পারলে চ্যারিটি ফান্ডের বা দাতাদের জানাতে পারেন। অনুদান পাঠাতে পারেন এই নম্বরে ০১৭২৩১৬৫৪০৪ বিকাশ,নগদ,রকেট।এই ওয়েবসাইট আমার নিজের খরচায় চালাই। এড থেকে ডোমেইন খরচই উঠেনা। আমি একা প্রচুর সময় দেই। শিক্ষক হিসেবে আমার জ্ঞান দানের ইচ্ছা থেকেই এই প্রচেষ্টা।